X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বর্ণ উত্তোলন

বিদেশ ডেস্ক
২১ নভেম্বর ২০২১, ১৯:০৯আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১৯:০৯

‘বনের পশুর মতো গুহায় প্রবেশ করি। ক্লান্ত হয়ে গেলে একটু বিশ্রাম নেই।’ এভাবেই স্বর্ণ উঠাতে গিয়ে নিজের পরিশ্রমের কথা বলছিলেন আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর হার্ডি বিসিমওয়া।

২২ বছরের বিসিমওয়া দেশটির সাউথ কিভু প্রদেশের লুহিহির একটি খনিতে নানা কসরত করে স্বর্ণ আহরণের চেষ্টা করেন। মাথায় বসানো থাকে টর্চ লাইট। টর্চের আলোয় চলে খনন কাজ। নেই কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বরং রয়েছে জীবন হারানোর মারাত্মক ঝুঁকি।

কঙ্গোর ওই অঞ্চলটিতে স্বর্ণ উত্তোলনের ইতিহাস বেশি দিনের নয়। দুই বছর আগে স্থানীয়রা সেখানে একটি পাহাড় আবিষ্কার করে, যে পাহাড়ের নিচে গুপ্তধনের মতোই স্বর্ণ লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করা হয়।

এমন ধারণায় স্থানীয়রা ওই পাহাড়কে ঘিরে ভিড় করতে থাকে। কাঠ আর ত্রিপলের ঘর বানিয়ে এখানে প্রায় ২০০ পরিবার বাস করছে।

স্বর্ণ উত্তোলনের বিষয়টি কিন্তু অত্যন্ত ভয়াবহ। কেননা, স্থানীয় গোত্রগুলোর মধ্যে এ খনিজ সম্পদ নিয়ে কোন্দল তো আছেই, সেই সঙ্গে গুহায় শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা ডিডিয়ের সিযা-র একজন প্রতিনিধি জানান, গত পাঁচ মাসে লুহিহিতে সাতজন মারা গেছেন। তাদের কেউ কেউ গোত্র-কোন্দলে আর কেউ কেউ গুহার ভেতরে শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।

এতসব ঝুঁকি আর নিরাপত্তাহীনতার পর খুব বেশি কিছু যে পাওয়া যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। সর্বশেষ সাত বারের চেষ্টায় বিসিমওয়া একবার স্বর্ণ পেয়েছিলেন। তবে আশা ছাড়ছেন না তিনি। বলছেন, ‘ঈশ্বরের কৃপা থাকলে আমি স্বর্ণ পাবো, যা দিয়ে আমার পরিবারকে নিয়ে চলতে পারবো।’

মধ্য-আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে স্বর্ণ ও কোবাল্টসহ প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে। তারপরও দেশের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নীচে। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, তাদের দৈনিক আয় দুই ডলারেরও কম।

তাদেরই একজন বেরটিন মুরুহা। ১৯ বছরের মুরুহা ২০১৯ সালের স্কুলের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তিনি এখন খনি থেকে স্বর্ণ উত্তোলনের চেষ্টা করেন। গত এক বছরের চেষ্টায় কিছুটা স্বর্ণ পেয়েছেন মুরুহা।

এদিকে এতো পরিশ্রমের পর যে সোনা হাতে তারা পান তারও আবার ন্যায্য দাম পান না। স্থানীয় কারবারিদের কাছে প্রতি কেজি সোনা ৪৫০ ডলারে বিক্রি করতে হয়, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় যা অনেক কম। আর কয়েক গ্রাম সোনার দাম যে কত কম তা সহজেই অনুমান করা যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বর্ণ তোলায় নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন তাই খুব একটা হয় না।

লুহিহির বাসিন্দা সিফা নাশোবোলে বলেন, ‘আমরা যে আসলে স্বর্ণ উত্তোলন থেকে লাভবান হচ্ছি তা কিন্তু নয়। কারণ, সব স্বর্ণ চলে যায় কারবারিদের কাছে।’ সূত্র: ডিডাব্লিউ।

/এমপি/
সম্পর্কিত
কঙ্গোতে হামলাকারী এম২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত রুয়ান্ডা: জাতিসংঘ
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে পদদলিত হয়ে ২৯ শিক্ষার্থী নিহত
মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বিমান বাহিনীর ১২৫ সদস্য
সর্বশেষ খবর
গ্রেনাডাতেও ওয়েবস্টার-ক্যারির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো অস্ট্রেলিয়া
গ্রেনাডাতেও ওয়েবস্টার-ক্যারির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো অস্ট্রেলিয়া
টিভিতে আজকের খেলা (৪ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৪ জুলাই, ২০২৫)
হাসপাতালের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু
হাসপাতালের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি