X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পানে পচন রোগ, দুশ্চিন্তায় হিলির কৃষকরা

হিলি প্রতিনিধি
০৮ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৫১আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০৪

দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা হিলিতে বেশিরভাগ বরজের (পানক্ষেত) পানে ছত্রাকজনিত গোড়া ও পাতা পচা রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পান মরে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ওষুধ প্রয়োগেও কাজ হচ্ছে না। এই অবস্থায় অনেক কৃষক বরজ উঠিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। 

সীমান্তবর্তী ঘাসুরিয়া, ঘনশ্যামপুর ও মাধবপাড়া এলাকা পুরোপুরি এখন পান চাষের ওপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় অনেক বেকার যুবক পান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। বর্তমানে ৪০ হেক্টর এলাকাজুড়ে ৩৫৬টি পানের বরজ গড়ে উঠেছে। আগে ৩৭ হেক্টর জমিতে পানের বরজ ছিল। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হতো এই পান। কিন্তু আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব, বিশেষ করে অনাবৃষ্টির কারণে পানের গোড়া ও পাতা পচা রোগ দেখা দিয়েছে।

পানে পচন রোগ ধরে বরজ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে

ঘাসুড়িয়া গ্রামের কৃষক সুলতান মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবারে পান চাষের একমাত্র সমস্যা গোড়াপচা রোগ। এই রোগে লাইনকে লাইন পানের গাছ মরে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পান পচে ঝরে যাচ্ছে। এতে করে আমরা বড় ধরনের লোকসানে পড়েছি। আমার ১০ কাঠা জমির বরজ থেকে আগে হয়তো ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার পান বিক্রি করতাম। এখন সেখানে পাঁচ হাজার টাকাও পান বিক্রি হচ্ছে না। এতে করে খৈল কেনা ও শ্রমিক খরচসহ অন্যান্য যে খরচের টাকা উঠছে না। এক বস্তা খৈলের দাম ২২০০ টাকা থেকে ২৪০০ টাকা। মৌসুমে আমাদের বরজে খৈল লাগে ১০-১২ বস্তা। কিন্তু বর্তমানে যে পান বিক্রি হচ্ছে তাতে করে ৩-৪ বস্তা খৈলের দাম উঠছে না।’       

কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার বরজ মালিকদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পচন রোগ। এই রোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কোনও ওষুধে কাজ হচ্ছে না। গাছের গোড়ায় ঘায়ের মতো হচ্ছে, আগুনে পুড়ে গেলে যেমন হয় ওইরকম হয়ে ভিজে উঠছে।  এতে সব পানের গাছ উঠিয়ে ফেলে দিতে হচ্ছে।’

পানচাষি মিন্টু মিয়া বলেন, ‘এবার বরজে রোগের প্রকোপ বেশি। গাছ মরে যাচ্ছে। নতুন মাটি দিয়ে কোনও কাজ হচ্ছে না। গাছের গোড়ায় পচন ধরছে। এতে গাছ মরে বরজ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।’

অনাবৃষ্টির কারণে পানের গোড়া ও পাতা পচা রোগ দেখা দিয়েছে

আরেক কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গোড়ায় কালো দাগ ধরে পান গাছ মরে যাচ্ছে। এতে এবার পানচাষিদের মাথায় হাত। বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন দিয়ে বরজ করেছিলাম। কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে লোন পরিশোধ করবো কীভাবে আর অন্য কিছু করবো কীভাবে? বাধ্য হয়ে বরজ ভেঙে দিয়ে অন্য আবাদ করার সিন্ধান্ত নিয়েছি।’

শ্রমিক ইয়াসিন আলী ও রমজান হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে ৩০০ বরজ রয়েছে। যেখানে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। আগে আমাদের ভালো কাজ হতো, কিন্তু এখন কাজ অনেকটা কমে গেছে। বরজে পচারি ধরে গাছ মারা যাচ্ছে। গৃহস্থরা আর শ্রমিক খাটাতে পারছেন না। এ কারণে আমাদের আর তেমন কাজ হচ্ছে না।’

হাকিমপুর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার আরজেনা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু কিছু বরজে পচন দেখা দিয়েছে। পচন প্রতিরোধে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণসহ সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পচন রোধে ট্রাইকো কম্পোস্ট, ভার্মি কম্পোস্ট মেলসার, অটোস্টিন, নাটিভো ওষুধ বেশ কার্যকর। কৃষকরা এসব ওষুধ ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পাচ্ছেন।’

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
গরুবোঝাই ভটভটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ফসলের মাঠে সোনারঙ, তীব্র গরমেও কৃষকের মুখে হাসি
সর্বশেষ খবর
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২
হামলার ঘটনায় মামলা করায় এবার বোমা হামলা, আহত ১৫
হামলার ঘটনায় মামলা করায় এবার বোমা হামলা, আহত ১৫
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!