যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান আলোচনায় কোনও চুক্তি না হলেও ইরান টিকে থাকতে পারবে। সোমবার (২৬ মে) রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এমন এক সময় তিনি এই মন্তব্য করেছেন, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানের সঙ্গে সপ্তাহ শেষে হওয়া আলোচনাকে ‘খুব ভালো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
এই আলোচনা দীর্ঘদিনের পারমাণবিক বিতর্ক নিষ্পত্তির লক্ষ্যেই চলছে। ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, যদি কোনও নতুন পারমাণবিক চুক্তি না হয়, তাহলে ইরানের ওপর চরম অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং বোমা হামলা চালানো হতে পারে।
সংবাদমাধ্যমকে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘যদি তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে না চায় বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, এমন না যে তাহলে আমরা যেন না খেয়ে মরবো। আমরা বাঁচার পথ খুঁজে নেব।’
এই আলোচনায় উভয় পক্ষের জন্যই ঝুঁকি অনেক।
ট্রাম্প চান ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা কমিয়ে দিতে। কারণ ইরানের সক্ষমতা মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করতে পারে এবং ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে ইরান দাবি করছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুই বেসামরিক উদ্দেশ্যে। তারা চায় তাদের তেল-নির্ভর অর্থনীতির ওপর থাকা ধ্বংসাত্মক নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া হোক।
গত সপ্তাহে ইতালির রোমে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা পঞ্চম দফা আলোচনা শেষ করেছে। কিছু সীমিত অগ্রগতির ইঙ্গিত মিললেও, এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে, বিশেষ করে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম নিয়ে।
ইরান তিন বছরের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে পারে বলে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘাঈ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তেহরান কখনোই এটা মেনে নেবে না।’
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি অন্তর্বর্তী পারমাণবিক চুক্তির সম্ভাবনাকেও ইরান নাকচ করে দিয়েছে এবং সংবাদমাধ্যমে যে প্রাথমিক চুক্তির কথা বলা হচ্ছে, তা শুধুই গুজব।
বাঘাঈ জানান, আলোচনার ষষ্ঠ দফার সময়সূচি সম্পর্কে ওমান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিস্তারিত জানাবে বলে তারা অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, ‘যদি আমেরিকার পক্ষ থেকে সদিচ্ছা থাকে, তাহলে আমরাও আশাবাদী। কিন্তু যদি এই আলোচনা ইরানের অধিকার খর্ব করার উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে এর কোনও ফল হবে না।’