কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)। তেহরানের দাবি, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী হামলার জবাবেই এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। সোমবার বাহিনীটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন আগ্রাসনের পথে গেলে আরও কঠোর জবাব দেওয়া হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসনিমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, আমাদের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় নিরাপত্তার ওপর যেকোনও হামলার জবাব দেওয়া হবে। কোনও পরিস্থিতিতেই তা প্রতিক্রিয়াহীন থাকবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো এখন আর নিরাপদ নয়। তারা এখন স্পষ্টভাবে ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র আরও কোনও আগ্রাসনের পথে যায়, তবে আমরা আরও কঠোর জবাব দেব।
এই সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে সমন্বয় করে নেওয়া হয়েছে বলেও জানায় আইআরজিসি। একই সঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোকে ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্য ও আগ্রাসনের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হিট-অ্যান্ড-রান বা একতরফা হামলার যুগ শেষ হয়েছে। প্রতিরোধ চলবে যতক্ষণ না জায়নবাদী রাষ্ট্র বিলুপ্ত হয়।
কাতার ইরানের হামলাকে তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান কাতারে অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে হামলার বিষয়টি কাতারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিচালনা করেছে।
এই হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তিন ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, তেহরান হতাহতের সংখ্যা কমানোর জন্য হামলার আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিল।
প্রতিবেদনে ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, রবিবার পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতীকী প্রতিশোধ নিতেই ইরান এই হামলা চালায়। তবে উভয় পক্ষ যেন সহজেই উত্তেজনা কমাতে পারে, সেটিও নিশ্চিত করতে চেয়েছিল তারা। ২০২০ সালে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যার জবাবে ইরাকের একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর আগে ইরাককে যেমন জানিয়েছিল, এ ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে।