বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসন ফাঁকা থাকার পরও নতুন করে আবেদন আহ্বান করছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রবিবার (১৫ জুন) মহাখালীতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের সামনে ভর্তির দাবিতে অবস্থান নেন ‘২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় সার্কুলার প্রত্যাশী’ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও অনেক মেডিক্যাল কলেজের সিট ফাঁকা থেকে যায়। প্রথম সার্কুলারে ভালো নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরাও নানা কারণে যেমন-অন্য ভালো কোথাও চান্স পাওয়া বা বেসরকারি মেডিক্যালে পড়ার খরচ বিবেচনায় ভর্তি হন না। তখন আবারও সার্কুলার দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া গত বছরগুলোতেও ছিল এবং এই প্রক্রিয়ায়ই চলে আসছে। কোনও কোনও বছর এই সার্কুলার একাধিকবার হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর সর্বশেষ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রায় ৭০০ আসন ফাঁকা থেকে যায়। ফলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর থেকে পুনরায় সার্কুলার চালুর অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অজ্ঞাত কারণে ওই আবেদন নাকচ করে দেয়।
এদিকে অবস্থান নেওয়া ভর্তিইচ্ছু শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কেউ ফেল করিনি। আমরা মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আসন খালি থাকা সত্ত্বেও আমাদের ভর্তি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষাগত দুর্ব্যবস্থার প্রতিফলন নয়, বরং এটি একটি অঘোষিত বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ; যা সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্য খাতকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এ বিষয়ে নাফিসা নামে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক খালিদ খাইরুল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ধারাবাহিকভাবে হয়ে আসা একটা পদ্ধতি হঠাৎ বন্ধ করে দিতে পারে না। আর বন্ধ করেই কী লাভ! ৬০০-এর ওপরে যে আসন ফাঁকা রয়েছে, সেগুলো কি শিক্ষার্থীদের সুযোগ না দিয়েই ফাঁকা রাখবে? অনেক শিক্ষার্থী দ্বিতীয় সুযোগের আশায় থাকে। এটি বন্ধ করে দিলে শিক্ষার্থীদের মনোবলে যেমন আঘাত আসবে, তেমনই তাদের আগামীর স্বপ্ন ও শিক্ষা ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলছেন, এটা নাকি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিচ্ছে না। আবার মন্ত্রণালয় থেকে জেনেছি, এটা নাকি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের বিষয়। এভাবে আমাদের ঘুরাচ্ছে।
এ সময় ভর্তিচ্ছুরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত পুনরায় ভর্তি সার্কুলার না দিলে এবং সব খালি আসনে ভর্তি কার্যক্রম চালু না করলে তারা অনশনে যাবেন।