ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের চেষ্টা করবে আজ। এটির সফল অবতরণের জন্য ভারতের সব ধর্মের মানুষ প্রার্থনা করছেন এবং অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন। বুধবার (২৩ আগস্ট) ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের বুকে অবতরণ করবে নভোযানটি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে অবতরণ করতে পারলে ভারত হবে চাঁদে নভোযান পাঠানো চতুর্থ দেশ। এর আগে চাঁদে সফল অবতরণ করেছিল মাত্র তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন।
৬টা ৪ মিনিটে চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। এই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এটি দেখার জন্য স্কুল খোলা থাকবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগদানকারী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনলাইনে যোগ দেবেন।
সফল অবতরণের জন্য প্রত্যাশা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংবাদপত্র এবং নিউজ চ্যানেল জুড়ে ব্যানার শিরোনাম ও অবতরণের ক্ষণগণনা চলছে।
দেশের সব ধর্মের উপাসনালয়ে প্রার্থনা আয়োজন করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে পবিত্র গঙ্গা নদীর তীরে শিশুরা জড়ো হয়ে নিরাপদ অবতরণের জন্য প্রার্থনা করার জন্য। বেশ কয়েকটি জায়গায় মসজিদে মোনাজাত আয়োজন করা হয়। রাজধানী নয়াদিল্লিতে গুরুদুয়ারা নামে পরিচিত একটি শিখ মন্দিরে পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি চন্দ্রযানের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, শুধু অর্থনৈতিক নয়, ভারত বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নতিও অর্জন করছে।
রাশিয়ার চন্দ্রাভিযান লুনা-২৫ ব্যর্থ হয়েছে। তাই সবার মাঝে এক ধরণের কৌতুহল তৈরি হয়েছে। ২০১৯ সালে ভারতের চন্দ্রযান-২ চাঁদে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছে, এটি সফলভাবেই অবতরণ করবে। কারণ বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান-২ এর ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ অভিযান চালিয়েছেন।
ইসরোর ওয়েবসাইটে, ইউটিউব চ্যানেল ও ডিডি ন্যাশনালে সরাসরি সম্প্রচার শুরু হবে ৫ টা ২০ মিনিটে। সন্ধ্যা ৬ টা ৪ মিনিটে রোভার প্রজ্ঞান বহনকারী বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে।
দক্ষিণ মেরুর এই এলাকাটিতে পানির চিহ্ন পাওয়া গেছে। চাঁদে পানি ও বরফ খুঁজে পাওয়া হবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এটি বিশাল মূল্যবান সম্পদ। ২০০৯ সালে ইসরো চন্দ্রযান-১ অনুসন্ধানে চাঁদের পৃষ্ঠে পানি সনাক্ত করেছিল।
পানির উপস্থিতি ভবিষ্যতে চাঁদে যাওয়ার আশা জাগায়। পানির উত্স হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, সরঞ্জামগুলোকে শীতল করতে ও অক্সিজেন তৈরি করা যেতে পারে। মহাসাগরের উত্স সম্পর্কেও জানা যেতে পারে।
মঙ্গলবার ইসরো বলেছে, মিশনটি নির্ধারিত সূচি মেনে এগোচ্ছে ও নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। মিশন অপারেশন কমপ্লেক্সের সবাই উত্তেজনায় রয়েছেন।
ল্যান্ডারটি ১৪ জুলাই উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এলভিএম ৩ ভারী-লিফট যন্ত্রের সাহায্যে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি ৫ আগস্টে চন্দ্র কক্ষপথে পৌঁছায়। ল্যান্ডার বিক্রমের নামকরণ করা হয়েছে বিক্রম সারাভাইয়ের নামে। তিনি ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচির জনক হিসেবে পরিচিত।