X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

গরু ইস্যুতে নমনীয় মোদি সরকার

আশীষ বিশ্বাস, কলকাতা
০৩ জুন ২০১৭, ০০:৩৭আপডেট : ০৩ জুন ২০১৭, ০০:৩৭

নরেন্দ্র মোদি কয়েকদিনের কিছু সরকারি ঘোষণা ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যে মনে করা হচ্ছে, গবাদিপশু কেনাবেচার ব্যাপারে ২৬ মে’র বিধিনিষেধ ও শর্তে দেশব্যাপী অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে কিছুটা হলেও নমনীয় অবস্থানে এসেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। তবে পশ্চিমবাংলার রাজধানী কলকাতার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাজ্যের অভিজ্ঞমহলের ধারণা, সৃষ্ট রাজনৈতিক এ বিতর্কের সমাধান ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এত সরলভাবে করতে মোটেই আগ্রহী নয়।
নরেন্দ্র মোদি বা বিজেপি এ বিষয়ে সরাসরি এখনও কিছু না বলেও ওই দলের সহায়ক ও সমর্থক গোষ্ঠী এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো গরু রক্ষা করার জন্য নতুন কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। রাজস্থান সরকারের দাবি, গরুকে জাতীয় পশু হিসেবে এখনই ঘোষণা করা হোক।

পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশু কেনাবেচা কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নিয়মগুলোর বিরোধিতা করেছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এতে রাজ্যে যারা গরুর মাংস খান, তাদের অসুবিধা হবে। রাজ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে মোট জনসংখ্যার কমবেশি এক-তৃতীয়াংশ। মুখ্যমন্ত্রীর আরেকটা আপত্তি, কেন্দ্র এই ঘোষণা করেছে রমজান মাসে।

তার বক্তব্য, এসব বিষয়ে দেশের সংবিধানে রাজগুলোর ক্ষমতা পরিস্কার করে বলা আছে। কেন্দ্রের প্রয়োজনে এ ব্যাপারে আইনের সাহায্য নেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই কেরালা বামপন্থী সরকারের পক্ষে দেশের বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলোর কাছে আবেদন করেন, একযোগে কেন্দ্রের নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হোক। কর্নাটক, তামিল নাড়ু, ও বাংলা ছাড়াও উত্তর পূর্বে মিজোরাম ও মেঘালয়েও কেন্দ্র বিরোধী প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

মূলত, মুসলিম ও খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর পক্ষে।

কী বলা হয়েছে কেন্দ্রের নতুন নিয়মে?

পশুহত্যার জন্য কোনও গবাদিপশু কেনাবেচা চলবে না। আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার এবং রাজ্য সীমানার ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও পশু বাজার করা যাবে না। রাজ্যের বাইরে পশু নিয়ে যেতে হলে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। একবার কোনও পশু নিলে ছয় মাসের মধ্যে সেটি বিক্রি করা যাবে না। পশু কেনার পরে অন্তত তিনটি সরকারি দফতর থেকে ছাড়পত্র রাখতে হবে। শুধু গরু নয়, পশু তালিকায় রয়েছে- মহিশ, বলদ, উট, বকনা বাচুর ও বাচুর ছাড়া গরু।

এর ফলে শুধু গরুর মাংস বিক্রি করাই কঠিন হয়ে পড়বে তা নয়, ভারতের প্রায় ৩০ কোটি টাকার চামড়া রফতানি শিল্পও বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মসংস্থান হারাবে হাজার হাজার মানুষ।

স্বাভাবিকভাবেই এর বিরুদ্ধে একটি মামলাও রজু হয়েছে। মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে এক মাসের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলো বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে একটি বড় আন্দোলন শুরু করতে চায়। এ কারণেই বিষয়টি সহজে মিটবে না।

তাই মোদি সরকার আপাতত কিছু হলেও পেছনে হটেছে (ব্যাকফুটে)। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কেন্দ্র আদৌ গোমাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার ঘোষণা করেনি। আর রাজ্যের কোনও অধিকারও লঙ্ঘন হয়নি।

কিন্তু এই আশ্বাসেও সংখ্যালঘুদের আশঙ্কা দূর হয়নি। তার একটা বড় কারণ, বিজেপি সমর্থনকারী আরএসএস এ নিয়ে বেশ কিছু সংগঠন এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে সমর্থন তো করেইনি, বরং আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে চেয়েছে গরু সংরক্ষণের ব্যাপারে। 

দেখা যাক, আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।

/এসএমএ/

সম্পর্কিত
‘বাংলাদেশ ও ভারত একই লক্ষ্যে এগোচ্ছে’
ভারতের ভোটে বিজেপির পক্ষে কি ‘৪০০ পেরোনো’ আদৌ সম্ভব?  
মিয়ানমারের ৩৮ শরণার্থীকে ফেরত পাঠালো ভারত
সর্বশেষ খবর
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ যুবকের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা
তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ যুবকের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা
‘বাংলাদেশ ও ভারত একই লক্ষ্যে এগোচ্ছে’
‘বাংলাদেশ ও ভারত একই লক্ষ্যে এগোচ্ছে’
এবার ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে সরব কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
এবার ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে সরব কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
প্রত্যেক বস্তা থেকে সরানো হয় চাল, ডিলারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা
প্রত্যেক বস্তা থেকে সরানো হয় চাল, ডিলারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি