সুনামগঞ্জে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টি শুরু হবে। সেই সঙ্গে নামবে উজানের ঢল। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে দ্রুত ধান কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে। ভারী বর্ষণে আগাম বন্যার শঙ্কায় জেলার ‘দেখার হাওর’ এলাকার কৃষকরা জমির আধাপাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন।
সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের সাদক আলী জানান, দেখার হাওরের ২৮ জাতের ধান পেকে গেছে। তাই আমরা দ্রুত কেটে নিচ্ছি। ২৯ জাতের ধান পাকতে আরও ৫-৬ দিন সময় লাগবে।
আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কৃষক মইনুদ্দিন বলেন, ১৪ আনা ২৮ ধান পেকেছে। ৩-৪ দিনের মধ্যে ২৮ জাতের ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। তার আগেই ভারী বর্ষণ শুরু হলে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
ভবানীপুর গ্রামের ইদ্রিস আলী জানান, বৃষ্টিপাতের খবর শুনে আমরা হাওরে দ্রুত ধান কাটছি। ২৮ জাতের তেমন ক্ষতি হবে না। ২৯ জাতের ধান কাটতে পারলেই আমরা সফল।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বুধবার (২৩ এপ্রিল) পর্যন্ত ৯ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। এ জন্য জেলায় ৪৫০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার পৌনে তিন লাখ হাওর এলাকা এবং ২০ হাজার বাইরের জেলার শ্রমিক ধান কাটার কাজ করছেন। জমির ধান ৮০ ভাগ পেকে গেলে কাটার উপযোগী হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল কুমার সোম বলেন, সুনামগঞ্জে ৫০০ হারভেস্টার ও তিন লাখ শ্রমিক হাওরে ধান কাটছেন। ২৮ জাতের জমির বেশিরভাগ ধান পেকে যাওয়ায় তেমন কোনও ক্ষতি হবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল নামার আভাস দিয়েছে। তাই দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহরুল ইসলাম বলেন, যাদুকাটা নদীর পানি প্রবাহ বেড়েছে। তবে সুরমা নদীর পানি ধীরে নামছে। উজানে ভারী বর্ষণ হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হাওরের পাকা ধান কাটা ও ফসল রক্ষা বাধ ঝুঁকিমুক্ত করতে প্রশাসন দিনরাত কাজ করছে। ইতোমধ্যে হাওরে পর্যাপ্ত হারভেস্টার দেওয়া হয়েছে। জেলায় দুই লাখ ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। গেল এক সপ্তাহে পাঁচ হাজার ১০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে।