যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্ক আরও ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে একদিকে বৈশ্বিক ইস্পাত প্রস্তুতকারকদের ওপর চাপ যেমন আরও বৃদ্ধি পাবে, তেমনি ট্রাম্প প্রশাসনের শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
পেনসিলভিনিয়া অঙ্গরাজ্যে শুক্রবার (৩০ মে) এক জনসভায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইসপাত আমদানির ওপর শুল্ক আমরা আরও ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশতে উন্নীত করছি। আমাদের এই পদক্ষেপের ফলে মার্কিন ইস্পাত শিল্পখাতের নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি পাবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফেরার পর ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প, যা মার্চ থেকে কার্যকর হয়। এর আগে কানাডা থেকে ইস্পাত আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেও তিনি শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করেছিলেন।
এদিকে, শুক্রবার জাপানের নিপ্পন স্টিল এবং ইউএস স্টিলের মধ্যে এক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, ১৪৯ কোটি ডলারের এই চুক্তির কারণে মার্কিন ইস্পাত শিল্পের কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।
পেনসিলভিনিয়া জনসভার কিছুক্ষণ পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জানান, অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপরও বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বুধবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
তার এই ঘোষণার পরই ইস্পাত প্রস্তুতকারক মার্কিন প্রতিষ্ঠান ক্লিভল্যান্ড ক্লিফস ইনকের শেয়ারমূল্য প্রায় ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনিয়োগকারীদের ধারণা, বাড়তি শুল্কের কারণে তাদের মুনাফা বৃদ্ধি পাবে।
ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণার পর দ্রুতই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কানাডার ব্যবসায়ীদের সংগঠন চেম্বার অব কমার্স। তাদের মতে, এই বাড়তি শুল্ক উত্তর আমেরিকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পরিপন্থি।
মার্কিন প্রশাসনের পদক্ষেপ অন্যায্য এবং মোটেই বন্ধুসুলভ নয় বলে মন্তব্য করেছে অস্ট্রেলীয় সরকার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাদে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইস্পাত আমদানিকারক দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মার্কিন মুলুকে প্রায় ২৬ লাখ ২০ হাজার টন স্টিল আমদানি করা হয়। ফলে নতুন শুল্কের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শিল্প ও ভোক্তারা উভয়ের ওপরই বাড়তি চাপ পড়তে যাচ্ছে।