X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

২৪৫ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুর অলৌকিক বেঁচে থাকা

বিদেশ ডেস্ক
৩০ মে ২০১৯, ১৭:৪৮আপডেট : ৩০ মে ২০১৯, ১৮:৪৭
image

গত ডিসেম্বরের ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ডিয়েগোর একটি হাসপাতালে অকাল জন্ম হয় এক শিশুর। মায়ের স্বাভাবিক গর্ভাবস্থা ৪০ সপ্তাহ হলেও মাত্র ২৩ সপ্তাহ ৩ দিনের মাথায় জন্ম হয় শিশুটির। সে সময় তার ওজন ছিল মাত্র ২৪৫ গ্রাম। এতো কম ওজনের শিশুকে প্রাণে বাঁচানোর আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকরাও। তবে শেষ পর্যন্ত অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে সে।  অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র শিশুর তালিকায়। নার্সরা ভালোবেসে তার নাম রাখেন সেইবি। এরইমধ্যে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে। এখন তার ওজন ৫ পাউন্ড (২ কেজি)। স্বাস্থ্যবান নবজাতক হিসেবেই বাড়িতে ফিরেছে সে। বুধবার (২৯ মে) এক ভিডিও’র মাধ্যমে অপরাজেয় এ শিশুর গল্প প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এপ্রিলের ছবি, তখন শিশুটির বয়স চার মাস
আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষুদ্রতম শিশুর নিবন্ধন তালিকা (টাইনিয়েস্ট বেবি রেজিস্ট্রি) অনুযায়ী, সেইবি হলো বিশ্বের ক্ষুদ্রতম আকৃতির নবজাতক। শার্প ম্যারি বির্চ হসপিটাল ফর উম্যান অ্যান্ড নিউ বর্নস-এর প্রকাশ করা ভিডিওতে সেখানকার চিকিৎসক, নার্স ও সেইবির পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। চিকিৎসকরা তার বাবাকে বলেছিল, এক ঘণ্টার বেশি শিশুটি হয়তো বাঁচবে না। ‘তবে এক ঘণ্টার সে সময় ধীরে ধীরে দুই ঘণ্টা, একদিন, তারপর এক সপ্তাহে গড়ালো।’ বলেন শিশুটির মা।

শিশুটির পরিবার তাদের গল্পটি প্রকাশের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দিলেও নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার ইচ্ছা জানিয়েছে তারা। হাসপাতালের সেবিকারা শিশুটিকে যে নামে (সেইবি) ডাকতো সে নামই প্রকাশ করার অনুমতি দিয়েছে পরিবার। ওই ভিডিওতে শিশুটির মা জানান, সন্তান জন্মের দিনটি তার জীবনের সবচেয়ে আতঙ্কজনক দিন। তিনি জানান, শরীর খারাপ লাগছিলো দেখে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো, তার প্রিঅ্যাকলেম্পসিয়া হয়েছে। অবস্থা গুরুতর। রক্তচাপ অনেক বেড়ে গেছে। দ্রুত বাচ্চাটিকে ডেলিভারি করা প্রয়োজন।

শিশুটির মা বলেন, ‘আমি তাদেরকে বলে যাচ্ছিলাম ও বাঁচবে না। মাত্র ২৩ সপ্তাহেই ওর জন্ম হয়েছে।’ তবে শিশুটি বেঁচে গেছে। হাসপাতালের শিশু নিবিড় যত্ন কেন্দ্রে ধীরে ধীরে ওজন বেড়েছে তার।

আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুরোগবিষয়ক চিকিৎসক এডওয়ার্ড বেল মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, নিবন্ধন অনুযায়ী সেইবি সবচেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশু যে প্রাণে বেঁচে গেছে। তবে বিশ্বে তার চেয়েও ক্ষুদ্রতম শিশুর জন্মের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। কারণ, তারা শুধু কম ওজনের নিবন্ধিত শিশুদের ভিত্তিতেই কথা বলছেন। নিবন্ধিত হয়নি এমন শিশুও থাকতে পারে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৫ সালে জার্মানিতে জন্ম নেওয়া যে শিশুটি ক্ষুদ্রতম শিশুর আখ্যা পেয়েছিল, সেইবির ওজন তার চেয়েও ৭ গ্রাম কম।

সেইবির বিছানায় লেখা, ‘ক্ষুদ্র তবে শক্তিশালী’। হাসপাতালের ভিডিওতে নার্স এমা উইস্ট বলেন, ‘ও এতোটাই ছোট ছিল যে ওকে ঠিকমতো দেখাও যেতো না।’

মায়ের ২৮ সপ্তাহের কম গর্ভাবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশুটি নানা শারীরিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। এ ধরনের নবজাতকরা দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তিসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগে থাকে। মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিষয়ক সংস্থা দ্য মার্চ অব ডিমেস-এর কর্মী মাইকেল ক্লিং বলেন, অনেকে প্রথম বছরটিতেই টিকতে পারে না। এ পর্যন্ত সেইবি তার আশঙ্কাজনক অবস্থাগুলো কাটিয়ে ফেলেছে। ‘নিশ্চিতভাবেই ওর প্রাণে বেঁচে যাওয়াটা অলৌকিক ঘটনা।’ বলেন, কিম নোরবি নামের আরেক নার্স।

/এফইউ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
হাসপাতালের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু
হাসপাতালের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসব, এক নবজাতকের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনকে কারাদণ্ড
পাবনায় দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার
পাবনায় দুই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার
জাপার অফিস ভাঙচুর: নুরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বললেন আদালত
জাপার অফিস ভাঙচুর: নুরসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বললেন আদালত
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে রয়েছে বিশ্বকাপে খেলার হাতছানিও!
বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে রয়েছে বিশ্বকাপে খেলার হাতছানিও!