শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দেশের উচ্চশিক্ষা স্তরের পাঠ্যবই ও গবেষণাগ্রন্থ বাংলা ভাষায় প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) উচ্চশিক্ষা স্তরে ৬টি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশ উপলক্ষে পাণ্ডুলিপি প্রণেতা ও ইউজিসি’র মধ্যে আলাদা সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বাংলা ভাষায় মানসম্মত পাঠ্যবই ও গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, উচ্চশিক্ষা স্তরে পাঠ্যপুস্তক নিজ ভাষায় প্রকাশ করা উচিত। উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষা বাংলায় কোনও বিকল্প নেই। এজন্য, আমাদের বাংলা ভাষায় পাঠ্যবই ও গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশে অধিক মনোযোগ দিতে হবে। জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলো মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষা দিয়ে থাকে। যোগাযোগে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করলেও উচ্চশিক্ষা দেওয়া ও প্রকাশনায় তারা নিজ ভাষা ব্যবহার করে থাকেন। তবে, জ্ঞান অর্জনে মাতৃভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় সমৃদ্ধ তবে হবে।
কমিশনের রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক ড. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। কমিশনের পক্ষে সচিব ড. ফেরদৌস জামান সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মানসম্মত গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশে ইউজিসি আর্থিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। গবেষক ও লেখকদের সৃজনশীল কাজ ও মেধার যথাযথ মূল্যায়নে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ইউজিসি বদ্ধপরিকর। কমিশন আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগ্রন্থ ও পুস্তক প্রকাশে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।’
পাঠ্যবই ও গবেষণা গ্রন্থের লেখকেরা শিক্ষার মানোন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন।
ইউজিসি’র রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শাহীন সিরাজ সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে গ্রন্থের লেখক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশিতব্য গ্রন্থগুলো হলো- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. জিএম মনিরুজ্জামানের ‘ত্রিপুরা জনজাতির রূপকথা, লোককাহিনী ও কিংবদন্তিতে জীবন ও সমাজ’, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ‘বাঙালির উৎসব ও সম্প্রীতি’, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দেবাশীষ বেপারীর ‘সমকালীন বাংলা গানের ধারায় কাজী নজরুল ইসলামের আধুনিক গান’, একই বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিক সরকারের ‘কাজী নজরুল ইসলামের ভাঙা গান’, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এসএম আকবর ইমামের ‘বাস্তুবিদ্যা’ এবং চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হোসেনের ‘দীনবন্ধু মিত্র ও মীর মশাররফ হোসেনের নাটক: উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ’।