X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

চতুর্থবারের মতো জার্মান চ্যান্সেলর হচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল

বিদেশ ডেস্ক
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:০৪আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২২:২২

টানা চতুর্থবারের মতো জার্মান চ্যান্সেলর হতে যাচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। জনমত জরিপের ফল বলছে, নির্বাচনে তার জয়ের বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকতে পারেন প্রতিদ্বন্দ্বী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’র নেতা ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাবেক সভাপতি মার্টিন শুলজ। এছাড়া অভিবাসী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী এএফডি’ও নির্বাচনে আশাতীত ফল পেতে পারে। জার্মানিতে এই দলটিকে নব্য-নাৎসীদের আশ্রয়স্থল মনে করা হয়। নির্বাচনের একদিন আগে প্রকাশিত জনমত জরিপে উঠে এসেছে এমন তথ্য। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

আঙ্গেলা ম্যার্কেল

২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। এদিন ৬ কোটি ১৫ লাখ ভোটার তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ম্যার্কেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং সহযোগী ক্রিস্টিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ) পেতে যাচ্ছে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি) পাবে ২২ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। এএফডি পেতে পারে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট।

নির্বাচনে সহযোগী বাভারিয়া রাজ্যের ক্রিস্টিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন (সিএসইউ)-এর সমর্থন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে ম্যার্কেলের ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)। তবে তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হতে পারে। সেক্ষেত্রে আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে কোনও ছোট দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে।

চতুর্থবারের মতো জার্মান চ্যান্সেলর হচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল

মূলত নেতৃত্বের ক্যারিশমা দেখিয়েই দেশজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নিজেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নে এখনও পর্যন্ত তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ নেই। তার ব্যক্তিত্বের বিপরীতে সোশ্যাল ডেমোক্রেট পার্টি থেকে সেভাবে কোনও নেতৃত্ব বিকশিত হয়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত হয়তো ম্যার্কেলের ওপরই আস্থা রাখবেন জার্মানরা।

২০০৫ সালের ফেডারেল নির্বাচনে প্রথমবারের মতো চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। সেই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিলো ৭৭.৭ ভাগ। কিন্তু হঠাৎই এর পরের নির্বাচনগুলোতে কমে যায় উপস্থিতির হার। ২০০৯ সালের ফেডারেল নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিলো ৭০.৮ শতাংশ। ২০১৩ সালে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১.৫ শতাংশে।

প্রায় সব জনমত জরিপেই শেষ মুহূর্তেও এগিয়ে আছে ম্যার্কেলের জোট। ফলে তার চ্যান্সেলর হওয়ার সম্ভাবনাও বেশ প্রবল। তবে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই সম্ভাবনা প্রবল আকারে দেখা দেওয়ায় এবার ভোটার উপস্থিতি আরও কম হতে পারে।

চতুর্থবারের মতো জার্মান চ্যান্সেলর হচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল

জরিপে দেখা গেছে, এ বছর অন্তত ৩৪ শতাংশ ভোটারই ভোট দেয়ার ব্যাপারে দ্বিধায় আছেন। অর্থাৎ, এই জরিপ সঠিক হলে এবারের উপস্থিতি হতে পারে ৬৬ শতাংশের কাছাকাছি। ভোট দিয়ে আর লাভ কি, ম্যার্কেল তো নির্বাচিত হয়েই যাচ্ছেন -  এমন চিন্তাভাবনা ভোটারদের নির্বাচনবিমুখ করে তুলতে পারে। তবে এমন চিন্তাভাবনার বিপদ রয়েছে। প্রথমত, জরিপে যে সবসময় মূল নির্বাচনের ফলের প্রতিফলন ঘটে না ব্রেক্সিট ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন তার অন্যতম বড় উদাহরণ।

মূল আশঙ্কা এএফডি

এবারের নির্বাচনকে গত কয়েকবারের চেয়ে আলাদা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে কট্টর ডানপন্থি অলটারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ড – এএফডির উত্থানকে। প্রতিষ্ঠার মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে ২০১৩ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাঁচ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়ে সাড়া ফেলে দেয় এই দল। ২০১৭ সালে আরও পরিপক্ব হয়েছে দলটি। এমনকি প্রথম তিন দলের মধ্যে এএফডি’র চলে আসার শঙ্কাও দেখছেন অনেকে। অভিবাসী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী এই দলটিকে নব্য-নাৎসীদের আশ্রয়স্থল মনে করা হয়।

এএফডি নিয়ে কেন শঙ্কা?

জার্মানির ভোটারদের দুটি করে ভোট দিতে হয়। একটি সরাসরি প্রার্থীকে এবং অপরটি পার্লামেন্টে যে দলকে তাঁরা দেখতে চান, সেই দলকে। আর এই দ্বিতীয় ভোট নিয়েও চলছে আলোচনা। ২০১৩ সালের সবশেষ নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল যথাক্রমে সিডিইউ এবং এসপিডি। তৃতীয় স্থান দখল করেছিলো বাম দল। তবে এবার আগস্টের এক জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাম দল, সবুজ দল এবং মুক্ত গণতন্ত্রী দল – এফডিপি’র চেয়ে কয়েক শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছে কট্টর ডানপন্থি দল - এএফডি।

এবারের নির্বাচনেও কোন দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ম্যার্কেল এরই মধ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এএফডির সঙ্গে কোন ধরনের কাজ করবেন না তাঁরা। বাম দলের সঙ্গেও কাজ না করার কথা বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন ম্যার্কেল। ফলে তার সামনে এসপিডি এবং সবুজ দল ছাড়া তেমন বিকল্পও থাকছে না সরকার গঠনের জন্য। জরিপে কোন আসনেই এএফডি’র প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা দেখা যায়নি। তবে মোট ভোটে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তাদের পার্লামেন্টে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল হলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সভাপতিত্ব এবং জার্মানির ভবিষ্যত নীতিনির্ধারণেও প্রভাব রাখার ক্ষমতা থাকবে কট্টরপন্থি দলটির হাতে। ফলে চ্যান্সেলর কে হচ্ছেন, তা নিয়ে খুব একটা আগ্রহ এই মুহূর্তে না থাকলেও জার্মানি ও ইউরোপের ভবিষ্যত রক্ষার জন্য হলেও সব ভোটারকে ব্যালটে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানানোর আহ্বান জানাচ্ছেন সব দলের নেতাকর্মীরা।

সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ, ডয়চে ভেলে।

/এমপি/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে সরব ইউরোপ
জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্র, ২ ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা আটক
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
সর্বশেষ খবর
পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগপিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট