২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি হেফাজতে নিহত হন জর্জ ফ্লয়েড। ৪৮ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর খবরে প্রতিবাদ ওঠে দেশটিতে। লকডাউন উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে মানুষের জোয়ার।
যার ঢেউ লেগেছে গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের হৃদয়ে। তাইতো ঢাকার লকডাউন ভুলে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের সেই জর্জ ফ্লয়েডকে নিয়ে গাইলেন বাংলাদেশের ফকির আলমগীর।
কী আমার বর্ণ কী আমার ধর্ম, আমি কৃষ্ণাঙ্গ নাকি শ্বেতাঙ্গ, থাকবে কেন এই বৈষম্য, আমি মানুষ, মানুষ হয়েই জন্ম—এমন কথায় সাজানো গানটি লিখেছেন কবির বকুল। তার সঙ্গে যৌথভাবে কথাগুলোতে সুর দিয়েছেন ফকির আলমগীর। সংগীতায়োজনে ছিলেন অনু মুস্তাফিজ। ৭ জুন রাতে গানটি রেকর্ড করা হয় ঢাকার একটি স্টুডিওতে।
গানটি প্রসঙ্গে কবির বকুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফকির ভাই তো বরাবরই বৈষম্য বা বর্ণবাদ বিষয়ে সোচ্চার থাকেন। তো গেল সপ্তাহ আরেকটি বিশেষ গানের বিষয়ে কথা হচ্ছিল আমাদের। হঠাৎ করেই তিনি বললেন, বকুল ফ্লয়েডকে নিয়ে দ্রুত একটা গান লিখে দাও। গানে গানে আমাদেরও এই প্রতিবাদে শামিল হওয়া দরকার। উনার কথায় উৎসাহ পেলাম। রাতেই লিখে পাঠিয়ে দিলাম। ফোনে ফোনে সুরও করে ফেললাম দুজনে। একদিন পর ফকির ভাই আমাকে ছবি পাঠালেন রেকর্ডিং স্টুডিও থেকে- পিপিই পরা! আমি তো অবাক। গানটা রেকর্ড করে ফেললেন।’
অবশেষে ১০ জুন গানটি উন্মুক্ত হলো ইউটিউবে।
ফকির আলমগীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনাটি সারা পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তার জন্য আমি নিজেও ব্যথা অনুভব করছি। প্রথম দিন থেকেই মনে হচ্ছিলো এটার প্রতিবাদ করা দরকার। গান বানানো দরকার। ঘরবন্দি থেকে ছটফট করছিলাম। অবশেষে বকুলকে পেলাম। ও দ্রুত সময়ের মধ্যে গানটা লিখে দেওয়ায় কাজটা এগিয়ে গেল অর্ধেক। পরে অনু মুস্তাফিজের সহযোগিতা আর পিপিই’র ওপর ভরসা করে রেকর্ডিং শেষ করলাম।’
গণজাগরণের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই গানের ফকির জানান, গানটি প্রকাশের জন্য এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তার সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। বলেন, ‘দেশের অনেকেই গানটি প্রকাশের আগ্রহ দেখিয়েছেন। অবশেষে কলের গানের ব্যানারে এটি ইউটিউবে উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি।’