X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
জন্মদিনে স্মরণ

হ‌ুমায়ূন আহমেদের উৎসর্গপত্র

সুধাময় সরকার
১৩ নভেম্বর ২০২১, ০০:২৬আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২১, ১৩:৫৬

আজ (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ঔপন্যাসিক, নির্মাতা, নাট্যকার হ‌ুমায়ূন আহমেদের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। যার হাত ধরে সৃষ্টি হয়েছে অনবদ্য চরিত্র হিমু, মিসির আলি, রূপা, শুভ্রদের মতো তুমুল জনপ্রিয় অদৃশ্য চরিত্র।

হ‌ুমায়ূন আহমেদ তার কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যের বেশিরভাগ শাখাতেই। একাধারে তিনি সাহিত্য দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ রেখেছেন বাংলার মানুষকে, অন্যদিকে নির্মাণ করেছেন অনন্য সব নাটক, চলচ্চিত্র ও গান। তার হাত ধরেই তারকার সম্মান পেয়েছেন এ দেশের অনেক শিল্পী।

তার নির্মাণে উঠে এসেছে নৈসর্গিক দৃশ্য, জোছনা, বৃষ্টিসহ বাংলার অসামান্য সব ব্যঞ্জনা। তরুণ প্রজন্মকে ভিন্নভাবে প্রকৃতি চিনিয়েছেন এই দার্শনিক লেখক। বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজের জানান দেন। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন তিনি।

সুরসিক এই কিংবদন্তির লেখক এতটাই জনপ্রিয়, তার বইয়ের উৎসর্গপত্রটাও ছিল মুগ্ধতা নিয়ে পড়ার মতো। পরিচিতরা তো বটেই, অচেনা পাঠকের নামেও তিনি বই উৎসর্গ করেছেন অনেক। এই উৎসর্গের তালিকা দীর্ঘ। যে তালিকায় বাবা-মা-স্ত্রী-সন্তান থেকে শুরু করে গাছের নামও আছে। আবার বই লেখা শেষে উৎসর্গের জন্য মনের মতো কাউকে না পেলে উৎসর্গপত্রে সে কথাটিও তিনি লিখে গেছেন অবলীলায়। অসামান্য জনপ্রিয় এই লেখকের প্রকাশিত অসংখ্য বই থেকে উল্লেখযোগ্য উৎসর্গপত্র পাঠকের কাছে তুলে ধরা হলো-

হ‌ুমায়ূন আহমেদের উৎসর্গপত্র নন্দিত নরকে

নন্দিত নরকবাসী মা-বাবা, ভাইবোনদের।

বহুব্রীহি

জনাব আবুল খায়ের
অভিনয় যার প্রথম সত্তা

অভিনয় যার দ্বিতীয় সত্তা।

আমি এবং কয়েকটি প্রজাপতি

তার নাম রোমেল। আমি তাকে রহস্য করে ডাকি ত্রুস্ক, রাশিয়ান সাবমেরিন ত্রুস্ক, নাবিকদের নিয়ে সাগরে তলিয়ে যাওয়া ত্রুস্ক। রোমেলকে দেখলেই আমার কেন জানি তলিয়ে যাওয়া সাবমেরিনের কথা মনে হয়। সে পড়াশোনা করেছে রাশিয়ায়। রূপবতী এক রাশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করেছে। মেয়েটি রাশিয়ার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তাদের পুতুলের মতো একটা ছেলে আছে। রোমেল তার রাশিয়ান পরিবার নিয়ে পাবনায় বাস করছে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ তার মাস্টার্স ডিগ্রি আছে কিন্তু সে জীবন নির্বাহ করছে পত্রিকা বিক্রি করে।

আখতারুজ্জামান রোমেল (ত্রুস্ক)।

আসমানীরা তিন বোন

আমি একজনকে চিনি যিনি দাবি করেন তাঁর শরীরের পুরোটাই কলিজা। চামড়ার নিচে রক্ত মাংস কিছু নেই, শুধুই কলিজা। এ ধরনের দাবি করার জন্য সত্যি সত্যিই অনেক বড় কলিজা লাগে।

