X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের ৪০ বছরের অর্থনৈতিক অগ্রগতি কি থেমে গেলো?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০২৩, ২০:৩৮আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৬

কয়েক দশক ধরে চীন নিজের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে কারখানা, আকাশচুম্বি বহুতল ভবন ও সড়কে বিনিয়োগ করে। এই অর্থনৈতিক  মডেল চীনে অসাধারণ প্রবৃদ্ধি আনে। দেশটির দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ ঘটে এবং বৈশ্বিক পরাশক্তিতে পরিণত হয়, যে দেশের রফতানি সারা  বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে। কিন্তু এখন এই মডেল ভেঙে পড়েছে।

চীন যখন ঘাটতি পূরণে কাজ করছিল তখন এই মডেল কাজে এসেছে। কিন্তু এখন দেশটি ঋণে জর্জরিত এবং নির্মাণ করার মতো অবকাঠামো পাওয়া যাচ্ছে না। চীনে নির্মিত অনেক সেতু ও বিমানবন্দরের যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। লাখো অ্যাপার্টমেন্ট ভবন খালি পড়ে আছে। এসব নির্মাণ থেকে  বিনিয়োগের ফিরে আসা হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।

চীনা অর্থনীতির হতাশাজনক তথ্য ছাড়াও সংকটের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনানসহ দূরবর্তী প্রদেশগুলোতে। সম্প্রতি ইউনান বলেছে তারা লাখো ডলার ব্যয়ে একটি নতুন কোভিড-১৯ কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র গড়ে তুলবে। যেটির আকার হবে একটি ফুটবল মাঠের সমান। যদিও দেশটি তাদের বিতর্কিত ‘জিরো কোভিডনীতি’ কয়েক মাস আগে বাদ দিয়েছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করার দিকে বিশ্ব  অগ্রসর হওয়ার কয়েক মাস পর তারা এই নীতি বাতিল করে। 

অন্যান্য এলাকাও একই কাজ করছে। বেসরকারি বিনিয়োগ দুর্বল ও রফতানি হ্রাস পাওয়ায় কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থনীতিকে গতিশীল করার জন্য ঋণ গ্রহণ এবং নির্মাণ চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাদের কাছে খুব বেশি বিকল্প নেই।

চীনের ৪০ বছরের অর্থনৈতিক অগ্রগতি কি থেমে গেলো?

অর্থনীতিবিদরা এখন মনে করেন, চীন মন্থর প্রবৃদ্ধির যুগে প্রবেশ করছে। প্রতিকূল জনসংখ্যা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে উত্তেজনায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। যা বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। অর্থনৈতিক দুর্বলতার সময়কালের পরিবর্তে এটি একটি দীর্ঘ যুগের শুরু হতে পারে।

অর্থনৈতিক সংকট বিশেষজ্ঞ ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক অ্যাডাম টুজ বলেন, আমরা অর্থনৈতিক ইতিহাসের একটি বড় নাটকীয় গতিপথ পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি।

ভবিষ্যৎ কেমন হবে? আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগামী বছরগুলোতে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের কম রেখেছে। যা গত চার দশকের বেশির ভাগ সময়ের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। লন্ডন-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকস  বলছে, চীনের জিডিপি ২০১৯ সালে ৫ থেকে ৩ শতাংশে নেমে এসেছে এবং ২০৩০ সালে তা প্রায় ২ শতাংশে নেমে আসবে।

এই হার অব্যাহত থাকলে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নির্ধারিত ২০৩৫ সালের মধ্যে অর্থনীতির আকার দ্বিগুণ করার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হবে দেশটি। এর ফলে মধ্যম আয়ের উদীয়মান বাজারেরদেশের তালিকা থেকে দেশটির উত্তরণ কঠিন করে তুলবে। এর অর্থ হতে পারে চীন হয়ত কখনোই যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে পারবে না। যা দেশটির দীর্ঘদিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

অতীতের অনেক পূর্বাভাসে চীনা অর্থনীতির এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। চীনের ক্রমবর্ধমান ইলেক্ট্রিক গাড়ি ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ শিল্পগুলোা বাজারে আধিপত্য বিস্তার করার ক্ষমতার অনুস্মারক। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা চীনকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সেমিকন্ডাক্টরের মতো প্রযুক্তিতে উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করতে, প্রবৃদ্ধির নতুন পথ উন্মোচন করতে পারে। বেইজিং চাইলে এখনও প্রবৃদ্ধিকে গতিশীল করার সুযোগ রয়েছে, যেমন- সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি।

এসবের পরও অর্থনীতিবিদরা ব্যাপকভাবে মনে করেন, চীন আরও চ্যালেঞ্জিং সময়ে প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর অতীতের পদ্ধতিগুলো আয় হ্রাস করতে পারে।

এর মধ্যে কিছু ইঙ্গিত মহামারীর আগে স্পষ্ট ছিল। বেইজিং আরও বেশি ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে এবং ক্রমবর্ধমান আবাসন বাজারের ওপর নির্ভর করে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। আবাসন খাত চীনের জিডিপির ২৫ শতাংশের বেশি।

কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে দেশটির প্রাথমিক সাফল্য এবং মার্কিন গ্রাহকদের মহামারি ব্যয় বৃদ্ধি চীনের অর্থনৈতিক সমস্যাকে আরও জটিল করেছে। আবাসন খাতের রমরমা পরিস্থিতির পতন, পশ্চিমা বিশ্বে চীনা পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া এবং ঋণ নেওয়ার  মাত্রা অস্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছেছে।

কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংস নির্মিত একটি বহুতল ভবন। ছবি: ব্লুমবার্গ

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। উৎপাদন সংকুচিত ও রফতানি হ্রাস পেয়েছে এবং যুবকদের বেকারত্ব রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। দেশের বৃহত্তম আবাসন কোম্পানি কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংস ঋণখেলাপির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। কারণ সামগ্রিক অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতির দিকে চলে যাচ্ছে।

জাপানের মতো মন্দা?

কয়েক জন অর্থনীতিবিদ মনে করেন, বেইজিংয়ের পক্ষ আরও প্রণোদনা ছাড়া এবং বেসরকারি খাতের ঝুঁকি গ্রহণকে পুনরুজ্জীবিত করতে অর্থপূর্ণ প্রচেষ্টা গ্রহণ  না করলে ১৯৯০ দশকের শুরু থেকে জাপান যে দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক স্থবিরতার মধ্য দিয়ে  গেছে, চীনের পরিস্থিতিও তেমনটি হতে পারে। ওই সময় জাপানের আবাসন খাতে ধ্বস নামার কারণে কয়েক বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতি ও সীমিত প্রবৃদ্ধির মধ্যে পড়ে অর্থনীতি।

তবে জাপানের মতো নয়, চীন ধনী-বিশ্বের মর্যাদায় পৌঁছানোর আগে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। দেশটির মাথাপিছু আয় উন্নত অর্থনীতির চেয়ে অনেক নিচে। চীনের জনপ্রতি জাতীয় আয় গত বছর প্রায় ১২ হাজার  ৮৫০ ডলারে পৌঁছেছে। যা বিশ্বব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত উচ্চ আয়ের দেশগুলোর সর্বনিম্ন মাথাপিছু আয় ১৩ হাজার ৮৪৫ ডলারের কম। ২০২২ সালে জাপানের মাথাপিছু জাতীয় আয় ছিল প্রায় ৪২ হাজার ৪৪০ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৭৬ হাজার ৪০০ ডলার।

একটি দুর্বল চীনা অর্থনীতি সাম্প্রতিক দশকে সবচেয়ে শক্তিশালী চীনা নেতা শি  জিনপিংয়ের জনসমর্থনকেও ক্ষুন্ন করতে পারে। যদিও বর্তমানে সংগঠিত বিরোধিতার কোনও ইঙ্গিত নেই। কিছু মার্কিন বিশ্লেষক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, অর্থনৈতিক মন্থর প্রবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেইজিং স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানে  সম্ভাব্য সংঘাতসহ দেশে আরও বেশি নিপীড়নমূলক এবং বিদেশে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। এতে সংঘাতের ঝুঁকি বাড়বে।

