পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের নির্বাচন কমিশনার লিয়াকত আলী চাতা পদত্যাগ করেছেন। তবে পদত্যাগের আগে, গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপির দায় স্বীকার করেছেন তিনি। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ খবর জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন।
শনিবার রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার ওপর এতোটাই চাপ ছিল যে, একসময় আত্মহত্যার চিন্তা করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে জনগণের সামনে বিষয়গুলো উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, রাওয়ালপিন্ডিতে অন্তত ১৩ জন প্রার্থী হেরেছিলেন, কিন্তু তাদেরকে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধান দেখিয়ে জেতানো হয়েছে। ভোট কারচুপির জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতি জড়িত দাবি করেছেন চাতা। আর এ কাজের জন্য নিজের ও সংশ্লিষ্ট সবার বিচার দাবি করেছেন তিনি।
কমিশনার বলেন, পিন্ডিতে ভোট জালিয়াতির দায় নিচ্ছি আমি। সেই সাথে নিজেকে পুলিশে সোপর্দ করছি।
এর আগে, গুজব ওঠে, কমিশনার চাতাকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এক বিবৃতির মাধ্যমে তাকে আটকের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
এদিকে, ফলাফলে জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। শনিবার আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোনও বিভাগের কোনও কমিশনার, জেলা রিটার্নিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, এমনকি প্রিজাইডিং অফিসারও সরাসরি নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত নন। তারপরও দ্রুত এই অভিযোগের তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে পিইসি।
এদিকে, ভোট কারচুপি ও ফলাফলে জালিয়াতির অভিযোগে টানা ৯ দিন ধরে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে ইমরান খানের দল পিটিআই।
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের দিন ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। এরপর ফল প্রকাশ করা হয় তিন দিন ধরে। ভোটের দিন কারচুপি ছাড়াও ফলাফল পাল্টে দেওয়ার মতো জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে ভোটের পরদিন থেকেই পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ করে পিটিআই। ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে পাকিস্তানের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বড় জালিয়াতি’ আখ্যা দিয়েছে ইমরানের দল। শনিবার দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভে অংশ নিতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।