X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশ্নবিদ্ধ রোহিঙ্গা প্রত্যর্পণে মিয়ানমারের উদ্যোগ

বিদেশ ডেস্ক
২৫ জুলাই ২০১৯, ০৪:৫৭আপডেট : ২৫ জুলাই ২০১৯, ০৪:৫৯



মিয়ানমারের রাখাইনে ২০১৭ সাল থেকেই আবাসিক ভবনের ধ্বংস দৃশ্যমান হচ্ছে স্যাটেলাইটে পাওয়া ছবিতে। বসত উচ্চেদ অব্যাহত থাকায় রাখাইনে সামরিক অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যর্পণে মিয়ানমারের আগ্রহের বিষয়টি গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ আশঙ্কার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

প্রশ্নবিদ্ধ রোহিঙ্গা প্রত্যর্পণে মিয়ানমারের উদ্যোগ





অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট কর্তৃক মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বারবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও স্যাটেলাইট ছবি পর্যালোচনায় রোহিঙ্গাদের পুরনো আবাসস্থলে কোনও নির্মাণ কাজের চিহ্ন দেখা যায়নি। যদিও কয়েকটি এলাকায় বাড়িঘর ভাঙা অব্যাহত রয়েছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত রাখাইনে প্রত্যাবাসনের এলাকার স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে এএসপিআই। ২০১৭ সালের সহিংসতায় পুড়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও ধ্বংস হয়ে গেছে-ইউএনওস্যাট কর্তৃক শনাক্তকৃত এমন ৩৯২টি রোহিঙ্গা বসতি নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে এসব বসতির মধ্যে ৩২০টির বেশি বসতি পুনগর্ঠনের কোনও আলামত নেই। কমপক্ষে ৪৫টি ক্যাম্প নির্মাণ কিংবা বর্ধিতকরণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত, প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গা কিংবা দুই ধরনের মানুষের জন্যই ক্যাম্পগুলো তৈরি হয়েছে। এছাড়া সাবেক রোহিঙ্গা বসতির ওপর ছয়টি সন্দেহমূলক সামরিক ফ্যাসিলিটি নির্মাণ ও বর্ধিত করা হয়েছে।
এএসপিআই বলছে, ইউএনওস্যাট ডাটার পাশাপাশি তারা অন্তত ৫৮টি বসতি এলাকা শনাক্ত করেছে যেগুলো ২০১৮ সালে নতুন করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০১৯ সালেও অন্য কিছু বসতিতে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে।
এএসপিআই’র গবেষক নাথান রুসার বলেন, ‘আমাদের স্যাটেলাইট বিশ্লেষণে ২০১৮ এবং ২০১৯ সাল জুড়ে জনবসতির এলাকায় অব্যাহত ধ্বংসযজ্ঞের আলামত পরিষ্কারভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছার ব্যাপারে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।’
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। এদের সঙ্গে রয়েছেন ১৯৮২ সাল থেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া আরও প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছরের ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর দীর্ঘদিন পার হলেও এর আওতায় কোনও শরণার্থী নিজ দেশে ফিরে যায়নি। মানবাধিকার গ্রুপগুলো দাবি করে আসছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে বসবাসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও ফোনে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এছাড়া রাখাইনের উপ-পরিচালক কিয়াউ সয়ার তুন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
মিয়ানমার বরাবরই দাবি করে আসছে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে তারা প্রস্তুত কিন্তু বাংলাদেশের কারণে তা শুরু হচ্ছে না।
সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান)-এর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়েছে। জুন মাসে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া এএইচএ সেন্টারের প্রতিবেদনে প্রত্যাশা করা হয়েছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫ লাখ রোহিঙ্গা সেখানে ফিরতে পারে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো রাখাইনের চলমান সংঘাতকে এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ করছে। আর জাতিসংঘ বলছে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি রাখাইনে। 
মিয়ানমারের সরকারি সেনারা রাখাইনে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ করছে।


/এএ/
সম্পর্কিত
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট শুরু
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
সর্বশেষ খবর
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি