সিলেটে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে মাহফুজ আহমদ (৩০) নামের যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত চার জনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (প্রথম) আদালতের বিচারক সুমন ভূঁইয়া তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই কল্লোল গোস্বামী একই আদালতে গ্রেফতারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
রিমান্ডে নেওয়া ব্যক্তিরা হলো কোতোয়ালি থানার সুগন্ধা ১৩ নম্বর বাসার সালেক আহমদের ছেলে শাহরিয়ার আহমদ শান্ত (২৪), শাহপরাণ থানার সিরাজনগর গ্রামের আলমগীর মিয়ার ছেলে রাজা মিয়া (২৫), মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানার আদমপুর নইনারপাড় এলাকার উস্তার মিয়ার ছেলে সিয়াম আহমদ (২০) ও শাহপরাণ থানার খাদিমনগর পীরেরচক এলাকার আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে তারেক আহমদ (২৫)।
আদালত সূত্র জানায়, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, চোরাইকৃত নগদ টাকা উদ্ধার, পলাতক আসামিদের সঠিক নাম-ঠিকানা সংগ্রহের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রাজা মিয়া ছাড়া অপর তিন অপহরণকারী সিলেট সিটি করপোরেশনের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই কল্লোল গোস্বামী বলেন, ‘আদালতে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের কারাগার থেকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপহৃত মাহফুজ আহমদ গত রবিবার সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (প্রথম) আদালতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’
পুলিশ জানায়, ১৩ অক্টোবর বিকাল ৫টার দিকে সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্ট মধুবন সুপার মার্কেটের সামনে থেকে মাহফুজকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ করে সিসিকের কয়েকজন কর্মচারী। তাকে সিএনজি অটোরিকশায় উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে দক্ষিণ সুরমার পারাইরচক সিসিকের ময়লার ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাহফুজ আহমদ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের সহিদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। পরে মাহফুজের মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে তার বন্ধু ও স্বজনদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনাটি সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে জানানো হয়। এরপর অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হন স্বজনরা। শুক্রবার গভীর রাতে অপহরণকারীদের দুই জন মাহফুজকে বন্দরবাজার এলাকায় নিয়ে আসে। টাকা লেনদেন করতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে এবং মাহফুজকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের ঘটনায় শনিবার বিকালে মাহফুজের ভাই পারভেজ আহমদ বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে মামলা করেন।