সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মুদ্রাস্ফীতি ও অবৈধ অভিবাসন কমাতে কাজ করছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, গত ৭২ ঘণ্টায় বিশ্ব যে দৃশ্য দেখেছে তা একটি কমনসেন্স বিপ্লব। তার প্রশাসন ডিরেগুলেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি উন্নয়নের দিকে নজর দেবে। একই সঙ্গে তিনি তার প্রথম মেয়াদের কর হ্রাস নীতির সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দেন।
ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পৃথিবীর সবচেয়ে বড় তেল ও গ্যাস মজুদ রয়েছে এবং আমরা তা ব্যবহার করব। এটি শুধু পণ্য ও পরিষেবার খরচ কমাবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রকে একটি উৎপাদনশীল শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত করবে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের সময় দাভোসের প্রধান হল ভরপুর ছিল। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংক অব আমেরিকার সিইও ব্রায়ান ময়েনিহান, ব্ল্যাকস্টোন গ্রুপের সিইও স্টিফেন শোয়ার্জম্যান, টোটালএনার্জির সিইও প্যাট্রিক পুয়ানে, ডব্লিউইএফ সিইও বোর্গ ব্রেন্ডে এবং ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াব।
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এবং পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদাসহ ১ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ট্রাম্পের মুখ দেখা মাত্রই হল করতালিতে মুখরিত হয়।
ব্যবসায়িক নেতারা ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক নিয়ে আরও বিস্তারিত পরিকল্পনার অপেক্ষায় রয়েছেন। ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে এসব শুল্ক কার্যকর হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প ইতোমধ্যে অভিবাসন কঠোরভাবে দমন, অভ্যন্তরীণ জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছেন। তিনি মেক্সিকো উপসাগরকে ‘আমেরিকার উপসাগর’ হিসেবে নামকরণের ঘোষণা দেন এবং পানামা খাল পুনর্দখলের হুমকি দিয়েছেন।
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলায় অভিযুক্ত ১ হাজার ৫০০ সমর্থককে ক্ষমা করে দিয়ে ট্রাম্প আইনপ্রণেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
ট্রাম্প সরকারে বৈচিত্র্য কর্মসূচি বিলোপের পদক্ষেপ এবং বেসরকারি খাতেও একই ধরনের চাপ প্রয়োগ নিয়ে দাভোসে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই কর্মক্ষেত্রে বৈচিত্র্যের গুরুত্ব নিয়ে নতুন শব্দের সন্ধান করছেন।