প্রণব ভট্ট।

বৃষ্টি ও মেঘমালা

মধ্যদুপুরে অতি দীর্ঘ মানুষের ছায়াও ছোট হয়ে যায়।

অধ্যাপক তৌফিকুর রহমানকে।

যার ছায়া কখনো ছোট হয় না।

এই আমি

গাজী শামছুর রহমান

যিনি নিজে চোখ বন্ধ করে থাকেন কিন্তু আশেপাশের সবাইকে বাধ্য করেন চোখ খোলা রাখতে। 

মৃন্ময়ীর মন ভালো নেই

তিনি সব সময় হাসেন।

যতবার তাঁকে দেখেছি, হাসিমুখ দেখেছি।

আমার জানতে ইচ্ছা করে জীবনে কঠিন দুঃসময়ে তিনি যখন কলম হাতে নিয়েছিলেন

তখনও কি তাঁর মুখে হাসি ছিলো?

সর্বজন প্রিয় আমাদের রাবেয়া খাতুন।

রূপার পালঙ্ক

একবার একজন লেখক আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। আমাদের তিন কন্যা যে যেখানে ছিলো, লেখকের নাম শুনে উঠে চলে এলো। আমার মেজো মেয়ে বলল, এতো বড় লেখকের সামনে সে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। তার না-কি পা ঝিমঝিম করছে। আমি তখন লেখককে দেখছিলাম না, মুগ্ধ হয়ে আমার তিনকন্যার উচ্ছ্বাস দেখছিলাম।

সেই লেখকের নাম- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস

ভালবেসে যদি সুখ নাহি তবে কেন,

তবে কেন মিছে ভালোবাসা

গুলতেকিন-কে।

এই মেঘ, রৌদ্রছায়া

ছবি পাড়ায় আমার ছোট্ট একটা অফিস আছে। সেই অফিসে রোজ দুপুরবেলা অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ উপস্থিত হয় এবং হাসিমুখে বলে, ভাত খেতে এসেছি। সে আসলে আসে কিছুক্ষণ গল্প করার জন্যে। ইদানীং মাহফুজ খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দুপুরবেলা তার হাসিমুখ দেখতে পাই না। মাহফুজ কি জানে, প্রতিদিন দুপুরে আমি মনে মনে তার জন্যে অপেক্ষা করি?

অয়োময়

আমার স্তন্যদাত্রী

নানিজান-কে।

দিঘির জলে কার ছায়া গো

কন্যা লীলাবতীকে। এই উপন্যাসের নায়িকা লীলা। আমার মেয়ে লীলাবতীর নামে নাম। লীলাবতী কোনোদিন বড় হবে না। আমি কল্পনায় তাকে বড় করেছি। চেষ্টা করেছি ভালোবাসায় মাখামাখি একটি জীবন তাকে দিতে।

মা লীলাবতী: নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে।

আনন্দ বেদনার কাব্য

শামসুর রাহমান

শ্রদ্ধাষ্পদেষু

আমাকে দেখাও পথ ধ্যানী;

চোখ বন্ধ ক’রে অন্ধকারে হেঁটে হেঁটে

এখন কোথায় যাবো? কার কাছে যাবো?

কালো যাদুকর

জুয়েল আইচ

জাদুবিদ্যার এভারেস্টে যিনি উঠেছেন। এভারেস্টজয়ীরা শৃঙ্গ বিজয়ের পর নেমে আসেন। ইনি নামতে ভুলে গেছেন।

তিথির নীল তোয়ালে

বিখ্যাত টেলিভিশন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা

আমার জানতে ইচ্ছে করে, একজন মানুষ এত ভাল অভিনয় কীভাবে করেন?

লীলাবতী

শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশ

কবি, আমি কখনো গদ্যকার হতে চাই নি।

আমি আপনার মতো একজন হতে চেয়েছি।

হায়, এত প্রতিভা আমাকে দেয়া হয় নি।

মাতাল হাওয়া

কোন মৃত মানুষ মহান আন্দোলন চালিয়ে নিতে পারেন না। একজন পেরেছিলেন।

আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তাঁর রক্তমাখা শার্ট ছিলো ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের চালিকাশক্তি।

আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ

বৃক্ষদের!

