দক্ষিণ আফ্রিকায় শেতাঙ্গ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত অপরাধের তদন্তে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পরবর্তী আমলের শাসকদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিচারিক কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার কার্যালয় থেকে এ কথা বলা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রামাফোসার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, বর্ণবাদী শেতাঙ্গ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত অপরাধের তদন্তে রামাফোসার পূর্ববর্তী প্রশাসনগুলো হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি চান রামাফোসা। তাই সত্য উন্মোচনে কমিশন গঠনের আদেশ দিয়েছেন।
বর্ণবাদী সরকারের আমলে রাজনৈতিক হত্যা ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে বহু বছর ধরে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, গণতান্ত্রিক সরকারও ওইসব অপরাধের তদন্তে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেয়নি।
১৯৯৪ সালে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গদের শাসন অবসানের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় গঠিত হয় ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন’ (টিআরসি)। এর উদ্দেশ্য ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য প্রকাশ করা। এই কমিশন বহু ঘটনার তালিকা তদন্তের জন্য রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলিদের কাছে হস্তান্তর করলেও অধিকাংশ মামলাই কার্যকরভাবে অনুসরণ করা হয়নি।
চলতি বছর জানুয়ারিতে, প্রিটোরিয়ার একটি আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় ২৫ জন ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার প্রায় ৯০ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, কমিশনের প্রতিবেদন আসার আগ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলাটি স্থগিত রাখতে আদালতের কাছে আবেদন করবে সরকার। তবে কমিশন কাজ শুরু বা শেষ করতে কত সময় নেবে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে, ভুক্তভোগীদের পরিবারকে সহায়তা করা এনজিও, দ্য ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রামাফোসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও ক্ষতিপূরণে বিলম্ব নিয়ে সমালোচনা করেছে।
তাদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, মধ্যস্থতায় না গিয়ে গঠন হতে যাওয়া কমিশনের তদন্তের ওপর সব সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখলেন রামাফোসা। অথচ অধিকার ক্ষুণ্ন এবং ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের কোনও সাংবিধানিক এখতিয়ার ওই প্রতিষ্ঠানের নেই।