X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গি অর্থায়নের কথা স্বীকার, সিঙ্গাপুরে দোষী সাব্যস্ত ৪ বাংলাদেশি

বিদেশ ডেস্ক
৩১ মে ২০১৬, ১০:১৩আপডেট : ৩১ মে ২০১৬, ১৪:০৮
image

সিঙ্গাপুরে জঙ্গি অর্থায়নে অভিযুক্ত ছয় বাংলাদেশির মধ্যে চারজন অপরাধ স্বীকার করেছেন। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, আদালত ওই চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এই চার বাংলাদেশি হলেন-রহমান মিজানুর (৩১),মিয়া রুবেল (২৬)  নুরুল ইসলাম সওদাগর (৩০),  ও সোহেল হাওলাদার (২৯)।

অভিযুক্ত চার বাংলাদেশি জঙ্গি

স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে,মঙ্গলবার সকালে সিঙ্গাপুরের আদালতে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেন তারা।

একই অভিযোগে অভিযুক্ত মামুন লিয়াকত আলী (২৯)ও জামান দৌলত (৩৪) নামের অপর দুই বাংলাদেশি জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, আদালত এই দুইজনের শুনানির জন্য ৯ জুন পরবর্তী দিন রেখেছে।  

আদালতের নথিতে বলা হয়, রহমান ২০১৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশে অপর এক বাংলাদেশি নাগরিক ‘জাহাঙ্গীর আলম’-এর সঙ্গে সাক্ষাতের পর জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হন। আদালতের সেই নথি অনুসারে, রহমান ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরে আসার সময় তার সঙ্গী ছিলেন জামান এবং অপর এক বাংলাদেশি নাগরিক সোহাগ ইব্রাহিম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি ওই দুই ব্যক্তিকে আইএস-এ যোগ দিতে রাজী করান।
ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পর অন্যদের দলে নেওয়া হয়। রহমান ‘সশস্ত্র জিহাদ’-এর কথা উল্লেখ করে অন্যদের বলেন, তারা বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে অবিশ্বাসীদের হত্যা করবেন।
তাদের অভিযানে খাবার, ছুরি, অস্ত্রের জন্য অনেক অর্থ দরকার। নিজেদের বেতনের একাংশ এ কাজে ব্যয় করতে তারা সম্মত হন।
প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য তিন সপ্তাহের সময় চান। ধারণা করা হচ্ছে তাদের আগামী ২১ জুন আবারও আদালতে হাজির করা হবে।

গত এপ্রিলে সিঙ্গাপুরে জঙ্গি সন্দেহে আটক হওয়া ৮ বাংলাদেশির মধ্যে ৬ জন জঙ্গিবাদে আর্থিক মদদ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন গত শুক্রবার। সে সময় স্ট্রেইট টাইমসের খবরে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্য ‘অর্থ সংগ্রহ ও সরবরাহের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া রুবেল ও জাবেদের বিরুদ্ধে একই আইনের অন্য একটি ধারায় জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সরঞ্জাম রাখার অভিযোগ আনে সিঙ্গাপুরের পুলিশ। শুক্রবার ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী আইনের আওতায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আইনে প্রথমবারের মতো কোনও বাংলাদেশি বিচারের মুখোমুখি হন।

এ বছর এপ্রিলে সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনের আওতায় ৮ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমসের তখনকার এক প্রতিবেদনে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বলা হয়, আটক হওয়া ওই আট বাংলাদেশি দাবি করেন তারা ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ (আইএসবি) এর সদস্য। গত মার্চে সিঙ্গাপুরে তারা সংগঠনটি গড়ে তোলেন। সিরিয়া ও ইরাকে তৎপর থাকা সশস্ত্র সুন্নিপন্থী সংগঠন আইএস এর হয়ে লড়াই করার জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীটিতে যোগদানের পরিকল্পনা করেছিলেন ওই বাংলাদেশিরা। তবে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমানোটা কঠিন হয়ে পড়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তারা মত পাল্টান। গড়ে তোলেন নতুন পরিকল্পনা। ওই আট বাংলাদেশি দেশে ফিরে সহিংস কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সরকার উৎখাত, একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং তা ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস ঘোষিত খেলাফতের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেন।

ওই আটজনের নাম হলো: রহমান মিজানুর (৩১), মামুন লিয়াকত আলী (২৯), সোহাগ ইব্রাহীম (২৭), মিয়া রুবেল (২৬) জামান দৌলত (৩৪), ইসলাম শরিফুল (২৭), নুরুল ইসলাম সওদাগর (৩০), সোহেল হাওলাদার (২৯)। এদিকে স্ট্রেইট টাইমসের ২৭ মে তারিখের (শুক্রবার) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ওই আটজনের মধ্যে রহমান মিজানুর (৩১), মামুন লিয়াকত আলী (২৯),মিয়া রুবেল (২৬) জামান দৌলত (৩৪),নুরুল ইসলাম সওদাগর (৩০), সোহেল হাওলাদার (২৯) নামের ছয় সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। সোহাগ ইব্রাহীম (২৭) ও ইসলাম শরিফুল (২৭) নামের বাকি দুইজনের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদন থেকে তা জানা যায়নি।

এরআগে ওই ছয়জন জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন এবং অর্থ যোগান দেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল।

অভিযুক্তদের মধ্যে রহমান মিজানুর নামের ব্যক্তিকে মূল হোতা বলে দাবি করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর ওই ৬ জনের মধ্যে মিয়া রুবেল ও নুরুল ইসলাম সওদাগর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আর্থিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। স্ট্রেইট টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এদের মধ্যে মামুন লিয়াকত আলী ছাড়া বাকি সবাই দোষ স্বীকার করবেন বলে জানিয়েছেন। আসছে ৩১ মে শুনানিতে তারা দোষ স্বীকার করবেন। আর মামুনকে ৯ তারিখে আদালতে নেওয়ার আগে আরও জিজ্ঞাসবাদ করা হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর ২০০২ সালে সিঙ্গাপুরের সন্ত্রাসবিরোধী আইন পাস হয়। আর ৮ এপ্রিল থেকে ওই ৬ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সিঙ্গাপুর পুলিশের একজন মুখপাত্র স্ট্রেইট টাইমসকে বলেছেন, জঙ্গিবাদে আর্থিক মদদ দেওয়ার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে বিচার করে সিঙ্গাপুর। সূত্র: স্ট্রেইট টাইমস

/এসএ/বিএ/

সম্পর্কিত
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা