নতুন শিক্ষা কারিকুলামকে ‘কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী’ অভিহিত করে ‘সচেতন অভিভাবক সমাজের’ ব্যানারে একটি মানববন্ধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বক্তারা। মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সচেতন অভিভাবক সমাজের আহ্বায়ক মো. আবু মুসলিম বিন হাই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত শিক্ষা কারিকুলামে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের হাতে মূল্যায়নের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। এর ফলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে, বলা হচ্ছে। কিন্তু অতীতের যেকোনও সময়ের তুলনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাতে কোচিং বাণিজ্যকে আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির ক্ষমতা অর্পণ করা হচ্ছে। যেহেতু, এ মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কাগজ-কলমে লিখিত কোনও প্রমাণপত্র থাকছে না, তাই শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সর্বনিম্ন পর্যায়ের মূল্যায়ন করলেও কোনও শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের পক্ষে একে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা কারিকুলামে, পরীক্ষার মোট নম্বরের সিংহভাগ শুধু শিক্ষকের মূল্যায়নের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যৎসামান্য কিছু অংশ বাস্তব পড়া বা লেখার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা বই থেকে দূরে সরে যাবে। তারা বাস্তবতার বিপরীতে শূন্য জ্ঞান এবং শূন্য মেধায় সার্টিফিকেট অর্জন করবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন কারিকুলামের পক্ষে বলা হচ্ছে যে— এ কারিকুলামের ফলে গাইড ব্যবসা বন্ধ হবে। অভিভাবকরা গাইড ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটা হয়েছে। অতীতে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করার পর দেখা গেছে— বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেরাই পদ্ধতিটি বুঝে উঠতে পারেনি। ফলে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলোতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বাজার থেকে গাইড কিনে এনে সেই গাইড থেকে কপি করে, তা দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করতেন। আর এ ক্ষেত্রে তারা প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের বাজার থেকে নির্দিষ্ট কোম্পানির গাইড কিনতে উৎসাহিত করতেন। তাই গাইড ব্যবসা বন্ধ না হয়ে বরং বৃদ্ধি পেয়েছে।’
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবক।