ভারতের লোকসভা নির্বাচনে শেষবারের মতো ভোট দিলেন পশ্চিমবঙ্গের ভুটান সীমান্তে আলিপুরদুয়ার জেলার গাঙ্গুটিয়া বনবস্তির ১১/১৫৫ নম্বর ভোটকেন্দ্রের ভোটার। কারণ ওই বব এলাকায় বাঘ ছাড়া হবে। মানুষের বাসস্থান কেড়ে নেবে বাঘ।
পশ্চিমবঙ্গের ভুটান সীমান্তে আলিপুরদুয়ার জেলার গাঙ্গুটিয়া বনবস্তির এলাকায় ৩০৫ জন ভোটার রয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার আলিপুরদুয়ার আসনের শেষবারে মতো ভোট হয়েছে। এরপর আর এখানে ভোট হবে না। কারণ জ্যান্ত বাঘ ছাড়া হবে জঙ্গলে। তাই এই বনবস্তির বাসিন্দারা অন্য কোথাও চলে যাবেন।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতায় পড়ে গিয়েছে গাঙ্গুটিয়া বনবস্তি। এই বনবস্তির ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকদের ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির নিয়ম মেনে ১৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়ে স্থানান্তরিত করা হবে।
গাঙ্গুটিয়া বনবস্তির মানুষরা এখন বিজয়পুর বস্তিতে আছেন। শুক্রবার শেষবারের মত গ্রামে ভোট দিতে এসে তারা আবেগে জড়িয়ে পড়েন। ভোটকেন্দ্রটি মডেল কেন্দ্রে রূপ দেওয়া হয়েছিল।
বক্সা কোর জঙ্গলের ভিতরে অবস্থিত গাঙ্গুটিয়া। জঙ্গলে ঘেরা এ গ্রামের সৌন্দর্য অপরূপ। সবুজ শ্যামল গ্রাম, অদূরে পাহাড়ের আলতো ছোঁয়ায় এ গ্রাম ছবির মতো। বছরের পর বছর এ গ্রামে থেকেছেন তারা। নিজেদের গ্রামেই ভোট দিতে এলেন অতিথির মত।
সুহানা নামের এক তরুণী নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কেমন যেন আনমনা হয়ে পড়ছিলেন বারবার। আবেগঘন কণ্ঠে তিনি বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকে এখানে ভোট দিয়েছি। এটা শেষবার। আমার ২৫ বছর এখানেই কেটেছে। এখানেই আমার জন্ম। একটু মন কেমন তো করছেই।
কালচিনি ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসে চেপে বনবস্তির সবাই হাজির হয়েছিলেন ভোটকেন্দ্রে। ভোট দিয়ে গাঙ্গুটিয়ার ১৯১ টি পরিবারের ভোটাররা এদিক ওদিক খানিকটা ঘুরেও নিলেন। কারও কারও চোখ চিকচিক করছে, উপচে পড়ছে জল। ঝাপসা চোখে কত স্মৃতি ভিড় করছে।
সকলেই জানেন, এবারই শেষ। পুরোপুরি এবার গ্রামের সঙ্গে ছিন্ন হবে সম্পর্ক।