ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, দেশটির উত্তর ফ্রন্ট, লেবানন সীমান্তে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতির আরেকটি ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (৭ এপ্রিল) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। ছয় মাস ধরে এই ফ্রন্টে ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ চলছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিরক্ষা থেকে আক্রমণে স্থানান্তরের প্রস্তুতি শিরোনামের এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)-এর বৃহত্তর সেনা সমাবেশের সরঞ্জামকেন্দ্রিক প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিয়মিত ও রিজার্ভ ইউনিটের সেনারা যেকোনও ডাকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সাড়া ও সজ্জিত হতে এবং প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ অভিযানে সম্মুখভাগে মোতায়েনে প্রস্তুত থাকবে।
৮ অক্টোবর থেকে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে গোলা বিনিময় করে আসছে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নিয়মিত রকেট হামলা চালাচ্ছে গোষ্ঠীটি। ইসরায়েলও লেবাননে গোষ্ঠীটির অবস্থানে পাল্টা হামলা চালিয়ে আসছে।
এর আগে রবিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছিল, তারা লেবাননের পূর্বাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি একটি ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবির পর এই হামলা চালানো হলো।
হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা দখলকৃত গোলান মালভূমিতে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করেছে। এসব রকেট ইসরায়েলে একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে আঘান হেনেছে। জবাবে লেবাননের পূর্বাঞ্চলে হামলা চালায় ইসরায়েল।
এই বক্তব্য নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
দুটি গোয়েন্দা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, লেবাননে সর্বশেষ ইসরায়েলি হামলার নিশানা ছিল সিরিয়া সীমান্তে জান্তা নামের একটি গ্রাম। এখানে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ঘাঁটি রয়েছে। কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে প্রায় ২৭০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও ৫০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ লেবাননে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৯০ হাজার মানুষ।
ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে প্রায় ৬০ হাজার বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়েছেন। হিজবুল্লাহর হামলায় ১৮জন সেনা ও বেসামরিক নিহত হয়েছেন।
২০০৬ সালে যুদ্ধে জড়িয়েছিল হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল। ওই যুদ্ধের পর এবারই সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে তারা। হিজবুল্লাহ বলেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যণ্ত তারা গোলাবর্ষণ বন্ধ করবে না।