যাদের কারণে গল্পগুলি লেখা হয়েছে

বাদশাহ নামদার

নিনিত হুমায়ূন

আমার কেবলই মনে হচ্ছে পুত্র নিনিত পিতার কোন স্মৃতি না নিয়েই বড় হবে। সে যেন আমাকে মনে রাখে এইজন্যে নানান কর্মকাণ্ড করছি। আমি ছবি তুলতে পছন্দ করি না। এখন সুযোগ পেলেই নিনিতকে কোলে নিয়ে ছবি তুলি। এই বইয়ের উৎসর্গপত্রও স্মৃতি মনে রাখা প্রকল্পের অংশ।

উঠোন পেরিয়ে দুই পা

পক্ষী বন্ধু সাদাত সেলিম

তিনি পাখিদের ভালোবাসেন

পাখিরা কি তাঁকে ভালোবাসে?

মিসির আলির চশমা

সম্প্রতি আমি একজনকে পেয়েছি যে বাংলাদেশের বিভিন্ন মানুষদেরকে মিসির আলি হিসেবে নিয়ে আসছে। এবং সবাইকে ভাবতে বাধ্য করছে এদের মিসির আলি হিসেবে ভাবতে।

তরুণ পরিচালক অনিমেষ আইচ।

মিসির আলি অমনিবাস

‘মিসির আলি অমনিবাস’ আমার অতি প্রিয় গ্রন্থের একটি। প্রিয় গ্রন্থের সঙ্গে প্রিয়জনের নাম যুক্ত থাকাই বাঞ্চনীয়। মিসির আলির লজিক এই কথাই বলে। কাজেই বইটি গুলতেকিনের জন্য।

মিসির আলি! আপনি কোথায়?

কিছু লেখা আছে কাউকে উৎসর্গ করতে মন চায় না। এই লেখাটি সেরকম।

কাজেই উৎসর্গ পত্রে কেউ নেই।

হিমুর দ্বিতীয় প্রহর

জাহিদ হাসান, প্রিয় মানুষ

মানুষ হিসেবে সে আমাকে মুগ্ধ করেছে,

একদিন হয়তো অভিনয় দিয়েও মুগ্ধ করবে।

(দ্বিতীয় বাক্যটি দিয়ে তাকে রাগিয়ে দিলাম, হা হা হা)

সে আসে ধীরে

মৃত্যুর কাছাকাছি যাবার মতো ঘটনা আমার জীবনে কয়েকবারই ঘটেছে। একবারের কথা বলি। আমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে- আমাকে নেয়া হয়েছে হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে। আমি চলে গিয়েছি প্রবল ঘোরের মধ্যে, চারপাশের পৃথিবী অস্পষ্ট। এর মধ্যেও মনে হচ্ছে হলুদ পাঞ্জাবি পরা এক যুবক আমার পাশে বসে। কে সে? হিমু না-কি? আমি বললাম, কে? যুবক কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, হুমায়ূন ভাই, আমি স্বাধীন। আপনার শরীর এখন কেমন? শরীর কেমন জবাব দিতে পারলাম না, আবারও অচেতন হয়ে পড়লাম। এক সময় জ্ঞান ফিরল। হলুদ পাঞ্জাবি পরা যুবক তখনো পাশে বসা। আমি বললাম, কে? যুবক কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, আমি স্বাধীন।

হিমুর এই বইটি স্বাধীনের জন্যে। যে মমতা সে আমার জন্যে দেখিয়েছে সেই মমতা তার জীবনে বহুগুণে ফিরে আসুক- তার প্রতি এই আমার শুভকামনা।

এবং হিমু

ব্রাত্য রাইসু, যে মাঝে মাঝে হিমুর মতো হাসে।

হিমুর একান্ত সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য

এক জীবনে অনেককে বই উৎসর্গ করে ফেলেছি। এদের মধ্যে পছন্দের মানুষ আছে আবার অপছন্দের মানুষও আছে। অপছন্দের মানুষদের কেন বই উৎসর্গ করেছিলাম এখন তা আর মনে করতে পারছি না।

উৎসর্গ খেলাটা আপাতত বন্ধ।

তিন বিচিত্র

আমার একজন কার্ডিওলজিস্ট বন্ধু আছেন, তাঁর কাছে যখনি যাই তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেন, ‘আপনার তো দিন শেষ’।

কোন ডাক্তার যে এত সহজে দিন শেষের কথা বলতে পারেন আগে শুনিনি। আমি মুগ্ধ!

