ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৪০ জনের বেশি।নিহতদের মধ্যে বিমানের আরোহী ও হোস্টেলের নিহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখনও নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী ড্রিমলাইনার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিমানটিতে থাকা ২৪২ যাত্রীর মধ্যে অন্তত একজন বেঁচে আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আহমেদাবাদের পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা ২৪০ জনের বেশি।
এর আগে তিনি নিহতের সংখ্যা ২৯৪ জন বলে জানিয়েছিলেন। অনেকের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দুবার গণনা করায় সংখ্যা বেশি হয়েছিল জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেছেন, আমরা একজন যাত্রীকে জীবিত পেয়েছি, যার সিট নম্বর ছিল ১১এ। সিটটি ছিল জরুরি বহির্গমন দরজার পাশে। হাসপাতালে আহতদের মধ্যে আরও জীবিত আরোহী থাকতে পারেন।
বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি ৪০ বছর বয়সী রমেশ বিশ্বাসকুমার হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, উড্ডয়নের ৩০ সেকেন্ড পরই প্রচণ্ড শব্দ হয়, তারপরই দুর্ঘটনা ঘটে। যখন জ্ঞান ফিরে আসে, দেখি চারপাশে শুধু মরদেহ। আমি দৌড়ে বের হই, কেউ একজন আমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়।
তার ভাই অজয় একই বিমানে ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি তাঁকে খুঁজে পাচ্ছি না। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।
বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিমানটির পেছনের অংশ মেডিক্যাল কলেজ ভবনের ছাদে আটকে ছিল। স্থানীয় পুলিশপ্রধান জি.এস. মালিক বলেন, মৃতদের মধ্যে বিমানের আরোহী ও কলেজের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।
নিহতদের শনাক্তে আত্মীয়-স্বজনদের ডিএনএ নমুনা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান রাজ্য স্বাস্থ্যসচিব ধনঞ্জয় দ্বিবেদী।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও নিহত হয়েছেন।
এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিমানের আরোহীদের মধ্যে ২১৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক, ১১ শিশু এবং ২ নবজাতক। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন।
বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের। ২০১১ সালে এটি প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়। ফ্লাইট রাডার২৪ জানিয়েছে, বিধ্বস্ত হওয়া এই বিমানটি ২০১৩ সালে প্রথম উড়েছিল এবং ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে এটি এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আন্তর্জাতিক বিমাননিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক বলছে, এটি ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজের প্রথম বড় দুর্ঘটনা।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত চলছে। বোয়িং ও ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল পাঠিয়েছে।