১০ আগস্ট একটি রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে বিস্ফোরণের দ্বারপ্রান্তে থাকা বোমা বলে অভিহিত করেছেন। যা দেশটির নেতাদের ‘খারাপ কাজ’ করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।

গুইঝু প্রদেশে একটি বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ দুই যাত্রী। ছবি: ব্লুমবার্গ

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াতে একটি মতামত প্রকাশ করে বেইজিং এর জবাব দেয়। এতে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকট আড়াল করার মহা কৌশলের অংশ হিসেবে বাইডেন চীনকে অপমান করতে চাইছেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এই বছর চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শক্তিশালী।

চীনা কর্মকর্তারা সুদের হার কমানোসহ প্রবৃদ্ধি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কিছু পরিমিত পদক্ষেপ নিয়েছেন। পরিস্থিতি খারাপ হলে আরও বেশি কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই বিষয়ে চীনের নেতাদের মিডিয়া অনুসন্ধানের জবাবের দায়িত্বে থাকা স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

১৬ আগস্ট  চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছিলেন, কিছু পশ্চিমা রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়া চীনের কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলোকে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরছে। তথ্য তাদের ভুল প্রমাণ করবে।

‘চীনা শতাব্দী’

এই রূপান্তর একটি অত্যাশ্চর্য পরিবর্তনকে তুলে ধরছে। ১৯৭৮ সালে দেং জিয়াওপিংয়ের ‘সংস্কার ও উন্মুক্ত’ যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে চার দশকে চীন ধারাবাহিকভাবে অর্থনৈতিক চক্রকে অস্বীকার করেছে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাজার শক্তিকে আলিঙ্গন এবং চীনকে পশ্চিমাদের জন্য উন্মুক্ত করে।

একটি নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি:  জুমা প্রেস

সেই সময়কালে চীন মাথাপিছু আয় ২৫ গুণ বৃদ্ধি করেছে এবং ৮০০ মিলিয়নেরও বেশি চীনা মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, যা বিশ্বের মোট দারিদ্র্য হ্রাসের ৭০ শতাংশের বেশি। চীন দুর্ভিক্ষে জর্জরিত একটি দেশ থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম প্রতিদ্বন্দ্বী।

শিক্ষাবিদরা চীনের উত্থানে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে কেউ কেউ ‘চীনা শতাব্দী’ বলে উল্লেখ করেছেন। যেখানে চীন বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে, যেভাবে বিংশ শতাব্দীকে ‘আমেরিকান শতাব্দী’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল।

দেশীয় অবকাঠামো এবং অন্যান্য অস্থাবর সম্পদে অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ মাত্রার বিনিয়োগের মাধ্যমে চীনের উত্থান ঘটেছে। ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যা প্রতি বছর গড়ে জিডিপির প্রায় ৪৪ শতাংশ ছিল। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, তুলনামূলকভাবে বিশ্বব্যাপী এই গড়২৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২০ শতাংশ।

‘আর্থিক নিপীড়নের’ একটি ব্যবস্থার ফলে আংশিকভাবে এই ধরনের বিশাল ব্যয় মেটানো সম্ভব হয়েছিল। যে ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো আমানতের হার কম রাখে। এর ফলে তারা সস্তায় তহবিল সংগ্রহ করতে পারে এবং নির্মাণ প্রকল্পে তহবিল দিতে পারে। চীন হাজার হাজার মাইল মহাসড়ক, শত শত বিমানবন্দর এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাই-স্পিড ট্রেনের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।

কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় নির্মাণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য চীনের সাউথ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিকসের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ২০১৮ সালে শহুরে চীনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অ্যাপার্টমেন্ট বা কমপক্ষে ১৩০ মিলিয়ন ইউনিট খালি ছিল বলে অনুমান করা হয়েছিল।

চীনা সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশের শহর দানঝোতে একটি উচ্চ-গতির রেল স্টেশন তৈরি করতে ৫.৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। কিন্তু যাত্রীর চাহিদা এত কম ছিল বলে যা কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। হাইনান সরকার বলেছে, স্টেশনটি চালু রাখলে ‘ব্যাপক ক্ষতি’ হবে।

নির্মাণাধীন একটি সেতু। ছবি: ব্লুমবার্গ

চীনের অন্যতম দরিদ্রতম প্রদেশ গুইঝো। গত বছর প্রদেশটির মাথাপিছু আয় ছিল ৭ হাজার ২০০ ডলারের  কম। এখানে রয়েছে ১ হাজার ৭০০টির বেশি সেতু, ১১টি  বিমানবন্দর-যা চীনের শীর্ষ চারটি শহরের চেয়ে বেশি। ২০২২ সালের শেষের দিকে প্রদেশটির আনুমানিক ৩৮৮ বিলিয়ন বকেয়া ঋণ ছিল। এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অর্থায়নের জন্য সহযোগিতা চেয়েছে।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক কেনেথ রোগফ বলেন, অনেক এশীয় দেশ দ্রুত নগরায়নের সময় যে অভিজ্ঞতা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির মতো ইউরোপীয় দেশগুলো যে বড় বড় বিনিয়োগে যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল, তার সমান্তরাল চীনের অর্থনৈতিক উত্থান। একই সময়ে, চীনে কয়েক দশকের অপ্রয়োজনীয় নির্মাণ  ১৯৮০ ও ১৯৯০ দশকের শেষের দিকে জাপানের অবকাঠামো নির্মাণ বৃদ্ধির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা অতিরিক্ত বিনিয়োগের দিকে পরিচালিত করেছিল।

কেনেথ রোগফ আরও বলেন, নেতৃস্থানীয় বিষয় হলো তারা নির্মাণ সামগ্রীতে আয় হ্রাস করতে চলেছে। এভাবে কতদূর যাওয়া যাবে, তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছে, এত চাহিদা পূরণের কাছে চীনকে প্রতি ডলার জিডিপি প্রবৃদ্ধির জন্য ৯ ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। যা এক দশক আগে ছিল  ৫ ডলারের  কম  এবং ১৯৯০ এর দশকে ৩ ডলারের একটু বেশি।

হেনান প্রদেশে একটি নির্মাণ প্রকল্প। ছবি: জুমা প্রেস

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট এশিয়ান ইনস্টিটিউটের প্রধান বার্ট হফম্যানের মতে, বেসরকারি সংস্থাগুলোর রিটার্ন পাঁচ বছর আগে ছিল ৯  দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু এখন তা কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রাদেশিক কোম্পানিগুলোর রিটার্ন ৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে  কমে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

এদিকে চীনের শ্রমশক্তি সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির গতি কমে যাচ্ছে। হফম্যানের বিশ্লেষণ অনুসারে, ১৯৮০ এবং ২০০০ দশকের শুরুর দিকে উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি চীনের জিডিপিতে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অবদান রেখেছে। সেই অনুপাত গত এক দশকে এক-ষষ্ঠাংশের নিচে নেমে এসেছে।

বাড়ছে ঋণ

চীনের অনেক অঞ্চলে ঋণ এবং নির্মাণ করাকে সমাধান হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্ট ডেটা অনুসারে, বিভিন্ন স্তরের সরকার ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মোট ঋণ ২০২২ সালের জিডিপির প্রায় ৩০০ শতাংশতে পৌঁছে  গেছে। এই মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১২ সালে চীনের এই হার ছিল ২০০ শতাংশের কম।

ঋণের বেশিরভাগ শহরগুলোতে ব্যয় করা হয়েছিল। আইএমএফের তথ্য অনুসারে, বেইজিং কর্তৃক সরাসরি প্রকল্পে অর্থ ঋণ করার  ক্ষমতায় সীমিত রাখায় তারা অফ-ব্যালেন্স শিট অর্থায়নের দিকে ঝুঁকছে। যে ঋণ এই বছর ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা রোডিয়াম গ্রুপের পূর্বাভাস অনুসারে, স্থানীয় সরকার দ্বারা প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য ব্যবহৃত প্রায় ২০ শতাংশ অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোর কাছে দেশীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন বন্ডসহ তাদের স্বল্পমেয়াদী ঋণের বাধ্যবাধকতা মেটানোর মতো যথেষ্ট নগদ মজুদ রয়েছে।

বিশালাকার কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রের অবস্থান থাকা ইউনানে ভারী অবকাঠামো ব্যয় বছরের পর বছর ধরে প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলেছে। কর্মকর্তারা এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু সাসপেনশন ব্রিজ, ৬হাজার  মাইলের বেশি এক্সপ্রেসওয়ে এবং চীনের অন্যান্য অনেক অঞ্চলের চেয়ে বেশি বিমানবন্দরসহ কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন।

প্রকল্পগুলো পর্যটনকে উত্সাহিত করেছে এবং তামাক, যন্ত্রপাতি এবং ধাতু সহ ইউনান পণ্যের বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তা করেছে। ২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ইউনান ছিল চীনের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। গত কয়েক বছরে প্রবৃদ্ধি দুর্বল হয়ে পড়েছে। ভূমি বিক্রয় থেকে রাজস্ব কমে যাওয়ায় আবাসন বাজারের ক্ষয়ক্ষতি স্থানীয় আর্থিক ব্যবস্থায় কঠোর আঘাত করেছে।

চীনা রেটিং এজেন্সি লিয়ানহে-এর রেটিং অনুসারে, ইউনানের ঋণ-রাজস্ব অনুপাত ২০২১ সালে ১৫১ শতাংশ বেড়েছে, যা আইএমএফ কর্তৃক উদ্বেগ হিসেবে স্বীকৃত এবং ২০১৯ সালের তুলনায়  ১০৮ শতাংশ বেশি। ফিচ রেটিং এই বছরের শুরুতে বলেছিল, প্রদেশটি অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়নের জন্য ব্যবহৃত আর্থিক সংস্থাগুলো তাদের ঋণের আকার এবং সরকারের আর্থিক ব্যবস্থায় মন্থরতা থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

তবুও ইউনান বড় বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ২০২০ সালের শুরুতে ইউনান সরকার বলেছিল, শত শত অবকাঠামো প্রকল্পে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। যার মধ্যে ১৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ ব্যয়ে ইয়াংজি নদীর কিছু অংশ থেকে প্রদেশের শুষ্ক অঞ্চলে পানি নেওয়ার মতো প্রকল্প।

এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু সাসপেনশন সেতু। ছবি: রয়টার্স

ইউনানের ওয়েনশান নামের একটি শহরের ফেব্রুয়ারির মাসের পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রচারের লক্ষ্যে কয়েকটি পদক্ষেপের একটি হিসেবে ‘স্থায়ী’ কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রকে তালিকাভুক্ত করেছে। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এটির নির্মাণের জন্য জুন মাসে একটি দরপত্র জারি করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তহবিল ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

চীনের জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবো-এর একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটি অর্থের এত অপচয়।’

ইউনানের এক কর্মকর্তা কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এটির নির্মাণ এই বছরের শেষের দিকে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তিনি এর বেশি কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কঠোর নিয়ন্ত্রণ

বেইজিংয়ের ক্ষমতার বলয়ে থাকা সিনিয়র কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, গত কয়েক দশকের প্রবৃদ্ধির মডেল তার সীমায় পৌঁছে গেছে। গত বছর দলের নেতাদের একটি নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তৃতায় শি জিনপিং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের জন্য নির্মাণের জন্য ঋণের ওপর নির্ভর করার জন্য কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছিলেন। 

তিনি বলেছিলেন, কিছু লোক বিশ্বাস করে যে উন্নয়ন মানে প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, আপনি নতুন জুতা দিয়ে পুরানো পথে হাঁটতে পারবেন না। তবে শি ও তার সরকার এখন পর্যন্ত দেশের পুরানো প্রবৃদ্ধির মডেল থেকে খুব বেশি সরে যেতে পারেনি।  

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সবচেয়ে সুস্পষ্ট সমাধান হবে চীনের জন্য ভোক্তা ব্যয় এবং সেবাখাতের প্রচারকে গুরুত্ব দেওয়া। যা যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপের মতো আরও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতি তৈরি করতে সাহায্য করবে। বিশ্বব্যাংকের মতে,  গৃহস্থালীর খরচ চীনে জিডিপির মাত্র ৩৮ শতাংশ। গত কয়েক বছর ধরে তা প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যয় প্রায় ৬৮ শতাংশ।

এটি পরিবর্তন করার জন্য চীনা সরকারকে জনগণকে বেশি ব্যয় করতে এবং কম সঞ্চয় করতে উত্সাহিত করার  জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে বৃহত্তর স্বাস্থ্য এবং বেকারত্বের সুবিধাসহ চীনের তুলনামূলকভাবে নগণ্য সামাজিক সুরক্ষার সম্প্রসারণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

বেইজিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিতদের মতে,  মার্কিন ঘরানার ভোগবাদ নিয়ে শি এবং তার ঘনিষ্ঠ নেতারা সন্দিহান। তারা এটিকে অপচয় হিসেবে মনে করেন। যখন চীনের মনযোগ দেওয়া উচিত শিল্প সক্ষমতা বাড়ানো এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সংঘাতে ঝাঁপিয়ে পড়া।

ক্রেতার অপেক্ষায় দোকানিরা। ছবি: ব্লুমবার্গ

নেতারা আরও উদ্বিগ্ন, মানুষকে তাদের অর্থ ব্যয় করা সম্পর্কে আরও ক্ষমতায়ন প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জন না করে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকে হ্রাস করতে পারে।  

জুলাই মাসের শেষের দিকে মানুষের ভোগকে বাড়ানোর জন্য ঘোষিত একটি পরিকল্পনায় বিস্তারিত না থাকায় চীনের বাইরের অর্থনীতিবিদরা সমালোচনা করেছিলেন। এতে খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রচারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় আরও মুদির দোকান তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

ভোগকে বাড়ানোর বদলে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার আকাঙ্ক্ষা থেকে পরিচালিত হয়ে শি’র নেতৃত্বে চীনকে আরও বড় শিল্প শক্তিতে পরিণত করার জন্য রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ দ্বিগুণ করা হয়েছে। যেমন, সেমিকন্ডাক্টর, ইলেক্ট্রিক গাড়ি (ইভি) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো সরকারি সুবিধা পাওয়া শিল্পগুলোকে শক্তিশালী করা হবে।

চীনের পক্ষে এই ক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ রয়েছে, এতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু তারা বলছেন, পুরো অর্থনীতিকে সংকট থেকে তুলতে বা লাখো কলেজ শিক্ষার্থী পাস করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের পর পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরিতে এগুলো যথেষ্ট নয়।

দেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্প গড়ে তুলতে এবং পশ্চিমাদের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে বেইজিং। এর ফলে কম-অত্যাধুনিক চিপগুলোর উত্পাদন বেড়েছে। কিন্তু তা তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির মতো উন্নত নয়। দুটি বড় প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে, এগুলো কয়েক মিলিয়ন ডলার সরকারি সহযোগিতা পেয়েছিল।

গত সপ্তাহে বেইজিংয়ের হতাশাজনক অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশের মতোই ক্ষমতাসীন কমিউনিস্টি পার্টির প্রধান জার্নাল ‘কিউশি’ ছয় মাস আগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া শি জিনপিংয়ের একটি বক্তৃতা প্রকাশ করেছে। এতে তিনি পাশ্চাত্য ধাঁচের বস্তুগত সম্পদ অর্জনের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলোতে মনযোগ দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তিনি বলেছিলেন, আমাদের অবশ্যই ঐতিহাসিক ধৈর্য ধরে রাখতে হবে এবং ধাপে ধাপে অবিচলিত অগ্রগতিতে জোর দিতে হবে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অবলম্বনে।

/এএ/
সম্পর্কিত
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
ভারতের মণিপুরে আবারও জাতিগত সহিংসতা
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ অব্যাহতমার্কিন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়ায়
সর্বশেষ খবর
কাঁচা আম দিয়ে টক-মিষ্টি ললি বানাবেন যেভাবে
কাঁচা আম দিয়ে টক-মিষ্টি ললি বানাবেন যেভাবে
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিএনডিপি ডিবেটার হান্ট ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিএনডিপি ডিবেটার হান্ট ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য হলেন কাজী নাবিল আহমেদ ও সেলিম মাহমুদ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য হলেন কাজী নাবিল আহমেদ ও সেলিম মাহমুদ
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে