জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ঘিরে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে হয়েছে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। হাইকমিশন চত্বরে স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
দিবসটি ঘিরে উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। তারপর ‘মুজিব চিরঞ্জীব’ মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যের পর কলকাতাস্থ বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিবেষ্টিত কক্ষে তার ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে হয় বিশেষ মোনাজাত। এতিমখানার শিশুদের জন্য ব্যবস্থা করা হয় দুপুরের খাবারের।
এ ছাড়া জাতীয় শোক দিবস ঘিরে বুধবার (১৬ আগস্ট) বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতা বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করবে।
কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) পড়ার সময় স্মিথ লেনের বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসে ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।
বিকেলে ‘বাংলাদেশ গ্যালারি’তে হওয়া আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান ব্যানার্জি। সেখানে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। তারপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে নিবেদন করা হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক জাতীয় শোক দিবস ঘিরে প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা সভায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননাপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো ক্যারিশমেটিক ব্যক্তিত্ব খুব কম দেখা যায়। তার ডাকে মানুষ অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিতে রাজি ছিল। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা দুনিয়ায় বিরল।’
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলকাতা প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিষ সুর বলেন, ‘শেখ মুজিব শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয়, পুরো এশিয়ার মানচিত্র বদলে দিয়েছেন।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, ‘শুভ-অশুভ’র যুদ্ধ নিরন্তর চলমান। যা কিছু শুভ বঙ্গবন্ধু ছিলেন তার প্রতীক। তাই অশুভ শক্তি তাকে হত্যা করেছিল। কিন্তু শুভ’র জয় সুনিশ্চিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বর্তমান ঈর্ষণীয় সাফল্য তারই প্রমাণ।’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার শ্রী বিমান ব্যানার্জি বলেন, ‘ব্যক্তি মুজিবকে হত্যা করা গেলেও তার চেতনাকে হত্যা করা সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের ফেরাতে শেখ হাসিনার সরকারের প্রচেষ্টা সফল হবে বলে আশা করি।’
অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) তুষিতা চাকমা।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সব সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।