মাঝ রাতে এক দল লোক বস্তা ও কন্টেইনার ভর্তি মালামাল নিয়ে দ্রুত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পার হচ্ছেন। অথচ সীমান্তের সামনের সারিতে পাহারারত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর কর্মকর্তারা তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। বলা চলে তারা একরকম ইচ্ছে করে চোখে কালো পর্দা দিয়ে রেখে পাচারকারীদের সহায়তা করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তা আর পাচারকারীদের এমন যোগসাজশের চিত্র ধরা পড়েছে থার্মাল ক্যামেরায়। সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ কার্যক্রম ঠেকাতে নজরদারির জন্য বিএসএফ কর্মকর্তারা এমন নজরদারি ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকলেও এবার খোদ নিজেরাই ধরা পড়লেন সে জালে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জের পাঁচ আসামির রায় মঙ্গলবার
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, বিএসএফ এর কয়েকজন কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়াটা পাচারচক্রের জন্য সহজ কাজ হলেও তারা থার্মাল ক্যামেরার চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি। বিএসএফের এক সদস্য থার্মাল ক্যামেরায় পাচারের ওই ছবিগুলো ধারণ করেন। এরইমধ্যে বিএসএফ-এর বেশ কয়েকজন সদস্য ছবিগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন। ছবিগুলো সংগ্রহ করার পর তা প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মেইল টুডে।
বিএসএফ-এর দক্ষিণ বঙ্গ অংশের ইন্সপেক্টর জেনারেল সন্দ্বীপ সালুনখে বলেন, ‘এক কর্মকর্তা এ ব্যাপারে অভিযোগ করার পর ডিআইজি র্যাংকের এক কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা খুব দ্রুত তদন্ত শেষ করতে চাই। আর যদি অভিযোগের ব্যাপারে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি ব্লগারদের নরডিক দেশগুলোতে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান
বিএসএফ কর্তৃপক্ষের দাবি, ঘটনাটির সঙ্গে পুরোবাহিনী জড়িত নয় এবং পাচারকারীদের সঙ্গে সবারই যোগসাজশ নেই। বিএসএফ-এর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাহিনীর কেউ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুটিকয়েক দুষ্ট লোকের জন্য পুরোবাহিনীর নাম খারাপ করা যাবে না।’
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগে বলা হয়েছে মাছ, তুলা, গ্যাস সিলিন্ডার, সাইকেল, কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য পাচার হচ্ছে। কেবল তাই নয়, পাকিস্তানে তৈরি ভারতীয় জাল মুদ্রাও বাংলাদেশ হয়ে পাচার হচ্ছে। ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত থেকে ৯ কোটি রুপি জালমুদ্রা জব্দ করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪০৯৬.৭ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা রয়েছে। সম্প্রতি বিএসএফ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচার ৭০-৮০ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএসএফের প্রশংসা করেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক থার্মাল চিত্র বলছে, বিএসএফ কর্মকর্তারাই পাচারকারীদের সহায়তা দিচ্ছেন। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
/এফইউ/ আপ- এপিএইচ