বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে বিশ্বকাপে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে আয়োজন করা হলো সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ বা সিসিএল। দেশের শোবিজ তারকারা হাসি-খুশি মনে অংশ নিচ্ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতের ম্যাচ শেষে ঘটে যায় অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা। নির্মাতা দীপংকর দীপনের দলের সদস্যদের ওপর হামলা চালায় নির্মাতা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের টিমের কয়েক সদস্য।
ঘটনার ভিডিও-ছবি ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। অভিযোগের আঙুল যাচ্ছে কয়েকজনের দিকে। কিন্তু দিনশেষে বিষয়টি নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? কিংবা খেলা অব্যাহত থাকবে না স্থগিত হবে, সেটিও বড় প্রশ্ন ছিলো। সেটাই জানানো হলো শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে, একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।
সিসিএল আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘটনাটি হঠাৎ করেই মাত্র ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে হয়ে যায়। তবে ভিডিও ফুটেজ থেকে দোষীদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা তথা মামলা করা হয়েছে। লিগের সবগুলো দলের অধিনায়কের সম্মতিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান আয়োজকরা। তবে কার কার বিরুদ্ধে, কোন থানায় মামলা করা হয়েছে, সেটা প্রকাশ করা হয়নি।
মামলায় আসামীর তালিকায় চার-পাঁচ জনের নাম রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেন আয়োজকদের মুখপাত্র। প্রেস কনফারেন্সের এক পর্যায়ে দল দুটির অন্য সদস্যদের মধ্যে মিটমাট করে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সবার সামনেই নিজের দলের হয়ে ক্ষমা চান নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। তিনি বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনার জন্য আমি লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী। আমার দল থেকে যারা জড়িত ছিল, তাদের পক্ষ থেকেও আমি সরি, লজ্জিত। তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। যেহেতু আমরা একই পরিবারের সদস্য, তাই ইন্টারনালি সমাধান করেছি। এতে আমার দ্বিমত নেই।’
নির্মাতা দীপংকর দীপনের কথায় পাওয়া গেলো আক্ষেপের সুর। শিল্পজগতের আয়োজনে এমন ঘটনায় তিনি হতবাক হয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘কালকে (২৯ সেপ্টেম্বর) যে ঘটনা ঘটেছে, এটা আমাদের সংস্কৃতি সমাজের কোনও রকম প্রতিফলন নয়। আমাদের দুই দলে যে প্লেয়ার ছিল, আমরা মারামারিতে জড়াইনি। মাত্র চার-পাঁচ জন এসে আমাদের হামলা করেছে। কিছু মানুষ মারতে এসেছিল, বাকি সবাই ঠেকিয়েছিল। তারা সাপোর্টার জার্সি পরিহিত ছিল। আমাদের একজন প্লেয়ার মনোজকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আমার একজন অ্যাসিস্ট্যান্টকে টেনে নিয়ে মাটিতে ফেলে পাড়ানো হয়েছে। আমরা বিস্মিত হয়ে গেছি! এরা কারা? কোত্থেকে এলো? ঘটনার পরই কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি, এটার সুরাহা না করলে আমরা মাঠ ত্যাগ করবো না। তারা আমদের কাছে এক দিন সময় চেয়েছেন। তাদের ধন্যবাদ যে, এর মধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছেন।’
একই দলের অভিনেতা মনির খান শিমুল বলেছেন, ‘আমাদের পরিবারে কিছু ব্ল্যাকশিপ তৈরি হয়েছে। শুধু বাইরের পরিবেশে না, আমাদের ভেতরেও দু’চারটা ব্ল্যাকশিপ আছে। সবাই তো শিল্পী না, পারফর্মারও আছে অনেক। এখানে মারামারি হয়েছে বলবেন না। আমার ভাইয়েরা মার খেয়েছে। আমার দুষ্টু ভাইয়েরা ভদ্র ভাইদের মেরেছে। দুইটাই আমার ভাই। আমরা মারামারি করতে চাই না, খেলে জিততে চাই।’
সবশেষে প্রশ্ন, সিসিএলের বাকি খেলা তথা ফাইনাল কি অনুষ্ঠিত হবে? সেক্ষেত্রে কীভাবে নির্ধারণ করা হবে? এ বিষয়ে আয়োজকরা জানান, খেলা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। একটি উচ্চ পর্যায় থেকে অনুমতি আসার পর খেলা হতে পারে। এছাড়া সবগুলো দলের অধিনায়ককে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।