বন্দুকধারীদের গুলিতে পাঁচ বাঙালি নিহতের ঘটনায় ভারতের আসামে দলীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এরইমধ্যে আসামে পৌঁছেছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন তারা। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
১ নভেম্বর রাতে আসামের তিনসুকিয়া জেলার একটি গ্রামে একই পরিবারের তিনজনসহ মোট পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এ ঘটনায় আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাকে দায়ী করা হলেও ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে উলফা।
হত্যাকাণ্ডের পর মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই অতি কঠিন সময়ে প্রাণ দেওয়া প্রতিটি বাঙালি পরিবারের পাশে রয়েছে তৃণমূল।
এই ঘটনার দায় নিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের পদত্যাগ দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলটির নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, হিংসার এই সংস্কৃতি গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে প্রবলভাবে। আসামে গরিব মানুষগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এ ধরনের বৈষম্য বরদাস্ত করা হবে না। সবাইকে নিয়ে বাঁচাই এ রাজ্যের ঐতিহ্য।
আসামে পাঠানো মমতার প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মমতা বালা ঠাকুর, নাদিমুল হক ও মহুয়া মৈত্র।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আসামে বাঙালি হত্যার খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মমতা। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দলীয় কর্মীদের প্রোফাইল ছবি ‘কালো’ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। নিজেও ফেসবুক-টুইটারে ছবি কালো করে দেন।
উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর রাত ৮টা নাগাদ আসামের বিসনিমুখ গ্রামে প্রবেশ করে বন্দুকধারীরা। এরপর পাঁচ বাঙালিকে ঘর থেকে ডেকে বের করা হয় এবং তাদের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নিয়ে গিয়ে গুলি করা হয়। খুনিরা সবাই সেনাসদস্যদের মতো পোশাক পরেছিল। নিহতদের মধ্যে শ্যামল বিশ্বাস (৬০), অনন্ত বিশ্বাস (১৮) এবং অবিনাশ বিশ্বাস একই পরিবারের সদস্য। নিহত অন্য দুইজন হলেন- সুবল দাস (৬০) এবং ধনঞ্জয় নমশূদ্র (২৩)। তারা সবাই পেশায় দিনমজুর ছিলেন।
বিসনিমুখ গ্রামটি বাঙালি অধ্যুষিত। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষিকাজ বা দিনমজুরির সঙ্গে যুক্ত। সূত্র: এনডিটিভি, সাউথ এশিয়ান মনিটর।