X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

আলী যাকের: প্রস্থানের এক বছর

বিনোদন রিপোর্ট
২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৪:৫৯আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭:৫৮

আজ (২৭ নভেম্বর) কিংবদন্তি নাট্যজন আলী যাকেরের প্রস্থানের দিন। ২০২০ সালের এই দিনে ক্যানসারের কাছে হার মানেন তিনি।

আলী যাকের ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন তিনি। তার বাবা মোহাম্মদ তাহের ছিলেন চট্টগ্রাম সদর স্ট্রিটের মহকুমা প্রশাসক, মা রিজিয়া ছিলেন গৃহিণী। বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় শৈশব কাটিয়েছে তিনি। আলী যাকের সেন্ট গ্রেগরি স্কুল থেকে ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিক এবং ১৯৬২ সালে নটর ডেম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক করেন।

স্বাধীন বাংলা বেতারের একজন শব্দযোদ্ধা ছিলেন আলী যাকের। ১৯৭২ সালের আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে। ১৯৭২ সালের জুন মাসের দিকে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন। ওই দলে তিনি আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে অভিনয় করেন, যার প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ওয়াপদা মিলনায়তনে।

১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন ‘বাকি ইতিহাস’, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর যাত্রা। আলী যাকের ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাভিশনের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘ভালোবাসার বাংলাদেশ’ উপস্থাপনা করেন। এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির কর্ণধার ছিলেন তিনি। 

‘বাকি ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘দেওয়ান গাজীর কিস্‌সা’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’, ‘গ্যালিলিও’, ‘ম্যাকবেথ’সহ অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকে অভিনয় ও নির্দেশনা দেন আলী যাকের। এছাড়া টেলিভিশনে ‘আজ রবিবার’, ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি’, ‘পাথর দেয়াল’সহ অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। ৫০টির বেশি বেতার নাটকে অভিনয় ছাড়াও লিখেছেন টেলিভিশনের জন্য মৌলিক নাটক। তার লেখা বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘সেই অরুণোদয় থেকে’, ‘নির্মল জ্যোতির জয়’ প্রভৃতি।

১৯৭৭ সালে দুই নাট্যসারথী আলী যাকের আর সারা যাকের বিয়ে করেন। এই দম্পতির দুই সন্তান, পুত্র ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রিয়া সর্বজয়া।

দুই সন্তানের সঙ্গে যৌবনে আলী যাকের ও সারা দম্পতি শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানা পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত করে। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।

গত ৬ নভেম্বর ছিল এই কিংবদন্তির ৭৭তম জন্মদিন। এদিন এই প্রয়াতের নামে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবর্তন করা হয়েছে ‘আলী যাকের গ্র্যান্ট’। উন্মুক্ত করা হয় ‘বাতিঘর’। এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি জানায়, আলী যাকেরের জীবন ও কাজ নিয়ে শিল্প ও সংস্কৃতিপ্রেমী, বিশেষ করে তরুণদের ধারণা দেবে ‘বাতিঘর’ (৭বি, এইচ ব্লক, বনানী, ঢাকা)। আগ্রহীরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আলী যাকেরের ভূমিকা; সাহিত্য, চিত্রকর্ম ও সংগীত নিয়ে তার ভাবনা ও ভালোবাসা; এবং তার ব্যক্তি ও পেশাগত জীবন নিয়ে জানতে বাতিঘর ঘুরে আসতে পারবেন। 

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
পুষ্পা: আসবে তৃতীয় কিস্তি!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
যুক্তরাষ্ট্রে নোমান রবিনের ‘ছাই থেকে ফুল’
যুক্তরাষ্ট্রে নোমান রবিনের ‘ছাই থেকে ফুল’