শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে মিয়ানমার। শুক্রবার দেশটির মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পে রাজধানী নেপিদোর রাস্তা ও ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও আতঙ্কিত মানুষ রাস্তায় ছুটে বেরিয়ে এসেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে ভূগর্ভস্থ অগভীরে ৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কয়েক মিনিট পর একই এলাকায় ৬.৪ মাত্রার আরেকটি আফটারশক অনুভূত হয়।
থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের জনপ্রিয় পর্যটন শহর চিয়াং মাইয়ের বাসিন্দা দুয়াংজাই এএফপিকে বলেন, আমি ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম, হঠাৎ শব্দ শুনে পায়জামা পরেই যত দ্রুত সম্ভব বাইরে ছুটে এলাম।
এএফপির সাংবাদিকদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, নেপিদোতে ভবনের ছাদ থেকে বড় বড় কংক্রিট খণ্ড খসে পড়েছে এবং রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ২০ লেনের মতো চওড়া হাইওয়ে রয়েছে এই পরিকল্পিত শহরে।
ভূমিকম্পের সময় এএফপির একদল সাংবাদিক নেপিদোর জাতীয় জাদুঘরে ছিলেন। তারা জানান, ভবনটি কাঁপতে শুরু করলে ছাদ থেকে টুকরো পড়তে থাকে এবং দেয়ালে ফাটল ধরে। ইউনিফর্ম পরা কর্মীরা দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন—কেউ কেউ কাঁপছিলেন, কেউবা ফোন করে প্রিয়জনদের খোঁজ নিচ্ছিলেন। প্রায় ৩০ সেকেন্ড ধরে তীব্র কম্পন ছিল।
ভূমিকম্পে হতাহতের নির্দিষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। রয়টার্স থাইল্যান্ডে ৩ জন নিহতের কথা জানিয়েছে। থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের শহরগুলো থেকে শুরু করে রাজধানী ব্যাংকক পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
চিয়াং মাইয়ের ৭৬ বছর বয়সী বাসিন্দা সাই বলেন, একটি মিনিমার্টে কাজ করার সময় দোকানটি কাঁপতে শুরু করে। তিনি বলেন, আমি দ্রুত অন্যান্য ক্রেতাদের সঙ্গে দোকান থেকে বেরিয়ে আসি। এত শক্তিশালী কম্পন আমি জীবনে কখনও অনুভব করিনি।
ভূমিকম্পে ব্যাংককের কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শহরের কিছু মেট্রো ও লাইট রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংটান সিনাওয়াত্রা এক্স পোস্টে জানান, ভূমিকম্পের পর দক্ষিণের ফুকেট দ্বীপে তার সরকারি সফর বাতিল করে তিনি জরুরি বৈঠক করেছেন।
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ইউনান প্রদেশেও এই ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়েছে। দেশটির ভূমিকম্প সংস্থা জানিয়েছে, সেখানে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৯।