বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানাধীন এলাকায় হওয়া এক হত্যাচেষ্টা মামলায় নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আসনা হাবিব ভাবনা, চিত্রনায়ক জায়েদ খানসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে।
মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন ও অজ্ঞাতনামা তিন-চারশো জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেছেন এনামুল হক নামের একজন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করার জন্য বিপুল অর্থ জোগান দিয়েছেন এসব তারকারা, মামলায় এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় স্বভাবতই শোবিজ অঙ্গনের সকলের কপালে পড়েছে ভাঁজ। তারকাদের নামে ঢালাওভাবে এ মামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শোবিজ অঙ্গনের অন্যান্য ব্যক্তিত্বরা।
এর মধ্যে অন্যতম অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম। তিনি জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা।
আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!’
হয়রানিমুলক মামলার প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এরপর বলেন, ‘ঢালাওভাবে মামলায় ফেলে, একের পর এক মামলা দিয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করা এবং তাদের জীবনকে নিরাপত্তাহীনতার চাদরে মুড়ে দেওয়া, এটা অদ্ভুত রকমের সংস্কৃতি। এর মধ্যে ইরেশ যাকেরকেও মামলার আসামি করতে দেখলাম। অথচ ইরেশ যাকের আমাদের সঙ্গে সেই জুলাই মাস থেকে রাস্তায়। এভাবে মামলা দেওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ দরকার।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকারের উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা, নিরুৎসাহিত করা। যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যিনি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, সেটার বিধান থাকতে হবে।’
বলা প্রয়োজন, মামলায় আসামি করা হয়েছে নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, সুবর্ণা মোস্তফা, রোকেয়া প্রাচী, আসনা হাবিব ভাবনা, সোহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন, জ্যোতিকা জ্যোতি, চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, আজিজুল হাকিমসহ ১৭ জন অভিনয়শিল্পীকে।