ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে গত রবিবার থেকে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর সাত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে জাতিসংঘ। রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কঙ্গো সরকারের সহায়তায় হতাহতের এই সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে বলে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) জানিয়েছে তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টেফানি ডুজারিক জানিয়েছেন, রুয়ান্ডা সমর্থিত এম ২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোর গোমা দখল করার পর শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত দু হাজার ৮০০ মানুষ আহত হয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বিদ্রোহীরা সাউদ কিভু অঙ্গরাজ্যের রাজধানী বুকাভোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
গত শতাব্দীর ৯০ এর দশক থেকে চলমান সংঘর্ষের সূত্রপাত হলেও, সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিকট অতীতের ভয়াবহতম ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
তুতসি জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত এম ২৩ বিদ্রোহীদের দাবি, তারা সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় লড়াই করছে। ওদিকে, কঙ্গো সরকারের অভিযোগ, দেশটির পূর্বাঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের বিশাল ভাণ্ডার দখলে নেওয়ার জন্য এম ২৩ কে লেলিয়ে দিয়েছে রুয়ান্ডা।
সংঘর্ষের তীব্রতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত সমাধান না হলে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন ডুজারিক।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির সূত্রে জানা গেছে, বিদ্রোহীদের অগ্রগতি প্রতিহত করতে গোমা ও বুকাভোর মধ্যবর্তী সড়কে প্রতিরক্ষা লাইন গড়ে তুলেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এছাড়া শত শত বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবক বুকাভুর সুরক্ষা নিশ্চিতে অংশ নিচ্ছেন।
সাম্প্রতিক সংঘাতে কঙ্গোর মানবিক সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মকর্তা শেলি থ্যাকরাল জানিয়েছেন, গোমার বাসিন্দারা খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের অভাবে ভুগছেন।
চলতি বছরের শুরু থেকে ইতোমধ্যেই চার লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা।
ডিআর কঙ্গো আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এর আয়তন পশ্চিম ইউরোপের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের সমান। নয়টি দেশের সঙ্গে এর সীমান্ত রয়েছে। ১৯৯০ এর দশকে দেশটির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে একাধিক প্রতিবেশী দেশ জড়িয়ে পড়েছিল। ইতিহাসে এই ঘটনা আফ্রিকার বিশ্বযুদ্ধ নামে পরিচিত।