প্রাগ চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের আসরে বেস্ট সুপার শর্ট ফিল্মের পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশের আলোচিত ওয়ান শট ফিল্ম ‘নট আ ফিকশন’। নির্মাণ করেছেন শাহনেওয়াজ খান সিজু। এর আগে তিনটি অস্কার এবং দুটি কানাডিয়ান স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস কোয়ালিফাইং উৎসব ঘুরে আসা এই ছবিটি মূলত একটি ঐতিহাসিক দলীল, যা গত দুই যুগে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘটে যাওয়া অসংখ্য বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে।
চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগের কিনো পাইলোটু থিয়েটারে গত ২৩ থেকে ২৬ এপ্রিল আসর বসেছিল ফিল্মফ্রিওয়ের র্যাংকিং-এ পূর্ব ইউরোপের সেরা হিসেবে খ্যাত এই উৎসবের। এবারের আসরে জমা পড়া ৯৫টি দেশের ৩২৬৬টি ছবির মধ্যে অফিসিয়াল সিলেকশন পেয়েছিলো ৭২টি ছবি। যার মধ্যে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি ছিলো এই ছবিটি।
গত ২৬ এপ্রিল প্রাগ সময় রাত ৯টায় উৎসবের গালা নাইটে ঘোষণা করা হয় পুরস্কার বিজয়ীদের নাম। যেখানে বেস্ট সুপার শর্ট ফিল্মের অ্যাওয়ার্ড পায় ‘নট আ ফিকশন’। এই উৎসবের বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন কান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩-এর পাম দ’র স্পেশাল মেনশন ‘শর্ট ফিল্ম’ বিজয়ী নির্মাতা ও অভিনেত্রী গুন্নুর মার্টিনসডোত্তির স্লুটার এবং পোলিশ নির্মাতা এলজবিয়েতা বেঙ্কোভস্কা। যার ছবি ‘ওলেনা’ ২০১৩ সালের কান উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশন ছিলো।
এর মাধ্যমেই ইউরোপিয়ান প্রিমিয়ার হলো বাংলাদেশের আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত ছবি ‘নট আ ফিকশন’র।
পুরস্কারটি গ্রহণ করার জন্য প্রাগে গিয়েছিলেন নির্মাতা শাহনেওয়াজ খান সিজু। বর্তমানে বার্লিনে অবস্থানরত এই নির্মাতা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘এটাই আমার প্রথম অ্যাওয়ার্ড। যে কারণে এখনও ঘোর কাটছে না। কাফকার শহরে এসে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারছি এটাই গর্বের বিষয়। তবে এই পুরো জার্নিতে সবচেয়ে ভালো লেগেছে একজন বিচারকের কথা শুনে, তিনি বলেন আমার এই ছবিটির সাথে তীব্র প্রতিযোগিতা করছিলো ইউরোপেরই আরেকটি আলোচিত ছবি। যার বাজেট প্রায় ৫০ হাজার ইউরো অথচ অ্যাওয়ার্ড উইনার হিসেবে ১০০ ইউরোরও কম বাজেটে নির্মিত আমাদের ছবিটি। ছবিটি নির্বাচিত করার পেছনে গল্প ও নির্মাণের জোরকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন তারা।’
নির্মাতা জানান, আগামী ১ মাসের মধ্যেই অনলাইনে মুক্তি পাবে ‘নট আ ফিকশন’।
নির্মাতা সিজুর সঙ্গে ‘নট আ ফিকশন’র সহ-প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন চলচ্চিত্র সমালোচক ও সাংবাদিক সাদিয়া খালিদ রীতি ও লাইলি বেগম। ছবিটির গল্প এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন মোকাররম রানা। এছাড়া অভিনেতা হিসেবে কাজ করেছেন উদয়ন রাজীব, নাঈমুল আলম মিশু, ঐশিক সামি আহমেদ, রুদ্রনীল আহমেদ, জাওয়াদ সৌধ ও মিথুন। ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন আহসান স্মরণ ও সৈয়দ তামুর হাসান।
ছবিটির নির্বাহী প্রযোজনায় ছিলেন মোঃ আসিফ, সাউন্ড ডিজাইন করেছেন রিপন নাথ ও রনি সাজ্জাদ, কালার করেছেন রাশাদুজ্জামান সোহাগ, সম্পাদনায় ছিলেন লিওন রোজারিও ও তানভীর আহমেদ রনি। এছাড়া সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছে মোঃ আমান খান ও আল আমিন সুমন।