প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সকল যোগ্য কর্মকর্তার পদোন্নতি, পদসৃষ্টি, স্কেল আপগ্রেডেশন, আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন, ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভূতদের প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সরকারি কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতর প্রাঙ্গণে সকাল ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলে। কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন কলেজ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দফতরের দুই শতাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা অংশ নেন।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘পদোন্নতির জন্য আমাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। পদসৃজন না হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ১২ হাজার ৪৪৪টি পদসৃজন ৯ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এখন আবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে— আবার আগের পদ্ধতিতে করা হবে। তাহলে এত দিন কেন ঝুলিয়ে রাখা হলো? আমরা ধারণা করছি, আবারও একটা দীর্ঘসূত্রতার ফাঁদ তৈরি করা হচ্ছে।
অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী আরও বলেন, ‘ক্যাডার কম্পোজিশন এখনও অক্ষত আছে। যদি সংস্কার করতে হয় তাহলে সেটা কারা করবে? অবশ্যই যারা শিক্ষা ক্যাডারে আছেন তাদের পরামর্শে হবে। কিন্তু তা করা হচ্ছে না।’
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোয় শিক্ষা সংশ্লিষ্টদেরই দায়িত্ব দিতে হবে দাবি করে অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, 'সারা পৃথিবীতে এমনিটাই আছে। গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষার মান কমে গেছে। শিখন ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এটা হচ্ছে ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে। শিক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম, দায়িত্ব শিক্ষা সংক্রান্ত ব্যক্তিদেরই দিতে হবে। আমাদের ঘর থেকে তো আমাদের সরিয়ে দেওয়া যাবে না। আমাদের ঘরে আমরাই থাকবো।’
শিক্ষক সংকটে শিক্ষার মান ক্রমাগত ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পদ সৃজন না হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগ কেন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে? ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ শিক্ষকরাই গড়ে তুলবে। কিন্তু তাদের প্রাপ্য সম্মান, অধিকার যদি না দেওয়া যায় তাহলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। পদসৃজন করেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দেন। আমরা নতুন কিছু চাই না।’
অবস্থান কর্মসূচিতে জানানো হয়, শিক্ষকেরা তাদের যথাযথ অধিকার ও মর্যাদা না পেয়ে শিক্ষকতা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষা ক্যাডারে জুনিয়র সহকর্মীরা তাদের অধিকার না পেয়ে চরম হতাশায় আছেন। অনেকেই মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন। তারা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছেন।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব শওকত হোসেন মোল্ল্যা বলেন, পদোন্নতি বঞ্চনা শিক্ষকদের কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। পদোন্নতির মতো একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেও শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। পদোন্নতির সকল যোগ্যতা অর্জনের পরও বছরের পর বছর শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন না।
অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. দবিউর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মামুন উল হক, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আ জ ম রুহুল কাদীর, যুগ্ম-মহাসচিব বিপুল চন্দ্র সরকার, প্রচার সচিব অধ্যাপক মোহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর, আইন সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।