X
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২

প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি দেখলো মানব জাতি

বিদেশ ডেস্ক
১০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:২১আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৫১

মহাকাশে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি তুলতে সমর্থ হয়েছেন নভোচারীরা। ফলে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই রহস্যময় ‘দানব’র ছবি দেখলো মানব জাতি। এটি আকারে চার হাজার কোটি কিলোমিটার, পৃথিবীর আয়তনের তুলনায় প্রায় ৩০ লাখ গুণ। বিজ্ঞানীরা একে ‘দানব’ বলে অভিহিত করছেন।

প্রথমবারের মতো কৃষ্ণগহ্বরের ছবি দেখলো মানব জাতি মহাকাশের এক অনন্ত বিস্ময় এই ব্ল্যাকহোল। ব্ল্যাকহোলকে কৃষ্ণবিবর, কৃষ্ণগহ্বর ইত্যাদি বলা হয়। জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি অনুসারে, কৃষ্ণগহ্বর মহাকাশের এমন একটি বিশেষ স্থান, যেখান থেকে কোন কিছু, এমনকি আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। ব্ল্যাকহোল এমন একটি জায়গা, যেখানে খুবই অল্প জায়গায় অনেক অনেক ভর ঘনীভূত হয়ে রয়েছে। এটা এতই বেশি যে কোন কিছুই এর কাছ থেকে রক্ষা পায় না, এমনকি সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন আলোও।

বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর আটটি স্থান থেকে খুবই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ দিয়ে এর ছবি তোলা হয়। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৫০০ মিলিয়ন ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। বুধবার অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল লেটার নামে এক জার্নালে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়।

এই পরীক্ষার নেতৃত্ব দেওয়া নেদারল্যান্ডসের রাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেইনো ফাল্ক বলেন, এম৮৭ নামের গ্যালাক্সিতে এই কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান মিলেছে। তিনি বলেন, এর আয়তন আমাদের পুরো সৌরজগতের চেয়ে বড়।

তিনি জানান, এর ভর সূর্যের চেয়ে ৬৫০ গুণ বেশি। আমাদের ধারণা, এটিই সবচেয়ে ভারি কৃষ্ণগহ্বর। এটা একটা দানব।

প্রকাশিত ছবিতে একটি উজ্জ্বল আগুনের বলয় দেখা যায়। অধ্যাপক ফালক বলেন, এটি অন্ধকার এক গর্ত ঘিরে রেখেছে। এই গর্তে প্রচুর গ্যাস পতিত হওয়া উজ্জ্বল হয়ে ‍উঠেছে। ওই অন্ধকার গর্তই এর কেন্দ্র।

গবেষক দলের সদস্য ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ড. জিরি ইউনসি বলেন, এই ছবিটি যেন বিজ্ঞানীদের তাত্ত্বিক ধারণা ও হলিউডের নির্মাতাদের কল্পনারই প্রতিফলন। কৃষ্ণগহ্বর সাধারণ বস্তু দ্বারা গঠিত হলেও এতে সময় ও স্থানের অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে।

নক্ষত্র যখন জ্বালানি পুড়িয়ে শেষ করে ফেলে, তখন তা সংকুচিত হতে থাকে। সাধারণ গ্যালাক্সিগুলোর মাঝে অবস্থানরত বড় বড় নক্ষত্র তাদের বিবর্তনের সর্বশেষ পরিণতিতে ব্ল্যাকহোল সৃষ্টি করে। নক্ষত্রগুলো অনেক বেশি সংকুচিত হয়েই ব্ল্যাকহোলের জন্ম দেয়।

এই ব্ল্যাকহোলের ভেতরে ঢুকে নক্ষত্রসহ যাবতীয় মহাজাগতিক বস্তু অদৃশ্য হয়ে যায়। সেগুলো আসলে কোথায় যায় সেটিই রহস্যময়। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মতো অন্য কোনও জায়গায় যাওয়া যায় কিনা, সেটি নিয়েও আলোচনা আছে।

গাণিতিক তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৮২ সালে প্রথম একটি ছবি আঁকা হয় কৃষ্ণগহ্বরের। জঁ পিয়ের ল্যুমিয়ের ছবিটি এঁকেছিলেন। তবে সেটি ছিল কল্পনাপ্রসূত। কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে শেষ বয়সে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক স্টিফেন হকিং নতুন একটি তথ্য দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ধ্রুপদি তত্ত্ব অনুযায়ী কৃষ্ণগহ্বর থেকে কোনও কিছুই বেরিয়ে আসার উপায় নেই। কিন্তু কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী, কিছু শক্তিও বেরিয়ে যেতে পারে। হকিংয়ের এমন মন্তব্যের পর কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

/এমএইচ/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা
তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা
আশুরা উপলক্ষে আজ বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ
আশুরা উপলক্ষে আজ বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ
রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে জনতা ব্যাংকের ডিজিএম নিখোঁজ
রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে জনতা ব্যাংকের ডিজিএম নিখোঁজ
ঋতুপর্ণা-আফঈদাদের পেশাদার মনোভাবে খুশি বাটলার
ঋতুপর্ণা-আফঈদাদের পেশাদার মনোভাবে খুশি বাটলার
সর্বাধিক পঠিত
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল