বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবার হিসেবে পরিচিত ভারতের মিজোরাম রাজ্যের একটি পরিবারের ১৯৯ জন সদস্য একসঙ্গে বসবাস করে। তাও আবার একই ভবনে। ৫ তলা ওই ভবনটির একশটি রুমে দীর্ঘদিন ধরে মিলেমিশেই বসবাস করে আসছেন তারা। আধুনিক যুগে এমন আশ্চর্য মেল-বন্ধনের যৌথ পরিবার বিরল। পরিবারটি দেখতে কৌতুহলী দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সেখানে ভিড় জমান। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) এই খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামের বাকতাওয়াং গ্রামে আশ্চর্য এই পরিবারের বাস। গ্রামের একটি পাঁচ তলা ভবনে একসঙ্গে থাকেন সবাই। ভবনটিতে একশটি কক্ষ রয়েছে। সেখানেই পরিবারে সবাই মিলেমিশে থাকেন।
এই পরিবার কাঠামোর প্রতিষ্ঠাতা জিওনা চানা। জীবদ্দশায় তিনি মোট ৩৮টি বিয়ে করেছিলেন। প্রথম বিয়ে করেন ১৭ বছর বয়সে। কথিত আছে, এক বছরেই তিনি নাকি ১০টি বিয়ে করেছিলেন।
তার এ সংসারে ছেলে-মেয়ের সংখ্যা ৮৯ জন। এদের সবারই স্বামী-স্ত্রী রয়েছে। সেই সূত্রে, এই পরিবারে তার নাতি-নাতনি রয়েছে ৩৬ জন। তাদের সবাইকে এক ছাদের নিচে নিয়ে আসেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা যখন দিনে দুবার একসঙ্গে খেতে বসেন, তখন বাড়িটিকে একটি ব্যস্ত ক্যানটিন বা হোটেলের ডাইনিং বললেও ভুল হবে না।
বিশাল এই পরিবার নিয়ে বেশ খুশি ছিলেন জিওনা। ২০১১ সালের বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জিওনা বলেছিলেন, পরিবারটিকে আরও বড় করতে চান তিনি। আরও বিয়ে করতে তিনি ইচ্ছুক। তবে ওই বছরই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুর আগে বেশ কিছুদিন উচ্চ রক্ত চাপ ও ডায়াবেটিসে ভোগেন তিনি।
‘চানা’ নামের একটি স্বতন্ত্র মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন জিওনা চানা। ১৯৪২ সালে এই মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন তার বাবা। কয়েক শ' পরিবার এই মতবাদের অনুসারী।
বিশাল এ পরিবারের সবাই জিওনার সেবা-যত্ন করতেন। তার প্রতি ভালোবাসা থেকেই, তার মৃত্যুর পরও একত্রে বসবাস করছেন তারা। বর্তমানে পরিবারটিতে মোট ১৯৯ জন সদস্য রয়েছে। সুশৃঙ্খল এ পরিবারটিকে দেখতে প্রতি বছরই অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক মিজোরামে যান।