যুক্তরাজ্যে কুরআন অবমাননার একটি হাই-প্রোফাইল মামলার বিচার শুরু হয়েছে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। বুধবার এই বিচার শুরু হয়। ৫০ বছর বয়সী হামিত কোস্কুনের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উসকানিমূলক জনশৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বিশৃঙ্খল আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি লন্ডনে তুর্কি দূতাবাসের সামনে পবিত্র কুরআন পোড়ান।
প্রসিকিউশন পক্ষের আইনজীবী ফিলিপ ম্যাকগি আদালতে বলেন, কোস্কুনের এ কর্মকাণ্ড জনশৃঙ্খলার জন্য ‘স্পষ্ট হুমকি’ তৈরি করেছে এবং এটি প্রতিবাদের ‘বৈধ সীমা অতিক্রম করেছে’।
অভিযুক্ত কোস্কুন নিজেকে একজন নাস্তিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে আদালতে বলেন, তার কুরআন পোড়ানোর কাজটি ছিল একটি ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ’। তাকে সমর্থন দিচ্ছে ন্যাশনাল সেকুলার সোসাইটিসহ কয়েকটি ধর্মনিরপেক্ষ গোষ্ঠী, যারা তার আইনি খরচও বহন করছে।
কোস্কুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যুক্তরাজ্যের ক্রাইম অ্যান্ড ডিসঅর্ডার অ্যাক্ট ১৯৯৮ এবং পাবলিক অর্ডার অ্যাক্ট ১৯৮৬-এর অধীনে।
বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে কুরআন পোড়ানো একটি গভীর অবমাননাকর ও আঘাতজনক কাজ হিসেবে বিবেচিত। মুসলিমরা কুরআনকে আল্লাহর বাণী হিসেবে মানে এবং অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখে। এ কারণে ধর্মীয়ভাবে উসকানিমূলক অপরাধের অভিযোগ মুসলমানদের সম্মান ও অনুভূতির স্বীকৃতি হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, এ ধরনের কাজ ঘৃণা ছড়াতে পারে এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য আরও বাড়াতে পারে। তারা আশা করছেন, বিচারের ফলাফল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে।
অপরদিকে, যদি কোস্কুন খালাস পান, তাহলে সমাজে বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনি সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আইন ও ধর্মবিশেষজ্ঞরা।
এই বিচার প্রক্রিয়াটি যুক্তরাজ্যে জনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত অপরাধ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় অনুভূতির মধ্যকার ভারসাম্য নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।