অতিথি পাখির মতো বাংলাদেশে এসেছেন ওপার বাংলার বিখ্যাত সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। যদিও গানে-সুরে তিনি বরাবরই লাল সবুজের দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেছেন। আবার সশরীরে এসেও বহুবার গান শুনিয়েছেন। সর্বশেষ গত সপ্তাহেই ঢাকার মঞ্চে গান পরিবেশন করেছেন প্রবীণ এই শিল্পী।
একদিন নয়, মোট তিনদিন গান গেয়েছেন কবীর সুমন। গানের ফাঁকে টুকটাক কথার ঝর্ণায় সিক্ত করেছেন ভক্তদের। তবে আলাদা করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি। দীর্ঘ ১৩ বছর পর ঢাকায় আসা, গান করা, ভেন্যু জটিলতা, ভক্তদের সীমাহীন ভালোবাসা; কোনও কিছু নিয়েই টুঁ শব্দ করেননি।
তবে কলকাতায় ফিরে সরব হলেন গানওয়ালা। বাংলাদেশ ও এখানকার মানুষকে নিয়ে কিছু কথা বলেছেন তিনি। ফেসবুকের ওয়ালে সুমন লিখেছেন, ‘কলকাতায় যে অল্প কজন আমায় বাঁচিয়ে রাখেন, তাদের অভাব অনুভব করেছি ১৩ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর। কিন্তু বাংলাদেশ ছেড়ে এসে আমার হৃদয় আমায় বলে দিচ্ছে আমার গান, আমার গানের সুর, তাল, ছন্দ, লয়, লিরিক, গায়কি, আমার কীবোর্ডস বাজানোর দেশ আসলে বাংলাদেশ। সেখানেই আমি এই চলতি তিয়াত্তরে আমার শ্রোতাদের খুঁজে পেয়েছি।’
ঢাকাই শ্রোতাদের প্রশংসায় কবীর সুমন বলেছেন, ‘তারা আমার ধর্ম, আমার ধর্মান্তরিত ধর্ম, আমার রাজনৈতিক মতবাদের রঙ, আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহী নন। তারা আমার গানবাজনা শুনতে আগ্রহী। জীবনে প্রথম দেখলাম নানান বয়সের মানুষ দুলে দুলে আমার গান শুনছেন- একটি কথা নেই, কোথাও কোনও ফোন বেজে উঠছে না। জীবনে প্রথম মনে হলো এদের শোনানোর জন্যই আমায় এখনও আরও রেয়াজ করতে হবে, শিখতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে, শরীর ও কন্ঠ ঠিক রাখতে হবে, কীবোর্ডসে দখল আরও বাড়াতে হবে, গান গাওয়ার ক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ!’
সুমনের এই স্ট্যাটাসে বাংলাদেশের অনেকেই মন্তব্য করেছেন। পুনরায় তাকে গান গাইতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কেউবা অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে স্মৃতিকাতর হয়েছেন।
গত ১৩ অক্টোবর ঢাকায় এসেছিলেন কবীর সুমন। এরপর ১৫ অক্টোবর আধুনিক গান গাইতে ওঠেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে। একই ভেন্যুতে ১৮ অক্টোবর পরিবেশন করেন বাংলা খেয়াল এবং ২১ অক্টোবর ফের আধুনিক গানে মুগ্ধতা ছড়ান। সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা ত্যাগ করেন ‘তোমাকে চাই’ খ্যাত এই শিল্পী।