ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে একটি পাথরের খনি ধসে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে উদ্ধার অভিযান চলছে। শুক্রবার (৩০ মে) সকালে পশ্চিম জাভার সিরেবন অঞ্চলের গুনুং কুদা খনিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বড় বড় পাথর সরাতে খননযন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, উদ্ধারকারীরা বিধ্বস্ত এলাকা থেকে মৃতদেহ টেনে বের করার চেষ্টা করছেন। আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি বড় পাথর ও মাটির স্তূপ ধসে পড়ার পর ঘন ধুলোর ভেতর লোকজন আতঙ্কে দৌড়ে পালাচ্ছেন।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। তবে কতজন নিখোঁজ রয়েছে তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা যায়নি।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তিনটি খননযন্ত্রসহ ভারী যন্ত্রপাতি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে এবং শনিবার পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলবে।
সিরেবন জেলার পুলিশপ্রধান সুমার্নি জানিয়েছেন, কষ্টসাধ্য উদ্ধার প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইতোমধ্যে এক ডজন আহত ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধসের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খনি মালিক ও শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। পুলিশ, জরুরি কর্মী, সেনা সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক – মোট পাঁচটি খননযন্ত্রসহ – এখনও আটকে পড়া শ্রমিকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে দুর্বল মাটির কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। নতুন করে ধসের ঝুঁকি রয়েছে বলেও তিনি জানান।
পশ্চিম জাভার গভর্নর ডেডি মুলিয়াদি তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলটি “খুবই বিপজ্জনক” এবং “শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা মানদণ্ড পূরণ করে না”।
মুলিয়াদি আরও বলেন, গুনুং কুদা খনি এবং পশ্চিম জাভার আরও চারটি খনি, যেগুলো জীবনের জন্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তিনি তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ায় অবৈধ খনন কার্যক্রম খুবই সাধারণ, যা নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জীবিকা। কারণ এতে ভূমিধস, বন্যা এবং সুড়ঙ্গ ধসের মতো প্রাণঘাতী ঝুঁকি রয়েছে। প্রায়শই বালি, পাথর বা সোনা উত্তোলনের প্রক্রিয়ায় শ্রমিকরা অল্প বা কোনও সুরক্ষা ছাড়াই পারদ ও সায়ানাইডের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করে থাকেন।