প্রফেসর বরেন চক্রবর্তী

ভালোমানুষেষু।

দারুচিনি দ্বীপ

মা মনি নোভা আহমেদ

এই উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির প্রথম পাঠিকা নবম শ্রেণীর বালিকা আমার বড় মেয়ে নোভা আহমেদ। সে বই শেষ করেই আমাকে বললো, আমার যখন একুশ বছর বয়স হবে তখন কি তুমি আমাকে এই বইয়ের নায়িকার মতো একা একা সেন্ট মার্টিন আইল্যান্ড যেতে দেবে? আমি বললাম- না।

সে কঠিন গলায় বলল, তাহলে তুমি এই বইয়ে মিথ্যা কথা কেন লিখলে? আমি তার অভিমানী চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে বাধ্য হলাম-আচ্ছা যাও তোমাকেও যেতে দেবো।

উড়ালপঙ্খী

আমার কিছু বন্ধুবান্ধব আছে সপ্তাহে একবার যাদের মুখ না দেখলে মনে হয় সপ্তাহটা ঠিকমতো পার হলো না। কিছু যেন বাদ পড়ে গেলো।

শফিক-উল-করিম।

লিলুয়া বাতাস

দীর্ঘদিন কেউ আমার পাশে থাকে না, একসময় দূরে সরে যায়।

হঠাৎ হঠাৎ এক আধজন পাওয়া যায় যারা ঝুলেই থাকে, যেমন অভিনেতা ফারুক।

লিলুয়া বাতাস বইটি তার জন্যে।

পরম করুণাময় তার হৃদয়ে লিলুয়া বাতাস বইয়ে দেবেন, এই আমার শুভ কামনা।

ফারুক আহমেদ

সুকনিষ্ঠেষু।

সেদিন চৈত্রমাস

আমি লক্ষ্য করে দেখেছি অতি বুদ্ধিমান কেউ কখনো ভাল মানুষ হয় না। মারুফ তার ব্যতিক্রম। আচ্ছা তার সমস্যাটা কি?

মারুফুল ইসলাম

ভালমানুষেষু।

তেঁতুল বনে জোছনা

অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ

কিছু মানুষ আছেন যাদের দেখামাত্র মন আনন্দে পূর্ণ হয়, কিন্তু তারা যখন কাছে থাকেন না তখন তাদের কথা তেমন মনে পড়ে না। হায়াৎ ভাই সেই দলের আমার দেখা নিখুঁত ভালো মানুষদের একজন।

দেখা না-দেখা

নিষাদ হুমায়ূন, তুমি যখন বাবার লেখা এই ভ্রমণ কাহিনী পড়তে শুরু করবে তখন আমি হয়তোবা অন্য এক ভ্রমণে বের হয়েছি। অদ্ভুত সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কাউকেই জানাতে পারব না। আফসোস!

আমার প্রিয় ভৌতিক গল্প

আমার তিন কন্যা বিপাশা, শীলা, নোভা।

এরা ভূত বিশ্বাস করে না, কিন্তু ভূতের ভয়ে অস্থির হয়ে থাকে। প্রায়ই দেখা যায় তিন কন্যা ঠাসাঠাসি করে এক বিছানায় ঘুমুচ্ছে, কারণ কেউ একজন ভয় পেয়েছে।

পারুল ও তিনটি কুকুর

কাকলী প্রকাশনীর নাসির আহমেদ

এবং

সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদ

এরা দু’জনেই জানে না এদের আমি কি পরিমাণ পছন্দ করি। একদিন হুট করে মরে যাবো, আমার ভালোবাসার কথা এরা জানবে না। তা তো হয় না। কাজেই এই উৎসর্গপত্র।

রাক্ষস খোক্কস এবং ভোক্ষস

নিষাদের পাঁচ তলার চাচী

এবং

মোটু চাচুকে

(এই দু’জন মনে করেন নিষাদ মানব সন্তান না, দেবশিশু। মনে হয় এদের মাথায় কোন সমস্যা আছে।)

নুহাশ এবং আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ

গোলটা-চক্ষু, নুহাশ আব্বুটিং কে

ভূত ভূতং ভূতৌ

ছোট্ট বন্ধুরা, তোমাদের কি কখনো এমন হয় যে কোন একজন কে খুব ভালো লাগে, কিন্তু কখনো মুখ ফুটে ভালোলাগার কথাটা বলতে পারো না? আমার প্রায়ই হয়। আমার এমন একজন ভালো লাগার মানুষ হচ্ছেন ছোট মির্জা আসাদুজ্জামান নূর। মুখ ফুটে তাকে এই কথা বলিনি। আজ বললাম। ছোটদের এই বইটি তার জন্য।

হিমু রিমান্ডে

জগতের সর্বকনিষ্ঠ হিমু নিষাদ হুমায়ূনকে হাঁটি হাঁটি পা পা (হিমুর মতো) যেখানে ইচ্ছা সেখানে যা।

চক্ষে আমার তৃষ্ণা

আমার হৃদয় নামক পাম্পিং মেশিনে কিছু সমস্যা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্যে মাঝে মাঝে আমাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে যেতে হয়। তখন এক প্রবাসী গল্পকার ছুটে আসেন। প্রাণপণ চেষ্টা করেন আমাকে কিছুটা স্বস্তি দিতে।

শহীদ হোসেন খোকন

স্বস্তিকারকেষু।

হরতন ইশকাপন

উৎসর্গ পাতায় কারোর নাম লিখতে ইচ্ছা করছে না। যতো বয়স বাড়ছে আমিও মনে হয় মিসির আলির মতো নিজেকে গুটিয়ে আনছি।

রূপা

তিনি দূর দ্বীপবাসিনী

তাঁর পছন্দের জগত, স্টেইনবেকের রহস্যময় জগত।

আমার অল্প কিছু কাছের মানুষদের একজন।

সালেহা চৌধুরী।

বৃষ্টি বিলাস

আমার তিন বৃষ্টি প্রেমিক কন্যা

বিপাশা আহমেদ, শীলা আহমেদ, নোভা আহমেদ।

হিমু

আয়েশা মোমেন,

আপা, আপনি ভালবাসার যে কঠিন ঋণে আমাকে জড়িয়ে রেখেছেন, সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। ঋণী হয়ে থাকতে ভাল লাগে না, কিন্তু কি আর করা!

আজ  চিত্রার বিয়ে

নোভা আহমেদ, আরসাদ মাহমুদ চৌধুরী

যুগলেষু।

আমার ছোট্ট মা নোভা, হঠাৎ বড় হয়ে গেছে। কি আশ্চর্য সে এখন তরুণী বধূ। বিয়ের আসরে দেখি সে এক সময় মুগ্ধ হয়ে তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখে কি প্রগাঢ় মমতা। মাগো! তোমার চোখের এই মমতা চিরস্থায়ী হোক পরম করুণাময়ের কাছে এই আমার বিনীত প্রার্থনা।

রোদনভরা এ বসন্ত

হিমু নামের কেউ যদি থাকতো তাহলে কোনও এক জোছনার রাতে তাকে বলতাম- এই বইটি কেন আপনাকে উৎসর্গ করা হল বলুন তো? দেখি আপনার কেমন বুদ্ধি!

জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল

সাজ্জাদ শরীফ

ভাই, বঙ্গদেশীয় ‘ইনটেলেকচুয়েলদের’ ব্যাপারে আমার এলার্জি আছে। এদের সহ্য হয় না। আপনাকে কেন সহ্য হল এবং সহ্য হতে হতে কেন পছন্দ হয়ে গেল- বুঝতে পারছি না। আমার পছন্দের ব্যাপারটি কাগজ পত্রে থাকুক এই ভেবেই উৎসর্গ লিপি।

রুমালী

জলি আবেদিন, জামাল আবেদিন

যুগলেষু।

এমন আনন্দময় মানব-মানবী আমি খুব কম দেখেছি। তাদের এই আনন্দ দেখেও সুখ।

হিমুর আছে জল

একজন মানুষকে চেনা যায় যুদ্ধক্ষেত্র এবং ছবির আউটডোর শুটিং-এ। নিষাদের প্রিয় দাড়িওয়ালা মামাকে।

তারিক আনাম খান।

বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল

উপন্যাস লেখার একটা পর্যায়ে উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে রক্ত-মাংসের মানুষ মনে হতে থাকে। তাদেরকে বই উৎসর্গ করা কি যুক্তিযুক্ত না?

‘বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল’ বইটির হেদায়েতের বড় ভাই বেলায়েতকে।

হিমুর মধ্যদুপুর

নওশাদ চৌধুরী, প্রিয়বরেষু

অসম্ভব প্র্যাকটিক্যাল একজন মানুষ। মাথায় ব্যবসা নিয়ে নানান পরিকল্পনা। তারপরেও তারমধ্যে আমি হিমুর ছায়া দেখি এবং অবাক হই।

কুহক

(যে গ্রন্থটিতে কোন উৎসর্গপত্র নেই)

আজ  হিমুর বিয়ে

উৎসর্গ করার মতো কাউকে পাচ্ছি না। সরি।

মিসির আলি! আপনি কোথায়? 

কিছু লেখা আছে কাউকে উৎসর্গ করতে মন চায় না। এই লেখাটি সেরকম। কাজেই উৎসর্গপত্রে কেউ নেই।

জোছনা ও জননীর গল্প 

আমার মা বেগম আয়েশা আক্তার খাতুন

বাবা (শহীদ) ফয়জুর রহমান আহমেদ।

কহেন কবি কালিদাস 

এক সময় তার পছন্দের চরিত্র ছিলো হিমু। সে হিমুর মতো কথা বলতো, হিমুর মতো ভাবতো। তার বোনরা তার কাণ্ড দেখে তাকে একটা হলুদ পাঞ্জাবিও বানিয়ে দিলো। সে গম্ভীর মুখে হলুদ পাঞ্জাবি পরে আমার সঙ্গে দেখা করতে এলো। কিছুদিন হলো সে জানাচ্ছে হিমু এখন আর তার প্রিয় চরিত্র না। সে এখন মিসির আলির ভক্ত।মিসির আলির এই বইটি তার জন্যে, নুহাশ হুমায়ূন দ্য গ্রেট।

বলপয়েন্ট

নিষাদ বেবীকে (নিষাদ হুমায়ূন)

বাবাকে সে খুব বেশিদিন কাছে পাবে বলে মনে হচ্ছে না।যদি কোন বিষণ্ণ চৈত্রের দিনে বাবার কথা তার জানতে ইচ্ছা করে, তখন এই বই সে পড়বে। এবং সে নিশ্চয়ই বলবে, আমার বাবা ছিলেন একজন ‘দুঃখী বলপয়েন্ট’!

ফাউন্টেনপেন

ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান

ব্যক্তিগতভাবে আমি এই তরুণকে চিনি না। কিন্তু মুগ্ধ হয়ে তার ক্রিকেট খেলা দেখি। তার কাছে আমার একটি প্রশ্ন আছে। দশজন কিংবা বারোজন না হয়ে ক্রিকেট কেন এগারজনের খেলা?

যদিও সন্ধ্যা

বইটা অভিনেতা আহমেদ রুবেলকে

অভিনেতা হিসেবে A+, মানুষ হিসেবে A++।

তোমাদের এই নগরে

এ.এফ.এম. তোফাজ্জল হোসেন

এই মানুষটি জীবনে কোন কিছুই চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেননি। তবু তাঁর বন্ধুরা তাঁকে আদর করে ডাকে- চ্যালেঞ্জার।

তন্দ্রাবিলাস 

সেলিম চৌধুরী এবং তুহিন

মাঝে মাঝে চিন্তা করি- আমার এক জীবনের সঞ্চয় কি? কিছু প্রিয় মুখ, কিছু সুখ স্মৃতি...

প্রিয়মুখদের ভেতর তোমরা আছো। এই ব্যাপারটা তোমাদের কাছে কতোটুকু গুরুত্বপূর্ণ আমি জানি না...

