X
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

ঘানা থেকে ঢাকায় ফিরলেন পিলু খান, ব্যস্ত হলেন গানে

সুধাময় সরকার
১৮ জুন ২০২৩, ১৯:১৭আপডেট : ১৯ জুন ২০২৩, ০২:১০

পিলু খানকে বলা হয় দেশের হাতে গোনা কয়েকজন জাত মিউজিশিয়ানদের একজন। যার মূল পরিচিতি ব্যান্ড রেনেসাঁর অন্যতম সদস্য হলেও সুরকার হিসেবে তার সুনাম বয়ে চলছে চার দশক ধরে। অথচ সেই মানুষটি ২০১৭ সাল থেকে দেশ ছেড়ে পড়ে ছিলেন দূর পরবাসে। প্রথমে মালয়েশিয়া, পরে আফ্রিকার দেশ ঘানায়।

প্রায় ছয় বছরের প্রবাস জীবন শেষে সম্প্রতি এই সংগীতজন দেশে ফিরেছেন। ব্যস্ত হয়েছেন পুরোনো রুটিনে। রুটিন মানে ব্যান্ড রেনেসাঁর গান তৈরি আর শোয়ের পরিকল্পনা। সঙ্গে একক শিল্পীদের জন্য বেশ কিছু প্রজেক্ট। তারচেয়েও বড় খবর, পিলু খান লম্বা বিরতির পর থিতু হলেন দেশে ও সংগীতে।

তার ভাষায়, ‘বিদেশে থাকতেও মিউজিকের সঙ্গেই ছিলাম। ঘরে নিজের ছোট একটা সেটআপ ছিল। তবে সেটা আসলে সময় কাটানোর মতো। আমরা যারা ব্যান্ড অন্তপ্রাণ, তারা তো আসলে শেয়ারিং পছন্দ করি। বিদেশে থেকে তো সেটা সম্ভব ছিল না। তাই কাজ করে আসলে তৃপ্তি পেতাম না। স্বস্তির বিষয়, দেশে স্থায়ীভাবে ফিরেছি প্রায় ৬ বছর পর। এখন নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে চাই।’

ঘানায় ছেলে দামীরের সঙ্গে পিলু খান ‘আজ যে শিশু’, ‘সময় যেন কাটে না’, ‘হে বাংলাদেশ, ‘তোমার বয়স হলো কত’, ‘আকাশ আমার জোছনা আমার’, ‘এদিন তো রবে না’র মতো অনেক গানের সুর স্রষ্টা পিলু খান। দেশে ফিরেই হাতে নিয়েছেন ব্যান্ড সোলস ও রেনেসাঁর একটি যৌথ প্রজেক্টের কাজ। যা প্রকাশ হবে সোলস-এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে। এছাড়া নিজ দল রেনেসাঁ’র অনেক গান পড়ে আছে হাফডান হয়ে, সেগুলোতেও ক্রমশ হাত দিচ্ছেন। সঙ্গে বেশ কিছু একক প্রজেক্টও করার কথা চলছে। 

পিলু খান বলেন, ‘৬ বছর দেশের বাইরে থাকার কারণে অনেক গানের কাজ ইচ্ছে থাকলেও করতে পারিনি। আবার অনেক গান হাতে নিয়েও শেষ করতে পারিনি। এটা একজন সুরকার হিসেবে আমার জন্য খানিক বেদনার। তবে এখন যেহেতু স্থায়ীভাবেই দেশে ফিরেছি, আশা করছি আবারও ছন্দে ফিরবো। এবং আমি যে দেশে ফিরেছি সেই খবরটিও অন্যদের নিশ্চিত করতে চাই। কারণ, অনেকেই ভাববেন আমি সম্ভবত বিদেশে ব্যস্ত!’

মঞ্চে পিলু খান সবার অবগতির জন্য জানানো দরকার, পিলু খান গত ৬ বছর বিদেশে (মালয়েশিয়া ও ঘানা) থাকার কারণ একেবারেই পারিবারিক। স্ত্রী ও সন্তানের সুবিধার্থেই তিনি প্রবাস জীবন বেছে নেন। পিলু খান বলেন, ‘আমার স্ত্রী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নেসলে’র এইচআর কর্মকর্তা। তার চাকরির কারণেই ২০১৭ সাল থেকে চার বছর আমরা মালয়েশিয়ায় ছিলাম। একই কারণে গত দুই বছর ঘানার রাজধানী আক্রাতে পরিবারসহ ছিলাম।’

পিলু খান প্রথম স্টেজ পারফর্ম করেছিলেন ১৯৭২ সালে। তারা তিন ভাই (জালাল উদ্দীন খান, নকীব খান ও পিলু খান) পারফর্ম করেছিলেন একমঞ্চে। তাদের ব্যান্ড ছিল ‘বালার্ক’ নামে। ‘বালার্ক’ বাংলা শব্দ। এর অর্থ প্রথম সূর্য বা নবোদিত সূর্য বোঝায়। স্বাধীনতার আগেই ছিল ব্যান্ডটি। ৭২ সালে কক্সবাজারে তারা একটা শো করেন। সেখানেই মঞ্চে উঠে প্রথম ড্রামস বাজান পিলু খান।

একসঙ্গে তিন ভাই- নকীব, জিল্লু ও পিলু পিলু খানের ভাষায়, ‘‘এরপর ৭৪’র দিকে জিল্লু ভাই (গীতিকবি-সুরকার জালাল উদ্দীন খান) ঢাকায় চলে আসেন। তবে ব্যান্ডের আসল অ্যাক্টিভিটি বললে ৭৭ সাল থেকে আমার শুরু, ‘নাট ক্রেকারস’-এ। সে সময় নাসিম আলী খান, কুমার বিশ্বজিৎ একসঙ্গে গাইতেন। এরপর ৭৯ সালে আমি সোলসে যোগ দিই। ব্যান্ডটির লিড গিটারিস্ট সাজেদুল আলম সাজেদ ভাই সুইডেনে চলে যান। তখন আমি সে স্থানে গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত হই। সোলসে জয়েন করার ৬ মাসের মধ্যে ড্রামার রনি দা মধ্যপ্রাচ্যে চলে যান। তখন আবার ড্রামার হিসেবে কাজ শুরু করি। এরপর আমার পুরোনো জায়গায় গিটারিস্ট হিসেবে জয়েন করেন আইয়ুব বাচ্চু। আমি যুক্ত হওয়ার পর নাসিম আলীকেও সেখানে এনেছিলাম। ৮৪ পর্যন্ত সোলস-এ ছিলাম। ৮৫ সালে ঢাকায় চলে আসি। পারিবারিক কারণে আসতে হয়। আমার বড় ভাই ঢাকাতেই স্যাটেল ছিলেন। সে কারণে চলে আসি। ৮৫ সালে আমরা রেনেসাঁ গঠন করি। এরপর থেকে এখনও আছি রেনেসাঁর সঙ্গে।’’

জানা গেছে, রেনেসাঁর প্রধান দুই কম্পোজার নকীব খান ও পিলু খান ভ্রাতৃদ্বয়ের হাতে অন্তত ২০টি গান হাফ-ডান গান পড়ে রয়েছে ব্যান্ডের। পিলু খান দেশে ফেরার পর সেই গানগুলো ক্রমশ প্রাণ পাচ্ছে। যার প্রতিধ্বনি মিলবে নিকট আগামীতে। সোলস সদস্যরা

/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
মব জাস্টিস নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সায়ান
মব জাস্টিস নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সায়ান
বিপুল সরকারের ‘ভুলিবো কেমনে’  
বিপুল সরকারের ‘ভুলিবো কেমনে’  
কান উৎসবে নিষিদ্ধ হলো ‘নগ্নতা’!
কান উৎসবে নিষিদ্ধ হলো ‘নগ্নতা’!
ইয়াশ-মালাইকাকে নিয়ে আবার রাজ
ইয়াশ-মালাইকাকে নিয়ে আবার রাজ
খালেদা জিয়াকে নিয়ে গাইলেন দিঠি আনোয়ার
খালেদা জিয়াকে নিয়ে গাইলেন দিঠি আনোয়ার