গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সম্পূর্ণ সমন্বয় করে’ পরিচালিত হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে ইসরায়েলি সরকার। গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। এই হামলায় একদিনে ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, আমি নিশ্চিত করতে পারি যে গাজায় তীব্র যুদ্ধে ফিরে আসা ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় করে হয়েছে। ইসরায়েল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনকে ইসরায়েলের প্রতি অটুট সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় চালানো ইসরায়েলের হামলার দায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ওপর চাপাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়ায় হামাস যুদ্ধ বেছে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজেস এক বিবৃতিতে বলেন, হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর সুযোগ পেলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করে যুদ্ধ বেছে নিয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সরকার গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে নিরস্ত্র বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে। হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, নেতানিয়াহু ও তার চরমপন্থি সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করে গাজায় নিরস্ত্র বেসামরিক জনগণের ওপর আবারও আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে। এতে গাজায় জিম্মিদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছিল, গাজায় প্রাণঘাতী হামলা চালানোর আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেছে ইসরায়েল। সোমবার ফক্স নিউজের ‘হ্যানিটি’ শোতে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সোমবার রাতে গাজায় হামলা সম্পর্কে ইসরায়েলকে পরামর্শ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন এবং হোয়াইট হাউজ।
ক্যারোলিন লেভিট আরও বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে হামাস, হুথি, ইরান এবং যারা শুধু ইসরায়েল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও হুমকিস্বরূপ, তাদের মূল্য দিতে হবে। তাদের ওপর সর্বনাশ নেমে আসবে।
ট্রাম্পও প্রকাশ্যে একই ধরনের সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছিলেন, হামাসকে অবশ্যই গাজায় সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে, নতুবা নরক ভোগ করতে হবে।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছে।