মধ্যরাতে দেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যস্ত সরকারি হাসপাতাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে দেখা মেলে টিভি নায়িকা তানজিন তিশার, সঙ্গে ছিলেন তার বোন নীপা। সচেতন নয়, তিশাকে চিকিৎসকরা পান অচেতন অবস্থায়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত পাঠানো হয় দেশের আরেকটি নামি বেসরকারি হাসপাতালে।
এটা ১৫ নভেম্বর দিবাগত রাতের খবর। ১৬ নভেম্বর সকাল থেকে খবরটি চাউর হলে ঘটনাটির সত্যতা কিংবা তিশাকে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া প্রসঙ্গে কেউ কিছু স্বীকার করছিলেন না। যারাই কথা বলছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করছিলেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম। 
তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে জানান, তানজিন তিশা গতরাতে (১৫ নভেম্বর) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে তার বোন তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হসপিটালে নিয়ে যায়। তারপর স্কয়ার হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন আছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানোর কথাও জানান নাসিম।
এদিকে বাংলা ট্রিবিউন অনুসন্ধানে অনেক খোঁড়াখুঁড়ির পরেও নাম প্রকাশে ইচ্ছুক কোনও সূত্র এগিয়ে আসেননি পুরো ঘটনাটি প্রসঙ্গে। যদিও প্রকাশ না করার শর্তে তথ্য মিলছে প্রায় একই রকমের, যা রহস্যের আঁধার আরও ঘন করে দেয়।
জানা গেছে, তিশা গতরাতে আত্মহননের চেষ্টা করেন। সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার ফলেই এখন তিনি চিকিৎসাধীন। তবে সেটি গলায় ফাঁস নিয়ে নয়, কিছু খেয়ে। ধারণা করা হচ্ছে, তিশা প্রচুর ঘুমের বড়ি খেয়ে মৃত্যুর পথে হাঁটার চেষ্টা করেছিলেন গতকাল রাতে।
যদিও এসব বিষয়ে জানতে তার পরিবারের সদস্যদের ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তিশার সহকর্মীরাও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বিব্রতবোধ করছেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিশার বেশ ক’জন সহকর্মী বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন, ঘটনাটি প্রেম ও প্রতারণার। মূলত প্রেম থেকে প্রতারণার আভাস পেয়ে তিশা অন্তর্মুখী হয়ে পড়েন ক্রমশ এবং বিভিন্ন সময় সুইসাইডাল অ্যাটেম্প নিয়ে চলছেন।
আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। তবে এবার সেটি ঢাকা মেডিক্যাল যাওয়ায় প্রকাশ্যে এলো দ্রুত। আরেকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, তানজিন তিশা তার প্রেমিকার পক্ষ থেকে সম্প্রতি এমন একটা আঘাত বা বিশ্বাসঘাতকতার আলামত পেয়েছেন, তাতেই তিনি মূলত ভেঙে পড়েছেন। সেখান থেকেই আত্মহননের এই চেষ্টা।
অভিযোগ রয়েছে, তানজিন তিশা তার এক সহ-অভিনেতার সঙ্গে প্রেমে ডুবে ছিলেন গেলো দেড় বছর। যার সঙ্গে প্রচুর নাটকও করেছেন এই সময়টাতে। সেই প্রেমে চরম আস্থাহীনতা তৈরি হয় শেষ ছয় মাসে। সেখান থেকেই তিশার এই পরিণতি।
যদিও তার শারীরিক পরিস্থিতি এখনও জানা যায়নি। সূত্র বলছে, তিশা এ যাত্রায় বিপদমুক্ত। 
