নানান চড়াই-উতরাইয়ের পর অবশেষে জীবাশ্ম জ্বালানি পরিহারের প্রথম ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব এড়াতে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ জলবায়ু কপ-২৮ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা এ চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছেন। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে তেল যুগের সমাপ্তি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবার জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে দুই সপ্তাহব্যাপী দীর্ঘ আলোচনার পর এই চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছেন প্রতিনিধিরা। এ চুক্তি বিশ্বের বড় বড় বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের একটি শক্তিশালী সংকেত দিচ্ছে যে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে বিশ্ববাসী এখন ঐক্যবদ্ধ।
কপ-২৮ প্রেসিডেন্ট সুলতান আল জাবের এ চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রকৃত সফলতা আসবে তা বাস্তবায়নে।
তিনি শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘কথা নয়, কাজই আমাদের পরিচয়। তাই চুক্তিটিকে বাস্তব রূপ দিতে আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’
নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ ইডে বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বাদ দিতে এই প্রথম বিশ্ববাসী এক হয়েছেন।
তবে তেল, গ্যাস ও কয়লার ব্যবহার পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনতে কপ-২৮ চুক্তিতে ১০০টিরও বেশি দেশ কাজ করলেও এই চুক্তির বিরোধিতা করেছে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন তেল উৎপাদক সংস্থা ওপেক। তারা বলছে, নির্দিষ্ট জ্বালানির ব্যবহার না কমিয়েও গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো যেতে পারে। এ নিয়েই বুধবার দীর্ঘ যুক্তি-তর্ক হয়েছে। দিনশেষে এ চুক্তি বাতিল হবে এমন আশঙ্কা করছিলেন অনেকে।
প্রস্তাবিত চুক্তিতে বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে একটি ন্যায্য, সুশৃঙ্খল ও ন্যায়সংগত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
এতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তি তিনগুণ বাড়ানো, কয়লার ব্যবহার কমানো এবং কার্বন ক্যাপচার ও স্টোরেজের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বানও জানানো হয়েছে।