X
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বৈঠকিতে বক্তারা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালু করলে লাভ হবে দেশের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:০৩আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:০৩

সব বিশ্ববিদ্যালয়েই পিএইচডি করার সুযোগ থাকা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ সংক্রান্ত একটি আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা বলছ্নে, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্তত ডজনখানেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই যোগ্যতা রাখে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর শিক্ষার্থী আছে, সেখানে পিএইচডি শুরু হলে দেশের জন্য অনেক উৎস তৈরি হবে বলে মনে করেন বক্তারা। এতে লাভ দেশেরই হবে বলেও মনে করেন তারা।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি: সম্ভাবনার নতুন দুয়ার’ শীর্ষক বৈঠকিতে তারা এসব কথা বলেন। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সহযোগিতায় বাংলা ট্রিবিউনের নিয়মিত এই আয়োজনটি সরাসরি সম্প্রচার করছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজ।

এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান প্রভাষ আমিনের সঞ্চালনায় বৈঠকিতে অংশ নেন, ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র  এবং বাংলা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এস এম আব্বাস।

বৈঠকিতে আলোচকরা

আলোচনায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র বলেছেন, বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মানুষের মনে যে সন্দেহগুলো আছে, সেই সন্দেহের ঊর্ধ্বে যেসব প্রতিষ্ঠান— সেসব প্রতিষ্ঠানকে পিএইচডি করানোর সুযোগ দেওয়া উচিত।

অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র  বলেন, ‘পাবলিক এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য করার সুযোগ নেই বলে আমার মনে হয়। সব বিশ্ববিদ্যালয়েই সুযোগ থাকা উচিত। তবে এটাও দেখতে হবে যে, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যারা শীর্ষে আছে, ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী যারা সনদপ্রাপ্ত হয়েছে, অর্থাৎ যারা আইন মেনে চলে, যারা নিজেদের আজকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে, যাদের যোগ্য শিক্ষক আছে, আবার অনেক শিক্ষক আছেন, যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করে বেসরকারিতে এসেছেন, অথবা বিদেশে কোনও নামকরা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ছিলেন, তারা পিএইচডি গবেষণা তত্ত্বাবধায়ন করে এসেছেন— তাদের যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি, সেটা আমাদের ব্যর্থতা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই এটি শুরু করা দরকার।’

 ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সব বিশ্ববিদ্যালয় একই মানের পিএইচডি করানোর যোগ্যতা রাখে না। আমরা ধরে নেই— বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার যোগ্যতা সবার আছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমি মনে করি, অন্তত ১২টি আছে কোনও না কোনও বিষয়ে পিএইচডি করার ক্ষমতা রাখে। কেউ কেউ হয়তো ৫-১০টি বিষয়ে পড়তে পারবে, কেউবা একটা-দুটাতে করতে পারবে।

ড. আতিকুল ইসলাম

গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান। তিনি বলেন, ‘এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গবেষণার ক্ষেত্রে খুব সুনাম ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেটি ধরে রাখতে পারিনি। এ দেশের এখন অনেক ছেলে মেয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। এখন একটা সুযোগ আছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে... বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যাদের যোগ্যতা আছে, তারা পিএইচডি করলে আমাদের গবেষণার সোর্স অনেক বেড়ে যাবে।’

অধ্যাপক ইমরান রহমান

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক ইমরান রহমান বলেন, ‘এক্ষেত্রে যারা সুপারভাইজ করবেন, তাদের পাবলিকেশনের মান এবং সংখ্যা বাড়ার সুযোগ আছে। এটা একদিনে হবে না। কিন্তু আমার মনে হয় শুরু করা খুব জরুরি দরকার। এটা আরও আগে শুরু করলে ভালো হতো।’

তিনি বলেন, ‘যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা স্নাতক–স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেই, সেখানে গবেষণার ডিগ্রি এমনিতেই দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এটার পেছনে একটা গাইডলাইন লাগবে, এজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা যদি গাইডলাইন দেয়, তাদের সঙ্গে বসে আমরা যৌথভাবে তৈরি করলাম। আমি আশা করি, সেই গাইড লাইন সব ইউনিভার্সিটির জন্য প্রযোজ্য হবে, শুধু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির জন্য নয়।’

এস এম আব্বাস

এছাড়া বৈঠেকিতে বাংলা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এস এম আব্বাস বলেন, ‘যেহেতু আলোচনা আগে থেকেই হচ্ছে এবং নীতিমালা তৈরি হচ্ছে, সেহেতু দ্রুত নীতিমালা হলে আমার মনে হয় না কোনও সমস্যা হবে। বরং এটা করা হলে শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লাভবান হবে না, লাভবান হবে বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, ‘নীতিমালা করার পর সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। আমার জানা মতে, ডজনখানেক বিশ্ববিদ্যালয় সেই যোগ্যতা পূরণ করতে পারবে এবং নীতিমালা অনুযায়ী পিএইচডি করাতে পারবে। সব বিষয়ে পিএইচডি নাও হতে পারে, কেউ বাংলায় করালে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো অন্য বিষয়ে করাবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং মঞ্জুরি কমিশনে সুযোগ দিতে আর পেতে সমস্যা নেই। তাহলে সমস্যা কোথায়? আমাদের দ্রুত নীতিমালার দিকে যাওয়া দরকার। মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যৌথভাবে পিএইচডি করাতে পারে। আমি জানি না তারা যৌথভাবে পিএইচডি শুরু করেছে কিনা। যদি শুরু করে থাকে, এটিও একটি ভালো দিক হতে পারে।’ 

/এসও/ইউএস/
সম্পর্কিত
প্রযুক্তির ব্যবহারকারী না হয়ে উদ্ভাবক হওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
জিএসটির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ, আটক ২ সহস্রাধিক
সর্বশেষ খবর
মোটর‍যানের গতিসীমা নির্দেশিকা সড়কে দুর্ঘটনা কমাবে
মোটর‍যানের গতিসীমা নির্দেশিকা সড়কে দুর্ঘটনা কমাবে
কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর প্রধানমন্ত্রীর
কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর প্রধানমন্ত্রীর
রাজধানীর ফিটনেসবিহীন গাড়ি স্ক্র্যাপ করার সিদ্ধান্ত
রাজধানীর ফিটনেসবিহীন গাড়ি স্ক্র্যাপ করার সিদ্ধান্ত
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খান এই ৫ খাবার
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খান এই ৫ খাবার
সর্বাধিক পঠিত
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
নিজের বাসায় পরীক্ষা নিয়েছিলেন কর কর্মকর্তা!
নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি টাকা আত্মসাৎনিজের বাসায় পরীক্ষা নিয়েছিলেন কর কর্মকর্তা!
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
একীভূত হতে পারে কেউ পাস না করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
একীভূত হতে পারে কেউ পাস না করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
যে কারণে রাজশাহীর তিন প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল
যে কারণে রাজশাহীর তিন প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল