X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৮ বৈশাখ ১৪৩২

শুল্কমুক্ত কাগজ চান প্রকাশকরা, শিক্ষামন্ত্রী চান ১ জানুয়ারির মধ্যে নতুন বই

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ অক্টোবর ২০২২, ১৬:০৩আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ১৬:০৩

কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দিওয়ার জন্য ডিসেম্বরের মধ্যেই পাঠ্যবই চেয়েছেন প্রকাশকদের কাছে। শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ৪১তম সাধারণ সভায় সমিতির পক্ষে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় এ বিষয়টি উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্ব সংকটের মুখে। তাড়াতাড়ি সুসংবাদও পাবো না। টিকে থাকতে হবে। কদিন আগে কাগজ বিক্রেতাদের সঙ্গে বসেছি। তারা কথা দিয়েছেন ১ জানুয়ারিতে বই দিতে পারবো। এরপরও কথার খেলাপ হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।  সন্তানদের শিক্ষার সঙ্গে আপসের সুযোগ নেই। বই আমার লাগবেই এবং ১ তারিখেই লাগবে।’

প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর মূদ্রণ প্রতিষ্ঠান মালিক ও পেপারমিল মালিককের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তে বলা হয়, দেশীয় পেপার মিল মালিকরা দরপত্রের স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মূল্যে কাগজ সরবরাহ করবেন। দেশীয় পেপার মিল মালিকরা সঙ্গতিপূর্ণ মূল্যে এবং চাহিদা অনুযায়ী কাগজ সরবরাহ না করলে মূদ্রণ শিল্প মালিকদের কাগজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। আগামী বছর ১ জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়ে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পেপার মিল মালিক, মুদ্রণ শিল্প মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে স্পেসিফিকেশন ঠিক করার সময় ব্রাইটনেস বিষয়ে পেপার মিল মালিকদের প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ৪১তম সাধারণ সভায় শনিবার শিক্ষামন্ত্রী মিল মালিকরা স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাগজ না দিলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কায়সার-ই-আলম, শ্যামল পাল, মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান, মাজহারুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন। প্রকাশনা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভাবনা তুলে ধরেন শ্যামল পাল। বার্ষিক সাধারণ সভায় সমিতির পরিচালক ও ৬৪ জেলা ও উপজেলার পুস্তক ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম, বাপুসের উপদেষ্টা ওসমান গণি, পুস্তক বাধাই কমিটির সভাপতি মাহবুবুল আলম মল্লিক তাদের বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘কাগজের সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখনও ৫০ ভাগ কাগজ শুল্কমুক্ত আমদানি না করলে ১ জানুয়ারি বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তিনি।

প্রশাসকদের বিভিন্ন প্রস্তাবনার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এনসিটিবি’র (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পুস্তক প্রকাশনা সংক্রান্ত সেখানে আপনাদের প্রতিনিধিত্বের কথা বলেছেন সেটি অত্যন্ত ভালো প্রস্তাব। আমি তো বললাম আমি আপনাদের সব সুপারিশের সঙ্গে একমত। গণি ভাই বলেছেন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে মন্ত্রীর কথায় খুশি হয়ে ফিরে আসি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। আশা করি সেই মন্ত্রী আমি না।  কিন্তু আমি যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো তখন অখুশি করার কথা তো বলতে চাই না। আপনারা খুশি হন তেমন কথাই বলতে চাই। তবে আমি নিজেকে যতটুকু জানি সেটুকু বলতে পারি আমি সত্যটুকু বলবার চেষ্টা করি। তাতে আপনি যদি অখুশি হন তাতে আমার কিছু করার নেই। আমি সত্যটা আমি বলবো। আর আপনাকে খুশি করবার জন্য অর্থাৎ আপনার শিল্পটা ভালো হলেই তো আপনি খুশি হবেন! সেই ভালোটা করবার জন্য আমার যা সাধ্যে আছে, আমি তার সবটুকু করতে রাজি আছি এবং করবো। কাগজের মূল্য বৃদ্ধি রোধ করার কথা বলেছেন এটা সত্যি, কিন্তু আমার মন্ত্রণালয় সরাসরি জড়িত নয়। যদি সমস্যা হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি বেশি ভুক্তভোগী হবো আমরা, কারণ সবচেয়ে বড় গ্রাহক আমার মন্ত্রণালয়।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবো।  পাঠাগার সারাদেশে চালু করার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছি। অনেক বেশি মনিটর আমাদের করতে হবে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালি কানেক্ট করার চেষ্টা করছি। যাতে আমরা এক জায়গায় বসে যেকোনও প্রতিষ্ঠানকে (প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম) নিয়মিত দেখতে পাই।  ডিজিটাল হলে আমি পাঠাগারও দেখতে পাবো। পাঠাগার নামে কোথাও একটি আলমারি আছে, কোথাও একটা ঘর আছে। এগুলোতে তালা মারা থাকে, ভেতরে ধুলাবালি পড়ে আছে তেমন যেনও না হয়। পাঠাগারের কাজটি ঠিকমতো হওয়া প্রয়োজন। লাইব্রেরিয়ান পদটিকে শিক্ষকের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।  সেটি যখন করা হয়েছে তার পাশাপাশি পাঠাগারেও উন্নয়ন অবশ্যই হাত হাত ধরে হবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার সময় প্রকাশনা শিল্প খারাপ থাকবে তা হতে পারে না।’

 

 

/এসএমএ/এফএস/
সম্পর্কিত
চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী-মেয়রের বাসায় হামলার নিন্দা মহানগর আ.লীগের
চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় হামলা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি নেই: নওফেল
সর্বশেষ খবর
ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে তিন জনকে কুপিয়ে জখম, একজনের মৃত্যু
ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে তিন জনকে কুপিয়ে জখম, একজনের মৃত্যু
মানুষ দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাইলেও সরকার নীরব: রিজভী
মানুষ দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাইলেও সরকার নীরব: রিজভী
৮ নায়িকা নিয়ে মোশাররফ করিমের ‘বোহেমিয়া ঘোড়া’
৮ নায়িকা নিয়ে মোশাররফ করিমের ‘বোহেমিয়া ঘোড়া’
পিএসএলের সব ম্যাচ রাওয়ালপিন্ডিতে করার পরিকল্পনা
পিএসএলের সব ম্যাচ রাওয়ালপিন্ডিতে করার পরিকল্পনা
সর্বাধিক পঠিত
জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