X
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

মঞ্চসারথী আতাউর রহমান পেলেন ‘সদরুল পাশা স্মারক সম্মাননা’

বিনোদন রিপোর্ট
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৪৩আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:৪১

অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়ের ৫০ বছর উদযাপনের সূচনা লগ্নে শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রদান করা হয় ‘সদরুল পাশা স্মারক সম্মাননা’। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন এই সম্মাননা প্রদান করা হয় নাট্যান্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ মঞ্চসারথী আতাউর রহমানকে। তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন ও বিশেষ অতিথি দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।

অরিন্দমের সভাপতি আকবর রেজার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন নাট্যব্যক্তিত্ব শিশির দত্ত। প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব সদরুল পাশার স্মৃতিচারণ করেন তার ছোট ভাই গীতিকবি আসিফ ইকবাল। মানপত্র পাঠ করেন অরিন্দম সদস্য কাজল সেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. অনুপম সেন বলেন, ‘জীবনটাই একটা নাটক; যার শুরু আর শেষ কোথায় আমরা জানি না। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সংস্কৃতি বিকাশে নাটকের এক বিশাল ভূমিকা রয়েছে। আর সেই নাট্য আন্দোলনে অরিন্দমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’ তিনি বলেন, ‘নাটক অত্যন্ত কঠিন, সত্যকে সে তুলে আনে। সেইজন্য নাটক সময়ের থেকে এগিয়ে থাকে। নাটক কখনো বঞ্চনা করে না।’

অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মঞ্চসারথী আতাউর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম আমার প্রথম বাড়ি। আমি সাংঘাতিকভাবে চট্টগ্রামের কাছে ঋণী। এইখানে যা শিখেছি, বাকি জীবনে তা আর কোথাও শিখিনি। এখানে এ পুরষ্কারটা নিতে এসেছি, কারণ এখানে হৃদয়ের স্পর্শ আছে।’ তিনি বলেন, ‘নাটক জীবনের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে জানে। সদরুল পাশার সাথে আমার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, বলা চলে আত্মীয়তার বন্ধন। চট্টগ্রামে থেকে আমি মানুষ হতে পেরেছি কিনা জানি না, তবে অমানুষ হইনি। আমার আত্মজীবনীতে চট্টগ্রামের অবদানের কথা থাকে সর্বাগ্রে এবং সবচেয়ে বেশি।’ 

নতুন নাট্য নির্মাতা, ‘অভিনেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রাপ্তির আশায় না করে, মনের আনন্দে কাজ করার মাঝেই প্রকৃত আনন্দ লুকায়িত।’

সদরুল পাশার ছোট ভাই গীতিকবি আসিফ ইকবাল স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘ভাইয়া কলেজিয়েট স্কুলে পড়ার সময় জেসিসি করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বন্ধুদের নিয়ে সেই বিএনসিসির রুমে হানা দিয়ে প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত অস্ত্র লুট করে পাক বাহিনীকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ছিলেন এক নম্বর সেক্টরের ডেপুটি কমান্ডার। যুদ্ধ পরবর্তী চট্টগ্রামে থিয়েটার চর্চায় প্রাণপুরুষ ছিলেন তিনি। তিনি সময়ের আগে জন্মেছিলেন। আমি আশা করি অরিন্দম নাট্যচর্চার মধ্য দিয়ে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’

বক্তব্য রাখছেন আতাউর রহমান সদরুল পাশা ছিলেন চট্টগ্রামের বনেদী পরিবারের সন্তান। তার পিতা ডাক্তার বিএম ফয়জুর রহমান ছিলেন ১৯৭০ এর গণপরিষদ সদস্য এবং ১৯৭২ এর সংসদ সদস্য। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের এক নম্বর সেক্টরের ডেপুটি সেক্টর কমান্ডার এবং হরিণা ক্যাম্পের প্রধান ছিলেন। আজন্ম আওয়ামীলীগের রাজনীতি করা এই মুক্তিযোদ্ধার অসীম অবদানের কথা এখনও মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে সুনামের সাথে। 

সদরুল পাশার মা ছিলেন যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের নারী পুনর্বাসনের জন্য নিবেদিত সমাজকর্মী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদিকা এবং বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সদরুল পাশা ছাড়াও অন্যান্য ভাইবোনেরাও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। বড়বোন ডাক্তার তাজিয়া ইরফান লন্ডনের রয়েল মার্সডান ক্যানসার হসপিটালের অনকোলজিস্ট। মেজোবোন জেসিকা ইরফান চট্টগ্রাম ল কলেজের প্রফেসর। ছোটবোন মুনতাহা ইরফান লুটন ইউনিভার্সিটির মাসকমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম থেকে ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত। ছোটভাই আসিফ ইকবাল নন্দিত গীতিকবি এবং কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব। সদরুল পাশার একমাত্র সন্তান আলিফ পাশা বর্তমানে গ্রামীণ ফোনে উচ্চপদে কর্মরত। 

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
সিনেমায় বালাম ও জালালী শাফায়াত!
সিনেমায় বালাম ও জালালী শাফায়াত!
নতুন গানে টিনা রাসেলের ব্যাকুলতা
নতুন গানে টিনা রাসেলের ব্যাকুলতা
ট্রেলারে ‘গুলমোহর’ যেমন
ট্রেলারে ‘গুলমোহর’ যেমন
কান ক্ল্যাসিকসে চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়
কান ক্ল্যাসিকসে চার্লি চ্যাপলিনের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়
বাবাকে ‘মিথ্যাবাদী’ বললেন নওয়াজ!
বাবাকে ‘মিথ্যাবাদী’ বললেন নওয়াজ!