সানাউল্লাহর মহাবিপদ

ওয়াহিদ ইবনে রেজা(বাপ্পি)

বড় কবিরা পারবারিকভাবে অসুখী হন। বাপ্পি একজন বড় কবি এটা জেনে ভালো লাগছে। সে আরও বড় কবি হোক, এই শুভ কামনা।

আজ আমি কোথাও যাবো না 

মানুষ পৃথিবীতে এসেছে পঞ্চ ইন্দ্রিয় নিয়ে। শোনা যায় কিছু মহাসৌভাগ্যবান মানুষ ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় নিয়েও আসেন। আমার কপাল মন্দ, ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দূরের কথা পঞ্চম ইন্দ্রিয়ের এক ইন্দ্রিয় কাজ করে না। দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে আমি কোন কিছুর গন্ধ পাই না। ফুলের ঘ্রাণ, লেবুর ঘ্রাণ, ভেজা মাটির ঘ্রাণ... কোন কিছুই না। এদেশের এবং বিদেশের অনেক ডাক্তার দেখালাম। সবাই বললেন, যে নার্ভ গন্ধের সিগন্যাল মস্তিষ্কে নিয়ে যায় সেই নার্ভ নষ্ট হয়ে গেছে। সেটা আর ঠিক হবে না। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে গন্ধবিহীন জগৎ স্বীকার করে নিলাম। কী আশ্চর্য কথা, অল্পবয়স্ক এক ডাক্তার আমার জগতকে সৌরভময় করতে এগিয়ে এলেন। দীর্ঘ পনেরো বছর পর হঠাৎ লেবু ফুলের গন্ধ পেয়ে অভিভূত হয়ে বললাম, এ-কী! যিনি আমার জগৎ সৌরভময় করেছেন, তাঁর নিজস্ব ভুবনে শত বর্ণের শত গন্ধের, শত পুষ্প আজীবন ফুটে থাকুক- এই আমার তাঁর প্রতি শুভ কামনা। ডা. জাহিদ। 

মিসির আলি আনসলভড 

মিসির আলির কিছু স্বভাব আমার মধ্যে আছে। অতি বুদ্ধিমান মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করি। চ্যানেল আই এর ইবনে হাসান খান তার ব্যতিক্রম। অতি বুদ্ধিমান হলেও তার সঙ্গ আমি অত্যন্ত পছন্দ করি। ইবনে হাসান খান বুদ্ধিশ্রেষ্ঠ।

যখন নামিবে আঁধার

খোকন নামের সঙ্গে কীভাবে যেন আমি যুক্ত। চারজন খোকনের সঙ্গে আমার গাঢ় পরিচয় আছে। খোকন সিঙ্গাপুর, খোকন নিউ ইয়র্ক, খোকন লাস ভেগাস, খোকন ঢাকা। চার খোকনের এক বই।

হিমুর নীল জোছনা 

বাষট্টি বছর বয়েসি কঠিন হিমু কেউ কি দেখেছেন? আমি দেখেছি। তার নাম সেহেরী। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। তিনি শুধু যে হলুদ পাঞ্জাবি পরেন তা-না, তিনি নিজের চুল-দাড়ি সবই মেহেদি দিয়ে হলুদ করে রাখেন। পূর্ণিমার রাতে আয়োজন করে জোছনা দেখতে গাজীপুরের জঙ্গলে যান সৈয়দ আমিনুল হক সেহেরী।

হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্ম নেত্রকোনার কুতুবপুরে, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে শহীদ হন। মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। তার দুই ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব। প্রত্যেককেই লেখালেখিতে পাওয়া গেছে।

এদিকে আজ (১৩ নভেম্বর) এই কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ আয়োজন করা হলো তার জন্মস্থান নেত্রকোনা এবং প্রিয়স্থান গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে।

/এমএম/
সম্পর্কিত
শুভ জন্মদিন হিমু কারিগর হ‌ুমায়ূন আহমেদ
শুভ জন্মদিন হিমু কারিগর হ‌ুমায়ূন আহমেদ
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ
হ‌ুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার নয় বছর
হ‌ুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার নয় বছর
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
ভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনভোট দিতে এসে কেউ উৎফুল্ল, অনেকেই ক্ষুব্ধ!
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: কড়া নিরাপত্তায় চলছে ভোটগ্রহণ
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: কড়া নিরাপত্তায় চলছে ভোটগ্রহণ
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য