বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়ে দেয়, তাদের অর্থ লেনদেনের প্রক্রিয়ায় কোন অসঙ্গতি ছিল না। তবে শুক্রবার এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রতিনিধি পরিষদের একজন নারী সদস্য। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চলতি মাসেই নিউ ইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট থমাস ব্যাক্সটার দাবি করেন, নিউ ইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংকের অর্থ লেনদেন প্রক্রিয়ায় কোন ভুল ছিল না। বরং অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে ৩০টি ক্ষেত্রে ব্লক করে তারা আক্রমণ প্রতিহত করেছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫১ মিলিয়ন ডলার চুরির পদক্ষেপ ঠেকিয়েছে।
ব্যাক্সটার সে সময় আরও দাবি করেন, নিউ ইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংক সিস্টেম সুইফটের ম্যাসেজিং নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল। অন্য অনেক ব্যাংকের মতোই ফেডারেল ব্যাংকও সুইফটের ওপর ভরসা করেই জালিয়াতি ঠেকানো হয় ফেডারেল ব্যাংকে। তিনি তখন বলেন, ‘অনুমোদিত সূত্র থেকে লেনদেনের ক্ষেত্রে সুইফটের প্রটোকলই অনুসরণ করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় এই পদ্ধতিতে আবারও তথ্য পরীক্ষা করে দেখা হয় না।’ ব্যাক্সটার তখনই পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, সুইফটের অনুমোদনের বাইরে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আর কোনও বন্দোবস্ত সেই। কংগ্রেস ইউম্যান ক্যারোলিন ম্যালোনি একেই নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অসঙ্গতি বলে উল্লেখ করেছেন।
শুক্রবারের চিঠিতে তিনি বলেছেন, ‘ব্যাক্সটার যে সব তথ্য দিয়েছিলেন, তাতে বোঝা যায় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অসঙ্গতির বিষয়ে তিনি জানতেন।’ আর তাই ঘটনার তদন্ত দাবি করেন ম্যালোনি।
ম্যালোনি জানান, তিনি নিউ ইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংককে নিরাপত্তার বিষয়টি পুনরায় পর্যবেক্ষণ করতে অনুরোধ করবেন।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি যায়। এর মধ্যে ২০ মিলিয়ন ডলার গ্রাহকের নাম ভুল করায় শ্রীলংকায় আটকে যায়, পরে তা ফেরত আনা হয়। বাকি ৮১ মিলিয়ন ডলার যায় ফিলিপাইনের একটি বেসরকারি ব্যাংকে। সেখান থেকে ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয় ওই অর্থ। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এবং আন্ত:ব্যাংক লেনদেনের বৈশ্বিক সংগঠন সুইফইকে দায়ী করে আসছে বাংলাদেশ। তবে তারা শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সূত্র রয়টার্স
/ইউআর/বিএ/