উপমহাদেশের সেরা গায়িকা কে—এই প্রশ্নের জবাবে অধিকাংশ শ্রোতাই নির্ভাবনায় যে নামটি প্রথমে উচ্চারণ করবেন, সেটা লতা মঙ্গেশকর। ভারতের এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সংগীতের এমন এক অধ্যায় রেখে গেছেন, তাকে বলা হয় সুরের সরস্বতী। বিভিন্ন ভাষায় প্রায় ৩০ হাজার গান গেয়েছেন তিনি, যা এক বিরল নজির।
কালের সীমানাজয়ী এই শিল্পী দু’বছর আগে এই দিনে (৬ ফেব্রুয়ারি) মারা গেছেন। কিন্তু চলে গিয়ে যারা আরও প্রবলভাবে মিশে থাকেন মানুষের মাঝে, শিল্প-সংস্কৃতির অস্তিত্বে, লতা মঙ্গেশকর তাদেরই একজন। প্রয়াণের দিনে তাই তার সম্পর্কে কিছু জানা-অজানা তথ্যে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ।
দু’বার নামকরণ
লতা হিসেবে পরিচিত বা বিখ্যাত হলেও জন্মের পর তার এই নাম ছিল না। তার নাম ছিল হেমা। বাবা দিনানাথ মঙ্গেশকর ছিলেন থিয়েটারের অভিনেতা ও ক্লাসিক্যাল সংগীতশিল্পী। তার একটি নাটকের (ভাও বন্ধন) জনপ্রিয় চরিত্রের নাম ছিল লতিকা। সেখান থেকেই পরে কন্যার নাম রাখেন লতা।
শুনতেন না নিজের গান
হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য হলেও এটা সত্য। লতা মঙ্গেশকর নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলে গেছেন, নিজের গাওয়া গান তিনি কখনও শুনতেন না। কারণ তার মনে হতো, গান শুনলে হয়তো তাতে ‘হাজারো ভুল’ পাবেন!
স্বত্বের দাবি তোলা প্রথম গায়িকা
পুরুষ-শাসিত সমাজের প্রভাব শিল্পাঙ্গনেও প্রবল। যার ফলে প্রায়শই বঞ্চনার শিকার হন নারী শিল্পীরা। লতা মঙ্গেশকর হলেন প্রথম নারী শিল্পী, যিনি রয়্যালটি ও উপযুক্ত পারিশ্রমিকের দাবি তুলেছিলেন। প্রথম দিকে তিনি একটি গান গেয়ে মোটে ১০০ রুপি পেতেন। পরবর্তীতে এই অঙ্ক অনেক দূর এগিয়েছিল। সেই সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের গায়িকারাও মোটা অঙ্কের সম্মানি পেতে শুরু করেন।
প্রেম ছিল, বিয়ে নয়
কম-বেশি সবার জানা, দীর্ঘ জীবনে বিয়ে করেননি লতা মঙ্গেশকর। তবে প্রেম এসেছিল তার জীবনেও। একটি অপূর্ণ ভালোবাসা থেকেই তার আমৃত্যু অবিবাহিত থাকার ব্রত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও দুঙ্গারপুরের মহারাজা রাজ সিংয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু লতা রাজপরিবারের সন্তান না হওয়ার কারণে বিয়েটা হয়নি।
অ্যালবার্ট হলে প্রথম
লন্ডনের বিখ্যাত রয়েল অ্যালবার্ট হলে প্রথম ভারতীয় হিসেবে পারফর্ম করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। সেটা ১৯৭৯ সালে। এটি ভারতের বাইরে তারও প্রথম কনসার্ট ছিল।
সূত্র: বলিউড বাবল