X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএনও-চেয়ারম্যান বাগবিতণ্ডা, মাসিক সভা পণ্ড

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:২০আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৩৪

ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মধ্যে বাগবিতণ্ডার জেরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মাসিক সভা পণ্ড হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, টিআর, কাবিখা প্রকল্পের ভাগবণ্টন ও বাস্তবায়ন এবং ইউএনও অফিস না করে বাসভবনে বসে বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর করার ঘটনা নিয়ে চেয়ারম্যানরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে ওই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ওই ঘটনা ঘটে।

মাসিক সভায় উপস্থিত উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ছক্কু সভার পরিস্থিতি নিয়ে দাবি করেন, ‘ইউএনও সাহেব মাসিক সভায় সবার উপস্থিতিতে আমাকেসহ আরও দুই চেয়ারম্যানের সঙ্গে চরম খারাপ আচরণ করেন। তিনি আমাকে হজ করা নিয়ে খোঁচা দিয়ে কথা বলেন, গালিগালাজ করেন। এমনকি ইউএনও সাহেব তার চেয়ার থেকে উঠে আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসার চেষ্টা করেন। আমাকে মাসিক সভা থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।’

একই অভিযোগ করেন, রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরন মো.ইলিয়াস ও মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। চেয়ারম্যানদের অভিযোগ, টিআর, কাবিখাসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ইউএনও স্বেচ্ছাচারিতা করেন। তিনি অফিস না করে বাসভবনে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সব ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এলাকার সাধারণ মানুষ ইউএনও’র সঙ্গে দেখা করতে এসে কোনও সেবা না পেয়ে ফেরত যান।

তাদের আরও অভিযোগ, উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর গৃহনির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সব দফতরের সরকারি কর্মকর্তারা নিয়মিত অফিস করেন না। মাসিক সভায় এ বিষয়গুলো চেয়ারম্যানরা তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গেই ইউএনও’র সঙ্গে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

মাসিক সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সরকার। তিনি দাবি করেন, ‘ইউএনও সাহেব চেয়ারম্যানদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। একজন চেয়ারম্যানকে হজ করা নিয়ে খোঁচা দিয়ে কথা বলেছেন। আমরা ইউএনওকে থামানোর অনেক চেষ্টা করেছি, তারপরও তিনি উত্তেজিত হয়েছেন। উত্তেজনার একপর্যায়ে ইউএনও সভা থেকে কাউকে কিছু না বলে বের হয়ে হয়ে যান। পরে আর ফেরত আসেননি। তাই সভা আর হয়নি।’

মাসিক সভার সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, ‘সভায় উচ্চবাচ্য হয়েছে। তবে ইউএনও সাহেব কাজটি ঠিক করেননি। সভা থেকে ইউএনও বের হয়ে যাওয়ার পর সভার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। বিকালে আমরা সবাই বিষয়টি নিয়ে বসেছি। আশা করছি উদ্ভূত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

ঘটনার পর ইউএনও অমিত চক্রবর্তী স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘হজ নিয়ে আমি কথা বলিনি। এটি চেয়ারম্যানদের মনগড়া অভিযোগ। চেয়ারম্যানরা আমার সঙ্গে কোনও সমন্বয় করেন না। তাদের ডেকে ও চিঠি দিয়েও অফিসে হাজির করতে পারি না। ফলে সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এই বিষয়গুলো মাসিক সভায় তুলে ধরলে কোদালকাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।’

এ বিষয়ে ইউএনও অমিত চক্রবর্তীসহ সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মঙ্গলবার বিকালে মিটিংয়ে বসেন বলে জানা গেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই মিটিং চলে। সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে ইউএনও অমিত চক্রবর্তীকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘আমি দলীয় এবং দফতর কর্মকর্তাদের নিয়ে মিটিংয়ে বসেছি। পরে কথা বলবো।’ আর কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তিনি সংযোগ কেটে দেন।

/এফআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫
মাহিন্দ্র উল্টে চালকসহ ২ জন নিহত
মাহিন্দ্র উল্টে চালকসহ ২ জন নিহত
শিক্ষাবিদ প্রণব কুমার বড়ুয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
শিক্ষাবিদ প্রণব কুমার বড়ুয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